বর্ণাঢ্য আয়োজনের মধ্যদিয়ে অনুষ্ঠিত হয়েছে চট্টগ্রাম সমিতি-ঢাকার ঐতিহ্যবাহী বার্ষিক মেজবান ও মিলনমেলা

0
1341

এস.এ.এম. সুমন:- রাজধানীর মোহাম্মদপুর সরকারি শারীরিক শিক্ষা কলেজ মাঠে গতকাল শনিবার বসেছিল মেজবানের খানাপিনার এ উৎসব। সকাল ১০টায় শুরু হয়ে উৎসবটি চলে দিনভর।

মেজবানের প্রথমপর্বে ছিল আলোচনা অনুষ্ঠান। চট্টগ্রাম সমিতির সভাপতি ও সাবেক নির্বাচন কমিশনার মোহাম্মদ আবদুল মোবারকের সভাপতিত্বে আলোচনায় অংশ নিয়ে বক্তারা বলেছেন, বৃহত্তর চট্টগ্রামের অধিবাসীসহ সারা দেশের মানুষের স্বল্পমূল্যে চিকিৎসা সুবিধা নিশ্চিতের লক্ষ্যে রাজধানীতে একটি বিশেষায়িত হাসপাতাল প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নিয়েছে চট্টগ্রাম সমিতি-ঢাকা। মানবতার সেবায় চট্টগ্রাম সমিতি-ঢাকার নেয়া এ উদ্যোগটি বাস্তবায়নে ইতিমধ্যে প্রয়োজনীয় জমি সংগ্রহ করা হয়েছে রাজধানীর পূর্বাচলে। কিন্তু অবকাঠামো নির্মাণের মাধ্যমে স্বপ্নের এ হাসপাতাল প্রকল্পটির সফল বাস্তবায়নে বিপুল অর্থের প্রয়োজন। এ জন্য সমাজের বিত্তবানদের সহযোগিতা প্রয়োজন।

আলোচনা সভায় সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. আবদুল মাবুদ স্বাগত বক্তব্য দেন। এছাড়া সমিতির ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান ও সাবেক সচিব দিদারুল আনোয়ার, হাসপাতাল কমিটির চেয়ারম্যান ও জেকে গ্রুপের কর্ণধার জাহাঙ্গীর আলম খান, মেজবান উপ-পরিষদের সদস্য সচিব মো. শাহাদাত হোসেন চৌধুরী হিরো ও মেজবান কমিটির আহ্বায়ক সৈয়দ নুরুল ইসলাম শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন। আলোচনা সভার শেষে সমিতির বার্ষিক প্রকাশনা ‘চট্টলশিখা’র মোড়ক উন্মোচন করেন সমিতির সভাপতি মোহাম্মদ আবদুল মোবারক। এ সময় উপস্থিত ছিলেন সম্পাদকমন্ডলীর সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার তাজুল ইসলাম।

মেজবানের দ্বিতীয়পর্বে প্রতিবারের মতো সমাজের নানাক্ষেত্রে অসামান্য অবদানের জন্য পাঁচ বিশিষ্ট ব্যক্তিকে ‘চট্টগ্রাম সমিতি পদক’ প্রদান করা হয়। এবার পদকপ্রাপ্তরা হলেন- মাতৃমৃত্যু হ্রাসকরণে অবদানের জন্য প্রফেসর ডা. সায়েবা আখতার; শিল্পী হিসেবে মুক্তিযুদ্ধে অবদানের জন্য কল্যাণী ঘোষ; চিত্রশিল্পে অবদানের জন্য কনক চাঁপা চাকমা, ইলিশের জীবন রহস্য উদঘাটনে অবদানের জন্য ড. মং সানু মারমা এবং পাটের জীবন রহস্য উদ্ঘাটনে অবিস্মরণীয় অবদানের জন্য ড. মাকসুদুল আলম (মরণোত্তর)। পদক উপ-পরিষদের সদস্য সচিব মাহমুদ সালাহউদ্দীন চৌধুরীর পরিচালনায় শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন সমিতির সহ-সভাপতি ও পদক উপ-পরিষদের আহ্বায়ক মোহাম্মদ মুসলিম চৌধুরী। পদক প্রাপ্তদের সংক্ষিপ্ত জীবনী পাঠ করে শোনান এডভোকেট আনিচ উল মাওয়া আরজু, মো. গিয়াস উদ্দীন খান, মো. ফরিদুল আলম, শফিকুর রহমান শফিক ও মাহমুদ সালাহউদ্দীন চৌধুরী।

ঐতিহ্যবাহী মেজবান আয়োজনে চট্টগ্রাম সমিতি-ঢাকার নেতৃবৃন্দসহ বৃহত্তর চট্টগ্রামবাসীকে শুভেচ্ছা জানান প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা। আওয়ামী লীগের উপদপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া ও প্রধানমন্ত্রীর প্রোটোকল অফিসার খোরশেদুল আলম প্রধানমন্ত্রীর এ শুভেচ্ছা বার্তাসহ মেজবানে অংশ নেন। মেজবানে বাংলাদেশ পুলিশের আইজি মোহাম্মদ জাভেদ পাটোয়ারী বিপিএম (বার) অংশ নেন। এছাড়া মেজবানে রাজনীতিবিদ, সচিব, শিল্পপতি, বিভিন্ন বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের কর্ণধার, বেসরকারি সংস্থার শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তাসহ দেশের বিশিষ্ট ও খ্যাতিমান ব্যক্তিবর্গ, সমিতির জীবনসদস্যসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার ২০ হাজার মানুষ এবারের মেজবানে অংশ নেন।

মেজবানের তৃতীয়পর্বটি ছিল সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে সাজানো। ‘চট্টগ্রাম সমিতি আঁরার প্রানের সমিতি’-শীর্ষক সূচনা সংগীতের মাধ্যমে শুরু হওয়া সাংস্কৃতিক পর্বে সংগীত পরিবেশন করেন সন্দিপন, অবিনাশ বাউল, বৃষ্টি, শেফালী, অনন্যা, বিন্দিয়া খান। এছাড়া চট্রগ্রামের এলইডি লাইট খ্যাত শিল্পী শহীদ মঞ্চে আসেন এলআরবি এর গান নিয়ে। উক্ত অনুষ্ঠানে ফেরদৌস ও যুগল নৃত্য পরিবেশন, কামার উদ্দিন আরমান কমেডি, কামাল উদ্দিন যাদু প্রদর্শনী, মতিয়ুর ও কামাল কৌতুক পরিবেশন করেন।

উল্লেখ্য, চট্টগ্রাম সমিতি-ঢাকার ঐতিহ্যবাহী বার্ষিক মেজবান ও মিলনমেলা অনুষ্ঠানের স্পন্সর ছিলেন ওয়েল ফুড ও এবি ব্যাংক লিমিটেড।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here