চিত্র নায়িকা অলিভিয়া লোক চক্ষুর আড়ালে

0
1055

এস.এ.এম সুমন: সত্তরের দশকে চলচ্চিত্রে আসা জনপ্রিয় নায়িকা অলিভিয়া দীর্ঘদিন ধরে লোকচক্ষুর অন্তরালে আছেন।

 ১৯৯৫ সালে মুক্তি পায় তার সর্বশেষ অভিনীত চলচ্চিত্র ‘দুশমনি’। এরপর থেকে এই অভিনেত্রী পর্দা কিংবা বাস্তবে আর কারও মুখোমুখি হননি। অনেকটা নীরবে-নিভৃতেই কাটছে তার জীবন। তার ঘনিষ্ঠদের মধ্যে অন্যতম অভিনেত্রী ববিতা বলেন, আমার সঙ্গে প্রায় দেখা হয় তার। এখনো আগের মতোই হাসিখুশি আছে ও। স্বামী-সংসার নিয়ে সুখেই কাটছে তার জীবন। অভিনেত্রী হিসেবে যেমন বাস্তবেও অসাধারণ ভালো মনের মেয়ে অলিভিয়া। প্রথম স্বামী চিত্রপরিচালক এস এম শফির মৃত্যুর পর চলচ্চিত্র ত্যাগ করেন অলিভিয়া। এরপর বিয়ে করেন ফতুল্লার মুনলাইট টেক্সটাইল মিলের কর্ণধার হাসানকে। বসবাস করছেন বনানীর ডিওএসএইচ-এর বাড়িতে।ধর্ম-কর্ম পালন ও সংসারধর্ম নিয়েই পরম সুখে কাটছে তার জীবন। অলিভিয়ার জন্ম ১৯৫৩ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি করাচিতে। ছোটবেলায় ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলে লেখাপড়া করেন। মাত্র ১৪ বছর বয়সে মডেলিং শুরু করেন। হোটেল পূর্বাণীতে রিসিপশনিস্ট পদে চাকরি করেন কিছুদিন। চাকরিরত অবস্থায় কয়েকটি বিজ্ঞাপনে কাজ করেন। ১৯৭২ সালে চিত্রনির্মাতা এস এম শফি তার ‘ছন্দ হারিয়ে গেলো’ ছবিতে প্রথম ব্রেক দেন অলিভিয়াকে। যদিও এর আগে প্রখ্যাত চলচ্চিত্রকার জহির রায়হান এর ‘লেট দেয়ার বি লাইট’ এবং বেবি ইসলামের ‘সংগীতা’ চলচ্চিত্রে অভিনয় করার কথা ছিল তার।প্রায় ৫৩টি চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন এই জননন্দিত অভিনেত্রী। পোশাকি, ফ্যান্টাসি এবং সামাজিক সব ধরনের চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন এবং গ্লামার নায়িকা হিসেবেই বেশি প্রতিষ্ঠা পান তিনি। নায়ক ওয়াসিমের সঙ্গে তার জুটি আকাশছোঁয়া জনপ্রিয়তা পায়। ১৯৭৬ সালে মুক্তি পাওয়া এই জুটির ‘ দ্য রেইন’ ছবিটি দেশে বিদেশে ব্যাপক সাড়া জাগায়।ববিতার পর অলিভিয়া ছিলেন একমাত্র নায়িকা যিনি তখন কলকাতার ছবিতে অভিনয় করার সৌভাগ্য অর্জন করেন। ছবির নাম ‘বহ্নিশিখা’। এ ছবির নায়ক ছিলেন উত্তম কুমার। তার পিতা-মাতার আদি নিবাস ভারতের গোয়াতে। খ্রিস্টান ধর্ম অনুসারী ছিলেন অলিভিয়ার পরিবার। তার পিতা দেশ বিভাগের পর পূর্ব পাকিস্তানে এসে স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করেন।থাকতেন মগবাজারের ইসলামী কলোনিতে। চাকরি করতেন দ্য ডেইলি অবজারভার পত্রিকায়।চলচ্চিত্রকার এস এম শফিকে ১৯৭২ সালে বিয়ে করেন অলিভিয়া এবং ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন।১৯৯৫ সালে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান শফি। এরপর চলচ্চিত্র জগৎ ত্যাগ করেন অলিভিয়া। ছোট ভাই থাকেন আবুধাবিতে। বড় ভাই অভি ও আরেক ভাই ফুটবলার জর্জি থাকেন ঢাকাতেই।অলিভিয়ার চার বোনের মধ্যে বড় বোন থাকতেন কলকাতায়। ২০১১ সালে তিনি মারা যান। মেজোবোন অডিট ছিলেন বিমানের ক্যাবিন ক্রু। বর্তমানে আমেরিকায় থাকেন। ছোটবোন অলকা থাকেন কানাডায়।
নীরবে-নিভৃতে থাকা অভিনেত্রী অলিভিয়া সুখে আছেন, ভালো আছেন। এই খবরে আনন্দিত চলচ্চিত্র জগৎ ও তার দর্শক-ভক্তরা ।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here