বাংলাদেশের দর্শনীয় স্থানের সংক্ষিপ্ত বর্ণনা

0
3366
আশরাফুল ইসলাম আকাশ-

বাংলাদেশে পরিচিত অপরিচিত অনেক পর্যটক-আকর্ষক স্থান আছে। বাংলাদেশের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে যুগে যুগে ভ্রমণকারীরা মুগ্ধ হয়েছেন। এর মধ্যে প্রত্মতাত্বিক নিদর্শন, ঐতিহাসিক মসজিদ এবং মিনার, পৃথিবীর দীর্ঘতম প্রাকৃতিক সমুদ্র সৈকত, পাহাড়, অরণ্য ইত্যাদি অন্যতম। এদেশের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য পর্যটকদের মুগ্ধ করে। বাংলাদেশের প্রত্যেকটি এলাকা বিভিন্ন স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্যে বিশেষায়িত।

দেখে নিন দেশের কোন জেলায় কোন কোন দর্শনীয় স্থান রয়েছে-

ঢাকা বিভাগ

ঢাকা বাংলাদেশের রাজধানী। দেশের ব্যস্ততম শহরের মধ্যে প্রধান। ঢাকাকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে বিভিন্ন ধরনের দর্শনীয় স্থান। এবং রয়েছে ঐতিহাসিক স্থাপনা।

ঢাকার দর্শনীয় স্থান-

আহসান মঞ্জিল জাদুঘর: পুরনো ঢাকার সদরঘাট সংলগ্ন বুড়িগঙ্গার তীরে অবস্থিত আহসান মঞ্জিল। প্রবেশ মূল্য জনপ্রতি ১০ টাকা। বিদেশি পর্যটকদের জন্য ৫০ টাকা।

জাতীয় জাদুঘর: ঢাকার শাহবাগে গেলে যে জিনিসটি আপনার সবার আগে নজরে পড়বে তা হল জাতীয় জাদুঘর। এর প্রবেশ মূল্য ৫ টাকা।

জাতীয় উদ্ভিদ উদ্যান বোটানিক্যাল গার্ডেন: ঢাকার মিরপুর চিড়িয়াখানা সংলগ্ন বোটানিক্যাল গার্ডেন গাছগাছালিতে সমৃদ্ধ। এখানে প্রায় ১৫ একর জমির ওপর প্রতিষ্ঠিত এই উদ্যানে ছিল পৃথিবীর বিভিন্ন জলবায়ু অঞ্চলের বহু কৃষিজ, জলজ ও শোভাময় উদ্ভিদ। প্রবেশ মূল্য: পাঁচ টাকা।

চিড়িয়াখানা: ঢাকার মিরপুরে অবস্থিত ঢাকা চিড়িয়াখানায় আছে বাংলাদেশী সব পশুপাখি। অনেক দুর্লভ প্রজাতির সব প্রাণী দেখতে পাওয়া যাবে এখানে। প্রবেশ মূল্য ১০ টাকা।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব নভোথিয়েটার: বিজয় সরণিতে আছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব নভোথিয়েটার। এখানে দেখা যাবে আকাশ, নত্র, তারকারাজির উজ্জ্বল উপস্থিতি। প্রদর্শনী শুরু হয় সকালের প্রদর্শনীর এক ঘণ্টা আগে এবং অন্যান্য প্রদর্শনীর দুই ঘণ্টা আগে কাউন্টার থেকে টিকিট সংগ্রহ করা যাবে। এখানে একই সময়ে ক্যাপসুল রাইড সিমুলেটরে ২০ টাকায় চড়া যাবে। সর্বোচ্চ ৩০ জন ধারণমতা সম্পন্ন এই রাইডে আপনিও চড়তে পারেন। টিকিট মূল্য ৫০ টাকা।

বলধা গার্ডেন: ঢাকার ওয়ারীতে অবস্থিত বলধা গার্ডেন। নিসর্গী ও দর্শকদের জন্য বলধা গার্ডেন অত্যন্ত আকর্ষণীয় স্থান এবং উপমহাদেশের এতদঞ্চলের ফুলের শোভা উপভোগের অন্যতম প্রখ্যাত ও ঐতিহাসিক উদ্যান। এটি প্রতিদিন খোলা থাকে। প্রবেশ মূল্য পাঁচ টাকা। অনূর্ধ্ব ১০ বছরের শিশুদের েেত্র প্রবেশমূল্য দুই টাকা।

রমনাপার্ক: নিসর্গপ্রেমীদের জন্য রমনা অত্যন্ত আকর্ষণীয় স্থান। শহরের মূল কেন্দ্রে এর অবস্থান। শহরের বুকে এমন প্রকৃতি উপভোগের অন্যতম প্রখ্যাত ও ঐতিহাসিক উদ্যান আর নেই। পার্কে প্রবেশের কোনও রকম প্রবেশ ফি লাগে না।

শহীদ জিয়া শিশু পার্ক: শহীদ জিয়া শিশু পার্ক শাহবাগে অবস্থিত। সাপ্তাহিক বন্ধ রোববার। প্রতিটি রাইডে চড়ার জন্য মাথাপিছু ছয় টাকার টিকিট দরকার হয়।

জাতীয় স্মৃতিসৌধ: সাভারে অবস্থিত আমাদের অহংকার জাতীয় স্মৃতিসৌধ। এটি দেখতে হলে আপনাকে যেতে হবে ঢাকার সাভারে।

যেভাবে যাবেন, ঢাকায় বেড়াতে এসে যোগাযোগ করে নিতে পারেন নির্ধারিত তথ্যকেন্দ্র থেকে। প্রতিটি জায়গায় বাস, সিএনজি, রিকশা চলাচল করে।

 

নারায়ণগঞ্জের দর্শনীয় স্থান

বাংলার তাজমহল: ঢাকা থেকে নারায়ণগঞ্জের দূরত্ব মাত্র ১৭ কিলোমিটার। নারায়ণগঞ্জ জেলার সোনারগাঁওয়ের পেরাবে গড়ে উঠেছে বাংলার তাজমহল। এই তাজমহল দেখতে হলে আপনাকে যেতে হবে সোনারগাঁওয়ের পেরাবে। এন্ট্রি ফি ৫০ টাকা। দেখতে পাবেন আগ্রার তাজমহলের অনুকরণে তৈরি করা হয়েছে বাংলার তাজমহলটি।

সোনারগাঁ জাদুঘর: ঢাকার ঐতিহাসিক নগরী সোনারগাঁ। বাংলার এক সময়ের রাজধানী এই সোনারগাঁয়ে গড়ে তোলা হয়েছে জাদুঘর।

লোকশিল্প জাদুঘর: সোনারগাঁয়ের পানামে রয়েছে শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিনের স্বপ্নে গড়া লোকশিল্প জাদুঘর।

রূপগঞ্জ রাজবাড়ি: ঢাকা সিলেট মহাসড়কের মধ্যেখানেই রূপগঞ্জ। সেখানে আছে প্রায় শতবর্ষী রাজবাড়ি। অপূর্ব এই রাজবাড়ীর কারুকার্যমন্ডিত সৌন্দর্য দৃষ্টিনন্দন।

নদী সমূহ শীতলক্ষ্যা, মেঘনা, পুরাতন ব্রক্ষপুত্র, বুড়িগঙ্গা, বালু এবং ধলেশ্বরী নদী।

যেভাবে যাবেন, সায়েদাবাদ বাসস্ট্যান্ড থেকে অথবা গুলিস্তান থেকে নারায়ণগঞ্জের সর্বত্র যাবার বাস আছে।

 

মুন্সিগঞ্জের দর্শনীয় স্থান

ইদ্রাকপুর দুর্গ: মুন্সীগঞ্জ ডাক বাংলোর পাশেই এ দুর্গটি অবস্থিত। ঢাকা থেকে সড়কপথে ফেরি পার হয়ে অল্প সময়েই পৌঁছা যায় মুন্সীগঞ্জ। গুলিস্তান থেকে এসব গাড়ি ছাড়ে।

রঘুরামপুরে প্রাচীন বৌদ্ধবিহার: কিছুদিন আগেও যে জমিতে ফসলের চাষ করা হতো, সে জমির নিচেই আবিষ্কৃত হলো হাজার বছরের পুরনো বৌদ্ধবিহার। মুন্সীগঞ্জ সদর উপজেলার রামপাল ইউনিয়নের রঘুরামপুর গ্রামে এ বৌদ্ধবিহার আবিষ্কৃত হয়। ঢাকার গুলিস্তান মোড় থেকে দীঘিরপাড় ট্রান্সপোর্টের বাসে নামতে হবে ধলাগাঁও বাজারে। ভাড়া ৬০ টাকা। সময় লাগবে প্রায় দুই ঘণ্টা। বাজার থেকে হেঁটে যাওয়া যাবে বিহারে। বিখ্যাত খাবারের নাম সিরাজদিখানের পাতক্ষীরা। নদী সমূহ পদ্মা, মেঘনা, ধলেশ্বরী ও ইছামতি নদী।

যেভাবে যাবেন, ঢাকা থেকে সড়কপথে অল্প সময়েই পৌঁছা যায় মুন্সিগঞ্জ। গুলিস্তান থেকে এসব গাড়ি ছাড়ে।

 

বালিয়াটি জমিদারবাড়ি: মানিকগঞ্জে অবস্থিত বালিয়াটি জমিদারবাড়ি।  ঝিটকা, মানিকগঞ্জ (সরিষা ফুল)

ঢাকার পাশ্ববর্তী জেলা মানিকগঞ্জের ঝিটকায় দিগন্ত বিস্তৃত মাঠজুড়ে রয়েছে সরিষা ক্ষেত। দুই পাশে বিস্তৃত হলুদ ক্ষেতের মাঝে এখানে রয়েছে সারি সারি খেজুর গাছ। এখানকার সরিষা ক্ষেতগুলোর কোনো কোনো জায়গায় মধুচাষিরা বসেছেন মধু সংগ্রহের জন্য। তা ছাড়া খুব সকালে ঝিটকা পৌঁছুতে পারলে বাড়তি পাওনা হবে গাছ থেকেই সদ্য সংগ্রহ করা খেজুরের রস। এসব জায়গায় সূর্য ওঠার আগেই গাছিরা রস নামিয়ে ফেলেন। যেভাবে যাবেন: পুরনো ঢাকার গুলিস্তান থেকে শুভযাত্রা ও বিআরটিসি পরিবহন, বাবু বাজার থেকে যানযাবিল ও শুকতারা, পশ্চিম ঢাকার গাবতলী থেকে যাত্রীসেবা, পদ্মা লাইন, নবীনবরণ, ভিলেজ লাইন ও জনসেবা পরিবহনে প্রথমে মানিকগঞ্জ যেতে হবে। ভাড়া ৫০-৬০ টাকা। সেখান থেকে আবার লোকাল বাসে চড়ে ঝিটকা। এ জায়গায় স্বাচ্ছন্দ্যে ভ্রমণের জন্য নিজস্ব গাড়ি নিয়ে যাওয়া ভালো। যাদের সে ব্যবস্থা নেই তারা ভাড়ায় মাইক্রো বাস কিংবা অন্য কোনো গাড়ি নিয়ে যেতে পারেন। নিজস্ব গাড়ি নিয়ে গেলে ঢাকা-আরিচা সড়কে মানিকগঞ্জ অতিক্রম করে তরা সেতু পেরিয়ে কিছুদূর সামনে গেলে বাঁ দিকের সড়কটি চলে গেছে ঝিটকায়।

নদী সমূহ পদ্মা, গঙ্গা, ধলেশ্বরী, ইছামতি, করতোয়া, বোরাসাগর তিস্তা ও ব্রক্ষ্মপুত্র। যেভাবে যাবেন, ঢাকা থেকে মানিকগঞ্জের উদ্দেশে অনেক বাস যাতায়াত করে, ভাড়া পড়বে ৫০-৬০ টাকা।

 

নরসিংদীর দর্শনীয় স্থান

উয়ারী বটেশ্বর: বাংলাদেশের প্রাচীনতম বাণিজ্যকেন্দ্র ছিল নরসিংদীর বেলাবো উপজেলার উয়ারী বটেশ্বর।

লটকন বাগান: লটকন ফলের সীজনে , লটকন বাগান দেখতে যেতে পারেন নরংসিংদী ,বেলাব উপজেলার আমলাব ইউনিয়নের লাখপুর।

বিখ্যাত খাবারের নাম: সাগর কলা।

নদী সমূহ: মেঘনা, শীতলক্ষ্যা, আড়িয়ালখাঁ ও পুরাতন ব্রক্ষ্মপুত্র।

যেভাবে যাবেন: এখানে যেতে হলে আপনাকে সায়েদাবাদ থেকে সরাসরি বেলাবোর বাসে যেতে পারবেন।

 

গাজীপুরের দর্শনীয় স্থান

ভাওয়াল রাজবাড়ি: গাজীপুর সদরে অবস্থিত প্রাচীন এ রাজবাড়িটি। সুরম্য এ ভবনটিতে ছোট বড় মিলে প্রায় ৩৬০টি কক্ষ আছে। বর্তমানে এটি জেলাপরিষদ কার্যালয় হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে।

 

ভাওয়াল জাতীয় উদ্যান: গাজীপুর সদর ও শ্রীপুর থানা জুড়ে অবস্থিত ভাওয়াল জাতীয় উদ্যান। পৃথিবীর অন্যান্য জাতীয় উদ্যানের আদলে ৬৪৭৭ হেক্টর জমিতে ১৯৭৩ সালে এ উদ্যান সরকারি ভাবে গড়ে তোলা হয়। জাতীয় উদ্যানের ভেতরে বেশ কয়েকটি বনভোজন কেন্দ্র, ১৩টি কটেজ ও ৬টি রেস্ট হাউস আছে। উদ্যানে প্রবেশ মূল্য জনপ্রতি ৬ টাকা।

সফিপুর আনসার একাডেমি: জেলার কালিয়াকৈর উপজেলায় অবস্থিত আনসার-ভিডিপি একাডেমির বিশাল চত্ত্বর বেড়ানোর জন্য একটি উপযুক্ত যায়গা। অনুমতি সাপেক্ষে বনভোজন করারও ব্যবস্থা আছে এখানে।

সাধু নিকোলাসের গির্জা: কালীগঞ্জ উপজেলার নাগরী গ্রামে সাধু নিকোলাসের গির্জাটি প্রতিষ্ঠিত হয় ১৬৬৩ সালে। অধুনা পুরনো গির্জার পাশেই বড়সড় আরেকটি গির্জা নির্মিত হয়েছে। গির্জার সামনে রয়েছে আট ফুট লম্বা যিশুখ্রিস্টের মূর্তি। ১৮ একর জায়গা নিয়ে তৈরি গির্জা প্রাঙ্গণে আছে বাগান, ফাদারের বাসস্থান, মা মেরির গর্ভগৃহ, সাধু নিকোলাস স্কুল, ছাত্রদের হোস্টেল, ব্রাদার্স হাউস ও সরকারি দুটি প্রাথমিক বিদ্যালয়।

জাগ্রত চৌরঙ্গী: গাজীপুর শহরের বেশ কিছুটা আগে জয়দেবপুর চৌরাস্তায় রয়েছে মহান মুক্তিযুদ্ধের সর্বপ্রথম স্মারক ভাস্কর্য “জাগ্রত চৌরঙ্গী”। ১৯৭১ সালের ১৯ মার্চ গাজীপুরে সংঘটিত প্রথম সশস্ত্র প্রতিরোধ সংগ্রামে শহীদ হুরমত আলীসহ অন্যান্য শহীদদের স্মরণে ১৯৭১ সালেই নির্মিত হয় হয় এ ভাস্কর্যটি। এর স্থপতি আব্দুর রাজ্জাক। ভাস্কর্যটির উচ্চতা প্রায় একশো ফুট। আর এর দু “পাশে ১৬ ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের ১১ নং সেক্টরের ১০৭ জন এবং ৩নং সেক্টরের ১০০ জন শহীদ সৈনিকের নাম খোদাই করা আছে।

ভাওয়াল রাজ শ্মশানেশ্বরী: ভাওয়াল রাজবাড়ি থেকে প্রায় এক কিলোমিটার উত্তরে মৃতপ্রায় চিলাই নদীর দক্ষিণ তীরে অবস্থিত ভাওয়াল রাজ শ্মশানেশ্বরী। এটি ছিল ভাওয়াল রাজ পরিবার সদস্যদের সবদাহের স্থান। প্রাচীন একটি মন্দির ছাড়াও এখানে একটি সমাধিসৌধ আছে।

আরো আছে নন্দন পার্ক,বলধার জমিদার বাড়ী,বাড়ীয়া;৩পূবাইল জমিদার বাড়ী,পূবাইল,বলিয়াদী জমিদার বাড়ী ,টোক বাদশাহি মসজিদ, চৌরা দিঘি ও মাজার, ঢোলসমুদ্র ইত্যাদি।

নদী সমূহ পুরাতন ব্রহ্মপুত্র ,শীতলক্ষ্যা, তুরাগ, বংশী, বালু, বানার, গারগারা ও চিলাই।

যেভাবে যাবেন: ঢাকা থেকে গাজীপুর যেতে পারেন রেল ও সড়ক পথে। ঢাকা থেকে দেশের বিভিন্ন রুটে চলাচলকারী প্রায় সব আন্তঃনগর, কমিউটার, মেইল ট্রেনে চড়ে আসতে পারেন গাজীপুর। এছাড়া ঢাকার কাঁচপুর ও যাত্রাবাড়ী থেকে ট্রান্স সিলভা, অনাবিল, ছালছাবিল পরিবহন, লোহারপুল থেকে রাহবার পরিবহন, মতিঝিল থেকে গাজীপুর পরিবহন, ভাওয়াল পরিবহন, অনিক পরিবহন, সদরঘাট থেকে আজমিরি, স্কাইলাইন পরিবহন, গুলিস্তান থেকে প্রভাতী বনশ্রী।

কিশোরগঞ্জ দর্শনীয় স্থান

ঐতিহাসিক জঙ্গলবাড়ী: ঈশা খাঁর দ্বিতীয় রাজধানী, কিশোরগঞ্জ শহর থেকে ৬ কিঃ মিঃ পূর্বে করিমগঞ্জ উপজেলার কাদিরজঙ্গল ইউনিয়নে জঙ্গলবাড়ীর অবস্থান।

দিল্লীর আখড়া: মিঠামইন উপজেলায় অবস্থিত।

এগারসিন্দুর দুর্গ কিশোরগঞ্জ: লাল মাটি, সবুজ গাছগাছালি আর ঐতিহাসিক নিদর্শনে সমৃদ্ধ এগারসিন্দুর। এটি ছিল ঈশা খাঁর শক্ত ঘাঁটি। কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়া উপজেলা সদর থেকে প্রায় আট কিলোমিটার দূরে এগারসিন্দুর।

শোলাকিয়া ঈদগাহ: এশিয়া মহাদেশের সর্ববৃহৎ ঈদগাহ হিসেবে শোলাকিয়া ঈদগাহ সর্বজন বিদিত।কিশোরগঞ্জ শহরের পূর্বপ্রান্তে প্রায় ৬.৬১ একর জমিতে অবস্থিত।

বাংলাদেশ-যুক্তরাজ্য মৈত্রী সেতু (ভৈরব সেতু) ও হাওর অঞ্চল। বিখ্যাত খাবারের নাম কিশোরগঞ্জের তালরসের পিঠা ( চিনির শিরায় ভেজানো)মালাইকারি। ঠিকানা- মদন গোপালের মিষ্টান্ন ভাণ্ডার, গৌরাঙ্গবাজার, কিশোরগঞ্জ,ভৈরবের নকশী পিঠা।

নদী সমূহ ব্রহ্মপুত্র নদ, মেঘনা, ধনু, ঘোড়াউত্রা, বাউলাই, নরসুন্দা, মগরা, বারুনী, চিনাই, সিংগুয়া, সূতী, আড়িয়ালখাঁ, ফুলেশ্বরী, সোয়াইজানী, কালী নদী কুলা নদী।

ময়মনসিংহের দর্শনীয় স্থান

কাজী নজরুলের স্মৃতিবিজড়িত ত্রিশাল: নজরুল স্মৃতিবিজড়িত ময়মনসিংহের ত্রিশাল উপজেলা। ময়মনসিংহ শহর থেকে চল্লিশ মিনিটের পথ। বাংলাদেশ পর্যটন কর্পোরেশন এ অঞ্চলে নজরুল স্মৃতিবিজড়িত স্থানগুলোকে নজরুল পর্যটন নিদর্শন হিসেবে ঘোষণা করেছে।

শিমলা দারোগা বাড়ি: কাজীর শিমলা দারোগা বাড়ি বৃহত্তর ময়মনসিংহের মূল্যবান সম্পদ। এখানে জাতীয় কবি কাজী নজরুলের ইসলাম এদেশে প্রথম পদার্পণ ঘটেছিল।

শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিন সংগ্রহশালা: ময়মনসিংহ শহরের অন্যতম প্রধান আকর্ষণ জয়নুল আবেদিন সংগ্রহশালা। ব্রহ্মপুত্র নদের তীরে সাহেব কোয়ার্টার নলিনী রঞ্জন সরকারের বাড়িতে এ সংগ্রহশালাটি অবস্থিত।

ময়মনসিংহ বোটানিক্যাল গার্ডেন: বোটানিক্যাল গার্ডেনে প্রবেশ করতে হলে আপনাকে ৩ টাকা মূল্যের টিকিট কিনে প্রবেশ করতে হবে। পার্ক ঘেঁষে ব্রহ্মপুত্র নদ।

এ শহরের দর্শনীয় ভবনাদির মধ্যে অন্যতম হাসান মঞ্জিল। শহরে এটি একমাত্র ভবন, যা মুসলিম স্থাপত্যকর্মের অনুপম নিদর্শন। এছাড়া রয়েছে গফরগাঁও উপজেলার ভাষা শহীদ আবদুল জব্বার, ওলি-আল্লাহর মাজার, ধোবাউড়া উপজেলার দর্শা গ্রামে মোগল আমলের পাকা মসজিদ ও মুক্তাগাছার জমিদার বাড়ি। এছাড়াও ময়মনসিংহ জাদুঘর, সোমেশ্বর বাবুর রাজবাড়ি, কিশোর রায় চৌধুরীর ভবন। বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, বোটানিক্যাল গার্ডেন, আলেক জান্ডার ক্যাসেল,আনন্দ মোহন কলেজ, দুর্গাবাড়ী, কেল্লা তাজপুর ইত্যাদি। গারোগ্রাম আচ্কীপাড়া হালুয়াঘাট, ময়মনসিংহ।

হালুয়াঘাট উপজেলা সদর থেকে উত্তর-পশ্চিম দিকে প্রায় ১২ কিলোমিটার দূরে ১ নম্বর ভুবনকুড়া ইউনিয়নের এক সবুজ ছায়াঘেরা গ্রাম আচ্কীপাড়া।

বিখ্যাত খাবারের নাম মুক্তাগাছার মণ্ডা, ময়মনসিংহের আমিরতি,দয়াময়ী মিষ্টান্ন ভাণ্ডারের খেজুর গুরের সন্দেশ ( ময়মনসিংহ ),জয়কালী মিষ্টান্ন ভাণ্ডারের ছানার পোলাও (ময়মনসিংহ)।

নদী সমূহ রহ্মপুত্র, সুতিয়া, ক্ষিরু, সাচালিয়া, পাগারিয়া, নাগেশ্বর, কাচাঁমাটিয়া, আয়মন, বানার, নরসুন্দা, বোরাঘাট, দর্শনা, রামখালী, বৈলারি, নিতাই, কংশ, ঘুঘুটিয়া, সাতারখালী, আকালিয়া, জলবুরুঙ্গা, চৌকা মরানদী, রাংসা নদী।

যেভাবে যাবেন: মহাখালী থেকে নিরাপদ কিংবা সৌখিন পরিহনের বাস ২০ মিনিট পরপর ময়মনসিংহের উদ্দেশে ছেড়ে আসে। ঢাকা থেকে প্রায় ১৮০ কিলোমিটার ময়মনসিংহ। ঢাকা থেকে সময় লাগে ঘণ্টা তিনেক। বাসের ভাড়া পড়বে ১২০-১৩০ টাকার মধ্যে। এছাড়া কিশোরগঞ্জ, জামালপুর, নেত্রকোনা, শেরপুর, ময়মনসিংহ হয়ে বাস যাতায়াত করে। ইচ্ছা করলে সেই বাসে চড়ে যাওয়া যায়।

টাঙ্গাইলের দর্শনীয় স্থান

রসনা বিলাসীদের জন্য উপভোগ্য সুস্বাদু চমচম, বাঙালী রমণীদের জন্য পরম আকর্ষণীয় তাঁতের শাড়ির জন্য টাঙ্গাইল জেলা দেশে বিদেশে সুপরিচিত। আতিয়া মসজিদ ,শাহ্ আদম কাশ্মিরির মাজার- দেলদুয়ার, পরীর দালান, খামার পাড়া মসজিদ ও মাজার – গোপালপুর ঝরোকা , সাগরদিঘি ,গুপ্তবৃন্দাবন ,পাকুটিয়া আশ্রম ,ধলাপাড়া চৌধুরীবাড়ী, ধলাপাড়া মসজিদ -ঘাটাইল, ভারতেশ্বরী হোমস্, মহেড়া জমিদার বাড়ী/পুলিশ ট্রেনিং সেন্টার , মির্জাপুর ক্যাডেট কলেজ,পাকুল্লা মসজিদ:,কুমুদিনী নার্সিং স্কুল/ কলেজ- মির্জাপুর নাগরপুর জমিদার বাড়ি,পুন্ডরীকাক্ষ হাসপাতাল , উপেন্দ্র সরোব,গয়হাটার মট,তেবাড়িয়া জামে মসজিদ,,পাকুটিয়া জমিদার বাড়ী ইত্যাদি- নাগরপুর, বঙ্গবন্ধু সেতু ,এলেঙ্গা রিসোর্ট ,যমুনা রিসোর্ট , কাদিমহামজানি মসজিদ – কালিহাতী ঐতিহ্যবাহী পোড়াবাড়ি,সন্তোষ,করটিয়া সা’দত কলেজ, কুমুদিনী সরকারী কলেজ,বিন্দুবাসিনীবিদ্যালয় ইত্যাদি – টাঙ্গাইল সদর,মধুপুর জাতীয় উদ্যান ,দোখলা ভিআইপ রেষ্ট হাউজ , পীরগাছা রাবার বাগান ইত্যাদি- মধুপুর, ভূঞাপুরের নীলকুঠি , শিয়ালকোল বন্দর ইত্যাদি – ভূঞাপুর,ধনবাড়ি মসজিদ ও নবাব প্যালেস – ধনবাড়ি, নথখোলা স্মৃতিসৌধ, বাসুলিয়া, রায়বাড়ী ইত্যাদি – বাসাইল,কোকিলা পাবর স্মৃতিসৌধ,মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতি স্তম্ভ – সখিপুর।

নদী সমূহ যমুনা, ধলেশ্বরী, বংশী, লৌহজং, খিরু, যুগনী,ফটিকজানি,এলংজানি, লাঙ্গুলিয়া, ঝিনাই। বিখ্যাত খাবারের নাম টাঙ্গাইলের চমচম।

শেরপুরের দর্শনীয় স্থান

মধুটিলা ইকোপার্ক: শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলার সীমান্তবর্তী পোড়াগাঁও ইউনিয়নের পাহাড়ঘেরা পরিবেশে স্থাপিত দেশের অন্যতম বিনোদন কেন্দ্র মধুটিলা ইকোপার্ক। এখানে আছে ওয়াচ টাওয়ার , শিশুপার্ক , ক্যান্টিন, তথ্যকেন্দ্র ,ডিসপ্লে মডেল, গোলাপ বাগান, মিনি চিড়িয়াখানা , বিভিন্ন প্রাণীর ভাস্কর্য , কৃত্রিম লেক, ষ্টার ব্রীজ , পেডেল বোট , স্টেপিং সিড়ি।

শেরপুরের গজনী ইকো পার্ক: ভারতের মেঘালয় রাজ্যের পাদদেশে ঝিনাইগাতীর গারো পাহাড়ের গজনী অবকাশ। লালমাটির উচু-নিচু,পাহাড়,টিলা, পাহাড়ী টিলার মাঝে সমতল ভূমি। দুই পাহাড়ের মাঝে পাহাড়ী ঝর্ণা একে বেঁকে এগিয়ে চলছে। ঝর্ণার পানি এসে ফুলেফেপে উঠছে। সেখানে বাধ দিয়ে তৈরি করা হয়েছে কৃত্রিম লেক। লেকের মাঝে কৃত্রিম পাহাড় এবং পাহাড়ের উপর “লেক ভিউপেন্টাগন”।

ঘাগড়া লঙ্কার মসজিদ

সদর থেকে মসজিদটি ১৪ কিলোমিটার দূরে। এক গম্বুজবিশিষ্ট মসজিদটি দৈর্ঘ্য-প্রস্থে ৩০ বাই ৩০ ফুট। গম্বুজের চারপাশ ঘিরে ছোটবড় ১০টি মিনার। মসজিদের পূর্ব দিকে একটি দরজা এবং উত্তর-দক্ষিণে দুটি জানালা। মিহরাব ও দেয়ালে ফুলেল কারুকাজ আছে। এর নির্মাণকাল জানা যায় না, তবে দরজার ওপরের দেয়ালের খোদাই করা ফলক থেকে সংস্কারকাল জানা যায় ১২২৮ হিজরি। প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর মসজিদটির তত্ত্বাবধান করে। সদরের খোয়ারপাড় এলাকা থেকে বাসে চড়ে যেতে হয় ঝিনাইগাতী সড়কের কোয়ারী রোডে। ভাড়া ২৫ টাকা। সেখান থেকে রিকশায় ২০ টাকা ভাড়ায় লস্কর মসজিদ।

রাজার পাহাড়: শ্রীবর্দি উপজেলা সদর থেকে ১৪ কিলোমিটার দূরে কর্ণঝোড়া বাজারের পাশেই রাজার পাহাড়। পাহাড়ি টিলার ওপর ১০০ হেক্টরের বেশি সমতল ভুমি। টিলাজোড়া রাবারের আবাদ। শেরপুরে গারো পাহাড়শ্রেণীর যতগুলো পাহাড় আছে, রাজার পাহাড় তার মধ্যে সবচেয়ে উঁচু। পাহাড় ঘিরে গারো, কোচ, হাজং প্রভৃতি নৃগোষ্ঠীর বসবাস।

সদরের খোয়ারপাড় এলাকা থেকে বাসে ৫০ টাকা ভাড়ায় কর্ণঝোড়া যাওয়া যায়। সেখান থেকে রাজার পাহাড় হাঁটাপথ।

অন্যান্য দর্শনীয় স্থান: নাকুগাঁও স্থলবন্দর, বারোমারী ধর্মপল্লী, নকলার নারায়ণখোলা বেড়শিমুলগাছ, ঝিনাইগাতীর মরিয়মনগর ধর্মপল্লী, আড়াইআনি।জমিদারদের শীষমহল।

বিখ্যাত খাবারের নাম শেরপুরের (জামালপুর) ছানার পায়েস, ছানার পোলাও।

নদী সমূহ ব্রহ্মপুত্র, ভোগাই, নিতাই, কংশ, সোমেশ্বরী, মহারশ্মি ,মালিঝি।

যেভাবে যাবেন: ঢাকা থেকে রাজধানী ঢাকা থেকে ময়মনসিংহ হয়ে যাতায়াতই সবচেয়ে উত্তম। উত্তরবঙ্গ থেকে টাঙ্গাইল ুজামালপুর হয়েও আসতে পারেন সড়ক পথে কিংবা রেল পথে জামালপুর পর্যন্ত তার পর জামালপুর থেকে সড়ক পথে আসতে পারেন। শেরপুর শহর থেকে গজনীর দুরত্ব মাত্র ৩০ কিলোমিটার। ঢাকা থেকে সরাসরি মাইক্রো বাস অথবা প্রাইভেটকারে গজনী অবকাশ যেতে পারেন। ঢাকা থেকে নিজস্ব বাহনে মাত্র সাড়েতিন থেকে চার ঘন্টায় ঝিনাইগাতীর গজনী আসা যায়। এ ছাড়া ঢাকার মহাখালি থেকে ড্রিমল্যান্ড বাসে শেরপুর আসা যায়।

জামালপুরের দর্শনীয় স্থান

গারো পাহাড়ের পাদদেশে যমুনা-ব্রহ্মপুত্র বিধৌত বাংলাদেশের ২০তম জেলা জামালপুর,দেওয়ানগঞ্জের সুগার মিলস।

লাউচাপড়া পিকনিক স্পটঃ জায়গাটি জামালপুর জেলার অধীনে হলেও যাওয়ার সহজপথ হলো শেরপুর হয়ে। ঢাকা থেকে সরাসরি শেরপুরে যায় ড্রীমল্যান্ড পরিবহনের বাস। ভাড়া ১১০ টাকা। ড্রীমল্যান্ড স্পেশালে ভাড়া ১৪০ টাকা। শেরপুর থেকে বাসে বকশীগঞ্জের ভাড়া জনপ্রতি ২০ টাকা

গান্ধি আশ্রমঃ মেলান্দহ উপজেলার ঝাউগড়া ইউনিয়নের কাপাস হাটিয়া গ্রামে গান্ধি আশ্রম কেন্দ্র রয়েছে।

দারকি: দারকি গ্রাম ইসলামপুর মাছ ধরার বিশেষ এক ধরনের ফাঁদের নাম “দারকি”। জামালপুরের ইসলামপুর উপজেলার হাতিজা গ্রামের নাম বদলে দিয়েছে এই দারকি। যমুনা ফার্টিলাইজার।

বিখ্যাত খাবারের নাম : সরিষাবাড়ীর সন্দেস। নদী সমূহ : যমুনা, ব্রহ্মপুত্র ও ঝিনাই।

নেত্রকোনার দর্শনীয় স্থান

গারো পাহাড়ের পাদদেশ লেহন করে এঁকেবেঁকে কংশ, সোমেশ্বরী নদীসহ অন্যান্য শাখা নদী নিয়ে বর্তমান নেত্রকোণা জেলা , বিজয়পুর পাহাড়ে চিনামাটির নৈসর্গিক দৃশ্য, দূর্গাপুর, রানীখং মিশন, দূর্গাপুর,টংক শহীদ স্মৃতি সৌধ, দূর্গাপুর,কমলা রাণী দিঘীর ইতিহাস, দূর্গাপুর,সাত শহীদের মাজার, কলমাকান্দা,হযরত শাহ সুলতান কমর উদ্দিন রুমী (রাঃ)-এঁর মাজার শরীফ, নেত্রকোণা সদর,রোয়াইল বাড়ি কেন্দুয়া। কলমাকান্দা উপজেলার লেঙ্গুরায় মুক্তিযুদ্ধে সাত শহীদের মাজার, চেংনি ও গোবিন্দপুরে পাহাড়ের নৈসর্গিক প্রকৃতি ও পাগলা কৈলাটির কালা চানশাহের মাজার, দুর্গাপুর বিজয়পুরের চিনামাটির পাহাড়, গারো পাহাড়ের নৈসর্গিক দৃশ্য, টংক আন্দোলনের জন্য খ্যাত হাজংমাতা রাশিমনি স্মৃতিসৌধ, রানীখং মিশন টিলায় ক্যাথলিক গির্জা, বিরিশিরি কালচারাল একাডেমী, কমলা রানীর দীঘি, বাউরতলা গ্রামের কথিত নইদ্যা ঠাকুরের ভিটা বিজয়পুরে দেশের সর্ববৃহৎ চীনামাটির খনি, বিরিশিরি উপজাতীয় কালচারাল একাডেমী রানীখং পাহাড়ি টিলার ওপর অপরূপ শোভামণ্ডিত বাংলাদেশের সর্বপ্রথম খ্রিস্টান ক্যাথলিক গির্জা, হাজং মাতা রাশিমনি হাজংয়ের স্মৃতিসৌধসহ আদিবাসীদের আতিথেয়তা পর্যটকদের আকর্ষণ করার মতো।

আদিবাসী সাংস্কৃতিক একাডেমি: দুর্গাপুরের বিরিসিরি ইউনিয়নে অবস্থিত আদিবাসী সাংস্কৃতিক একাডেমি। এ অঞ্চলে বসবাসকারী ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর জীবন যাত্রার নানা নিদর্শন সংরক্ষিত আছে এখানে। বিরিশিরিসহ সুসং দুর্গাপুর ও এর আশপাশের উপজেলা কলমাকান্দা, পূর্বধলা, হালুয়াঘাট এবং ধোবাউড়ায় রয়েছে গারো, হাজং, কোচ, ডালু, বানাই প্রভৃতি ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর বসবাস। এদের জীবনধারা যেমন বৈচিত্র্যময়, তেমনি বৈচিত্র্যময় এদের সংস্কৃতিও। তাদের এসব ঐতিহ্যকে সংরক্ষণ, উন্নয়ন এবং চর্চার জন্যই ১৯৭৭ সালে বিরিশিরিতে সরকারি উদ্যোগে গড়ে তোলা হয় আদিবাসী সাংস্কৃতিক একাডেমি। এখানে প্রায় সারা বছরই নিয়মিত অনুষ্ঠিত হয় বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।

সোমেশ্বরী নদী: দুর্গাপুরের পাশ দিয়েই বয়ে গেছে অসামান্য সুন্দর এ নদী। ভারতের মেঘালয় রাজ্যের গারো পাহাড় থেকে সৃষ্ট এ নদী মেঘালয়ের বাঘমারা বাজার হয়ে রানিখং পাহাড়ের পাশ দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। জনশ্রুতি আছে সোমেশ্বর পাঠক নামে এক সিদ্ধপুরুষ এ অঞ্চলের দখল নেওয়ার পর থেকে নদীটি সোমেশ্বরী নাম লাভ করে। একেক ঋতুতে এ নদীর সৌন্দর্য একেক রকম। তবে সারা বছরই এর জল টলটলে স্বচ্ছ। বর্ষা মৌসুমে বেড়ে গেলেও শীতে সোমেশ্বরীর জল অনেকাংশেই কমে যায়।

সুসং দুর্গাপুরের জমিদার বাড়ি: জেলার দুর্গাপুর উপজেলায় অবস্থিত সুসং দুর্গাপুরের জমিদার বাড়ি। সুসং দুর্গাপুরের সোমেশ্বর পাঠকের বংশধররা এ বাড়িটি তৈরি করেছিলেন। বাংলা ১৩০৪ সালের ভয়াবহ ভূমিকম্পে জমিদার বাড়িটি একেবারে ধ্বংস হয়ে গেলে তাদের বংশধররা এটি পুনঃনির্মাণ করেন। এ জমিদার বাড়িটি চারটি অংশে বিভক্ত। বড় বাড়ি, মেজো বাড়ি, আবু বাড়ি ও দুই আনি বাড়ি। জানা যায়, ১২৮০ মতান্তরে ১৫৯৪ খ্রিস্টাব্দের কোনো এক সময়ে কামরূপ কামাখ্যা থেকে সোমেশ্বর পাঠক নামে এক ব্রাহ্মণ এ অঞ্চলে ভ্রমণে আসেন। এখানকার সৌন্দর্যে মুগ্ধ হয়ে এখানে থেকে যাওয়ার পরিকল্পনা করেন। সোমেশ্বর পাঠক গারো রাজা বৈশ্যকে পরাজিত ও নিহত করে রাজ্য দখল করে নেন। সে সময়ে সুসং রাজ্যের অধিকাংশ জনগোষ্ঠী ছিল আদিবাসী, যাদের অধিকাংশই আবার গারো। জমিদারী প্রথা উচ্ছেদের পূর্ব পর্যন্ত প্রায় তিনশ বছর তার বংশধররা এ অঞ্চলে জমিদারী করে।

টংক আন্দোলনের স্মৃতিসৌধ: ১৯৪৬-৫০ সালে কমরেড মণিসিংহের নেতৃত্বে পরিচালিত টংক আন্দোলনে শহীদদের স্মরণে নির্মিত স্মৃতিসৌধ। সোমেশ্বরী নদী পার হয়ে কিছ দূর এগোলেই চোখে পড়বে এ স্মৃতিসৌধটি। প্রতিবছর ৩১ ডিসেম্বর কমরেড মণিসিংহের মৃত্যু দিবসে এখানে তিন দিনব্যাপী মণি মেলা নামে লোকজ মেলা বসে।

সাধু যোসেফের ধর্মপল্লী: বিরিসিরি থেকে সোমেশ্বরী নদী পার হয়ে রিকশায় যেতে হয় রানিখং গ্রামে। এখানে আছে সাধু যোসেফের ধর্মপল্লী। রানিখং গ্রামের এ ক্যাথলিক গির্জাটি প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল ১৯১২ সালে।

রাশমণি স্মৃতিসৌধ: রানিখং থেকে বিজয়পুর পাহাড়ে যাওয়ার পথে বহেরাতলীতে অবস্থিত রাশমণি স্মৃতিসৌধ। ১৯৪৬ সালের ৩১ জানুয়ারি সংঘটিত কৃষক ও টংক আন্দোলনের প্রথম শহীদ ব্রিটিশবিরোধী সংগ্রামের নেত্রী হাজং মাতা রাশমণির স্মৃতিকে স্মরণীয় করে রাখতে রাশমণি মেমোরিয়াল ট্রাস্ট এখানে নির্মাণ করেছে এ স্মৃতিসৌধটি।

বিজয়পুর পাহাড়: রাশমণি স্মৃতিসৌধ থেকে প্রায় দেড় কিলোমিটার দূরে বিজয়পুরে আছে চীনা মাটির পাহাড়। এখান থেকে চীনা মাটি সংগ্রহের ফলে পাহাড়ের গায়ে সৃষ্টি হয়েছে ছোট ছোট পুকুরের মতো গভীর জলাধার। পাহাড়ের গায়ে স্বচ্ছ জলাধারগুলো দেখতে চমত্কার।

যেভাবে যাবেন: ঢাকার কমলাপুর থেকে ট্রেনে আড়িখোলা রেলস্টেশেনে নেমে রিকশায় গির্জায় যাওয়া যায়। ট্রেনে ঢাকা থেকে আড়িখোলার ভাড়া ১৫ টাকা। ঢাকার মহাখালী বাস টার্মিনাল থেকে সকাল ৭টা সাড়ে ৭টার মধ্যে কিছুক্ষণ পরপর বাস ছেড়ে যায়। ভাড়া গেটলক ২০০ টাকা।

শহরের বেশ কয়েকটি আবাসিক হোটেলের মধ্যে আল নূর রাতযাপনের জন্য যথেষ্ট ভালো। ভাড়া ডাবল বেড ৩৫০ টাকা। খাওয়ার জন্য স্টেশন রোডের আলেফ খাঁর হোটেল ও বিকালের নাস্তার জন্য বড় বাজারের ইসমাইলের হোটেল। বিখ্যাত খাবারের নাম: নেত্রকোনার বালিশ মিষ্টি। নদী সমূহ: মগড়া, কংশ, সোমেশ্বরী, ধনু নদী।

 

রাজবাড়ীর দর্শনীয় স্থান:

১। কথা সাহিত্যিক মীর মশাররফ হোসেন স্মৃতি কমপ্লেক্স

২। এ্যাক্রোবেটিক সেন্টার

৩। রাজবাড়ী সুইমিং পুল

৪। কুটি পাঁচুরিয়া জমিদার বাড়ী

৫। গোদার বাজার পদ্মা নদীর তীর

৬। রাজবাড়ী উদ্যান বেস

৭। গোয়ালন্দের দৌলতদিয়া ঘাট

৮। নলিয়া জোড়বাংলা মন্দির

এছাড়াও রয়েছে কল্যাণ দিঘি  অন্যান্য দর্শনীয় স্থান বেলগাছির দোলমঞ্চ, চাঁদ সওদাগরের ঢিবি, শিঙ্গা গায়েবি মসজিদ, গোয়ালন্দ বিজয় বাবুর মন্দির, পাংশার বৌদ্ধ সংঘারাম, রাজা সীতারামের পুষ্করিণী, মদাপুরের রাজরাজেশ্বর মন্দির ইত্যাদি।

নদী সমূহ : পদ্মা, গড়াই, চন্দনা, চত্রা, হড়াই ও কুমার।

 

ফরিদপুরের দর্শনীয় স্থান

 

মথুরাপুরের দেউল: ফরিদপুর শহর থেকে প্রায় ২২ মাইল পশ্চিমে এবং মধুখালী বাজার থেকে মাইল দেড়েক উত্তরে অবস্থিত অপরূপ এ দেউলটি চারদিকে দেয়াল দিয়ে ঘেরা একটি বর্গাকার ভূমির কেন্দ্রস্থলে নির্মিত। দেউলের অভ্যন্তরে ছোট্ট প্রকোষ্ঠ রয়েছে। দেউলের নির্মাতা কে?— স্বাভাবিকভাবে এমন প্রশ্ন উঁকি দেবে মনে। তবে এর উত্তর পাওয়া মুশকিল। কারণ এ প্রসঙ্গে নানা লোকভাষ্য প্রচলিত এলাকায়। কেউ বলেন, রাজা প্রতাপাদিত্যকে যুদ্ধে পরাজিত করে মোগল সম্রাট আকবরের সেনাপতি রাজা মানসিংহ নির্মাণ করেছিলেন স্থাপনাটি। নান্দনিক এ স্থাপনাটি আসলে একটি বিজয়স্তম্ভ। এ বক্তব্য ইতিহাস-সমর্থিত কিনা, তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। তবে এর বিপরীতে আরেকটি ইতিহাস এলাকায় চালু রয়েছে; সেটি তুলনামূলক অধিক গ্রহণযোগ্য। সপ্তদশ শতাব্দীতে সংগ্রাম সিংহ নামের একজন ফৌজদার ছিলেন ভূষণায়। কোনো এক বিশেষ কার্যসিদ্ধি উপলক্ষে সংগ্রাম সিংহই এ দেউল নির্মাণ করেন মথুরাপুরে। দেশভাগের কয়েক বছর আগে মথুরাপুর দেউলকে সংরক্ষিত পুরাকীর্তি হিসেবে ঘোষণা করে প্রত্নতত্ত্ব বিভাগ। তখন কিছু সংস্কার সাধিত হয় স্থাপনাটির।

দেউল দেখে শেষে রওনা হতে পারেন বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ ল্যান্স নায়েক মুন্সী আবদুর রউফ গ্রন্থাগার ও স্মৃতি জাদুঘরে। জাদুঘর দর্শনের পর চাইলে ঢুঁ মেরে আসতে পারেন মধুখালী উপজেলা থেকে ১০ কিলোমিটার পশ্চিমে কামারখালী সেতুতে। গড়াই নদীর ওপর নির্মিত দৃষ্টিনন্দন এ সেতু আপনাকে মুগ্ধ করবে।

ঘোরাঘুরির পর স্বাভাবিকভাবেই পেটপূজার প্রসঙ্গ এসে যাবে। আর তখনই আসবে বাগাটের দইয়ের কথা। এরও রয়েছে ইতিহাস। বাগাট এলাকার ঘোষরা (দই প্রস্তুতকারী সম্প্রদায়) কবে থেকে দই প্রস্তুত শুরু করেন, তার সময়কাল নিশ্চিত করে বলা যায় না। তবে ইতিহাস ঘেঁটে জানা যায়, এ অঞ্চলে দই প্রস্তুত শুরু হয় প্রায় ২০০ বছর আগে। মূলত পাকিস্তান আমলে খ্যাতিমান দই বিক্রেতা নিরাপদ ঘোষের আমলে বাগাটের দই দেশজুড়ে সমাদৃত হয়। এ দই তখন পূর্ব পাকিস্তানের বিভিন্ন শহর থেকে শুরু করে পশ্চিম পাকিস্তানের করাচি, রাওয়ালপিন্ডিসহ বিভিন্ন শহরে যেত। নিরাপদ ঘোষের পরিবারের কেউ এখন এ ব্যবসায় নেই। তবে গ্রামের প্রায় ২০টি পরিবার দই তৈরির কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। নানা রকম দই প্রস্তুত করা হয় বাগাটে। এর মধ্যে মিষ্টি দই, টক দই, হালকা মিষ্টি দই ও ক্ষীরসা দই অন্যতম। বাগাটে দুই শতাধিক পরিবারের প্রায় এক হাজার লোক এ দই বানানোর সঙ্গে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে জড়িত।

জীবনের ব্যস্ততার মধ্যে একটু ফুরসত মিললে দেখে আসতে পারেন রূপ ও প্রাণপ্রাচুর্যে পূর্ণ  শান্ত জনপদ মধুখালী। কবি জসিমউদ্দিনের বাড়ী।

 

গোপালগঞ্জ দর্শনীয় স্থান

বঙ্গবন্ধুর সমাধিসৌধ: শহর থেকে ১৯ কিলোমিটার দূরে টুঙ্গিপাড়া উপজেলা সদর। ১৯২০ সালের ১৭ মার্চ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এখানে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁকে সমাহিতও করা হয় এখানেই। আধুনিক স্থাপত্যরীতির বর্গাকার একটি সৌধ গড়ে তোলা হয়েছে তাঁর সমাধির ওপর।

শহরের বঙ্গবন্ধু কলেজ স্ট্যান্ড থেকে বাসে টুঙ্গিপাড়া যেতে ভাড়া লাগে ২৫ টাকা।

উলপুরের রায়চৌধুরীবাড়ি: শহর থেকে ১০ কিলোমিটার উত্তরে উলপুর গ্রাম। সে গ্রামের প্রীতীশচন্দ্র বসু রায়চৌধুরী ছিলেন রাজ কর্মচারী। চৌধুরীরা গ্রামটি রাজার কাছ থেকে তালুক পান। তাঁদের জমিদারি স্থায়ী ছিল ১৫৮ বছর। এ গাঁয়ে তাঁরা প্রায় ২০০ একর জমির ওপর বাগানবাড়ি, কৈলাশধাম, নাটমহল, আনন্দধাম, মেজবাবুর বাড়ি, জলবাড়ি, শ্মশানবাড়ি, ছোট বাবুর বাড়িসহ ৪৭টি স্থাপনা গড়ে তোলেন। শহর থেকে চৌধুরীবাড়ি যেতে অটোরিকশায় ভাড়া লাগে ২০ টাকা।

কোর্ট মসজিদ: শহরের প্রধান মসজিদ। ১৯৪৯ সালে নির্মিত হয়। সদর দরজাটি বেশ বড়। চারদিকে ছোট চারটি আর মাঝখানে একটি বড় গম্বুজ। পাশেই সুউচ্চ একটি মিনার। মসজিদের পূর্ব ও উত্তর পাশে দুটি বহুতল ছাত্রাবাস। শহরের বাসস্ট্যান্ড থেকে রিকশায় মসজিদে যেতে ভাড়া লাগে ১০ টাকা।

বিলরুট ক্যানেল: মধুমতির মানিকদাহ বন্দরের নিকট থেকে উত্তর এবং উত্তর পূর্ব দিকে উরফি, ভেড়ারহাট, উলপুর, বৌলতলী, সাতপাড়, টেকেরহাট হয়ে আড়িয়াল খাঁর শাখা নদী উতরাইল বন্দরের কাছাকাছি পর্যন্ত ৬০/৬৫ কিলোমিটার র্দীঘ ক্যানেল খনন করা হয়।

 

৭১ এর বধ্যভূমি স্মৃতিসৌধ (স্মৃতিস্তম্ভ): মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে গোপালগঞ্জ সদর উপজেলা সংলগ্ন ৭১ এর বধ্যভূমি (জয়বাংলা পুকর)

অন্যান্য দর্শনীয় স্থান: কোটাল দুর্গ, বহলতলী মসজিদ, ধর্মরায়ের বাড়ি, শ্রীহরি মন্দির ইত্যাদি। নদী সমূহ গড়াই, মধুমতী, কালীগঙ্গা, হুন্দা, ঘাঘর, পুরাতন কুমার ইত্যাদি।

যেভাবে যাবেন, ঢাকার গুলিস্তান, যাত্রাবাড়ী ও গাবতলী থেকে গোপালগঞ্জ যাওয়ার বাস আছে।

 

মাদারীপুরের দর্শনীয় স্থান

পর্বতের বাগান(মস্তফাপুর), প্রণবানন্দের মন্দির(বাজিতপুর), গণেশ পাগলের মন্দির(কদমবাড়ী), রাজারাম রায়ের বাড়ি(খালিয়া), সেনাপতির দিঘি, সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের বাড়ি(মাইজপাড়া) ,আলগী কাজি বাড়ি মসজিদ, রাজা রাম মন্দির, ঝাউদি গিরি, আউলিয়াপুর নীলকুঠি , মিঠাপুর জমিদার বাড়ি, প্রণব মঠ, বাজিতপুর, মঠের বাজার মঠ, খোয়াজপুর, খালিয়া শান্তিকেন্দ্র, পর্বতের বাগান, শকুনী লেক, সেনাপতির দিঘি।

বিখ্যাত খাবারের নাম খেজুরের গুড়ের(পাতিগুড়) জন্য বিখ্যাত। নদী : পদ্মা, আড়িয়াল খাঁ, কুমার, পালরদী

 

শরিয়তপুরের দর্শনীয় স্থান

ফতেহজংপুর দুর্গ, মুঘল আমলের বিলাসখান মসজিদ, মহিষের দিঘী, দক্ষিণ বালুচর মসজিদ,হাটুরিয়া জমিদার বাড়ি,মানসিংহের বাড়ী।

 

রংপুর বিভাগ

 

বাংলাদেশের প্রাচীন জনপদ রংপুর। প্রাচীন জনপদের বরেন্দ্র অঞ্চলের অংশ এটি। সময়ের বিবর্তনে এ অঞ্চল প্রাচীন ঘোড়াঘাট, মোগল, ব্রিটিশ শাসনামলে আসে।

 

রংপুরের দর্শনীয় স্থান

রংপুরে রয়েছে শতাব্দী প্রাচীন নামকরা শিা প্রতিষ্ঠান কারমাইকেল বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ। অপরূপ কারুকার্যখচিত এ কলেজে একটি গম্বুজও রয়েছে। আছে রাজপ্রাসাদতুল্য তাজহাট জমিদারবাড়ি। মীরগঞ্জে রয়েছে বিশাল একটি দীঘি। এখানে আরও রয়েছে লালবিবির সমাধিসৌধ, ফকিরনেতা মদিনীর কবর ও মোগল আমলের মসজিদ। পায়রাবন্দে আছে মহীয়সী বেগম রোকেয়ার বাড়ির ধ্বংসাবশেষ, বেগম রোকেয়া মেমোরিয়াল উচ্চবিদ্যালয়, বেগম রোকেয়ার স্মৃতিফলক এবং রোকেয়া পরিবারের সদস্যদের ব্যবহƒত একটি শানবাঁধানো দীঘিও রয়েছে।

পীরগঞ্জের চুতরাহাটের পশ্চিমে রয়েছে নীল দরিয়ার বিল। তারাগঞ্জে গেলে দেখা মিলবে তারাবিবির মসজিদের। গঙ্গাচরার কুঠিপাড়ায় নীলকুঠি। পীরগাছায় দেবী চৌধুরানীর রাজবাড়ি, ইটাকুমরার শিবেন্দ্র রায়ের রাজবাড়িটিও দেখার মতো। এছাড়াও আছে, চিড়িয়াখানা, জাদুঘর, শিরিন পার্ক, টিকলির বিল, খাতুনিয়া লাইব্রেরি, দমদমা ব্রিজ, পরেশনাথ মন্দির, কেরামতিয়া মসজিদ, ভিন্ন জগৎ।

তাজহাট জমিদার বাড়ি: রংপুর শহর থেকে প্রায় ছয় কিলোমিটার দূরে তাজহাট গ্রামে অবস্থিত এ জমিদার বাড়িটি। রত্ন ব্যবসায়ী মান্নালাল ছিলেন তাজহাট জমিদারির প্রতিষ্ঠাতা। ব্যবসায়িক কারণে অষ্টাদশ শতাব্দীর শেষ দিকে তিনি রংপুরের মাহিগঞ্জে এসে বসবাস শুরু করেন এবং একটি ভবন নির্মাণ করেন। ১৮৯৭ সালের ভূমিকম্পে তার এ ভবনটি ধ্বংস হয়ে যায় এবং তিনি আহত হয়ে পরবর্তীতে মারা যান। তার দত্তক পুত্র গোপাল লাল রায় বাহাদুর জমিদারি দায়িত্ব গ্রহণের পর বর্তমান ভবনটির নির্মাণ শুরু করেন। ১৯১৭ সালে ভবনটি সম্পূর্ণ হয়। ইটালী থেকে আমদানিকৃত শ্বেত পাথর দিয়ে তৈরি করা হয়েছিল এ বাড়ির সম্মুখের সিঁড়িটি। পুরো ভবনটিতে রয়েছে ২৮টি কক্ষ। ভবনের সামনে মার্বেল পাথরের সুদৃশ্য একটি ফোয়ারা আজও বিদ্যমান। ১৯৫২ সালে জমিদারি প্রথা বিলুপ্ত হওয়ার পরে এ বাড়ি চলে যায় কৃষি বিভাগের অধীনে এবং এখানে গড়ে ওঠে কৃষি প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট। মুক্তিযুদ্ধের সময় এ বাড়ির প্রচুর মূল্যবান সম্পদ খোয়া যায়। ১৯৮৫ সালে এখানে হাইকোর্টের একটি বেঞ্চ চালু হয়। পরবর্তীতে ১৯৮৭ সালে তাজহাট জমিদার বাড়ি রূপান্তর করা হয় জাদুঘরে। আর এর নাম রংপুর জাদুঘর। এ জাদুঘরের তিনশটি মূল্যবান নিদর্শন রয়েছে। রংপুর জাদুঘরের গ্রীষ্মকালীন সময়সূচি (এপ্রিল-সেপ্টেম্বর) হলো বেলা ১০টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা। মাঝে দুপুর একটা থেকে ত্রিশ মিনিট মধ্যাহ্ন বিরতি আছে। আর শীতকালীন (অক্টোবর-মার্চ) সময়সূচি সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা। ১টা থেকে ১টা ৩০ মিনিট পর্যন্ত বিরতি। রবিবার পূর্ণ দিবস, সোমবার অর্ধ দিবসসহ সরকারি সব ছুটির দিনে জাদুঘরটি বন্ধ থাকে। এ জাদুঘরে বাংলাদেশি ও বিদেশি পর্যটকদের জন্য প্রবেশ মূল্য যথাক্রমে ১০ ও ২০ টাকা।

পায়রাবন্দ: জেলার মিঠাপুকুর থানার পায়রাবন্দে রয়েছে নারী জগরণের অগ্রদূত বেগম রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেনের বসতভিটা। ২০০১ সালে এখানে সরকার প্রতিষ্ঠা করেছে বেগম রোকেয়া স্মৃতি কেন্দ্র। একটি বেদির ওপরে এখানে স্থান পেয়েছে বেগম রোকেয়ার পূর্ণাবয়ব ব্রোঞ্জ নির্মিত প্রতিকৃতি।

ভিন্নজগত: রংপুর শহর থেকে প্রায় চৌদ্দ কিলোমিটার দূরে রংপুর-দিনাজপুর মহাসড়ক থেকে সামান্য ভেতরে গঞ্জীপুর গ্রামে অবস্থিত একটি পর্যটন কেন্দ্র। দেশের প্রথম প্লানেটোরিয়ামটি এখানেই। এখানকার বিশাল প্রান্তরজুড়ে রয়েছে লেক, বাগান, শিশু পার্ক রিজর্টসহ আরও অনেক কিছু।

বিখ্যাত খাবারের নাম রংপুরের সিঙ্গারা হাউজের সিঙ্গারা সাথে সস্। নদী সমূহ তিস্তা, যমুনেশ্বরী, ঘাঘট ও করতোয়া।

যেভাবে যাবেন, ঢাকা থেকে রংপুর যাওয়ার জন্য সবচেয়ে ভালো পরিবহন হলো গ্রীন লাইন এবং টিআর ট্রাভেলস। এ দুই পরিবহনের এসি বাসের ভাড়া ৮০০-১০০০ টাকা। এ ছাড়া এ রুটে আগমনী পরিবহন, এস আর, শ্যামলী, হানিফ, কেয়া ইত্যাদি পরিবহনের সাধারণ বাস চলাচল করে। ভাড়া ৩৫০ থেকে ৫০০ টাকা।

 

দিনাজপুরের দর্শনীয় স্থান

দিনাজপুরে রয়েছে রাজা রামনাথের অবিস্মরণীয় কীর্তি রামসাগর দীঘি। রয়েছে কান্তজীর মন্দির যা বাংলাদেশের সবচেয়ে সুন্দর মন্দির। রয়েছে প্রাচীনতম বিহার সীতাকোট, দীর্ঘ ১ মাইল লম্বা দুর্গ ঘোড়াঘাট, গোরা শহীদের মাজার, সীতার কুঠরি, সিংহদুয়ার প্রাসাদ, বারদুয়ারি, শিশুপার্ক।

বিখ্যাত খাবারের নামলিচু, কাটারিভোগ চাল, চিড়া, পাপড়। নদী সমূহ ঢেপা নদী,করতোয়া নদী,নাগর, মহানন্দা, ঘোড়ামারা, টাংগন, তালমা, ডাহুক, কুলিক ও পুনর্ভবা।

যেভাবে যাবেন- এসআর, হানিফ, শ্যামলী, কেয়ায় চড়ে দিনাজপুর যাওয়া যায়।

 

লালমনির হাটের দর্শনীয় স্থান

তিস্তার পাড় তিস্তা ব্যারাজ: লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলার দোয়ানীতে তিস্তা নদীর ওপর গড়ে তোলা হয় বাঁধ। যাকে বলা হয় তিস্তা ব্যারাজ প্রকল্প। দেশের বৃহত্তম ৬১৫ মিটার দীর্ঘ এ ব্যারাজে ৪৫টি গেট রয়েছে। তিন বিঘা করিডোর ও দহগ্রাম-আংগরপোতা ছিটমহল, বুড়িমারী স্থল বন্দর, তিস্তা রেল সেতু।

নদী সমূহ ধরলা নদী ও দক্ষিনে তিস্তা নদী।

যেভাবে যাবেন যাবেন, এসআর, হানিফ, শ্যামলী, কেয়া এবং রেলে চড়ে লালমনিরহাট যাওয়া যায়।

 

ঠাকুরগাওএর দর্শনীয় স্থান

জামালপুর জমিদারবাড়ি জামে মসজিদ: ঠাকুরগাঁও শহর থেকে পীরগঞ্জ যাওয়ার পথে বিমান বন্দর পেরিয়ে শিবগঞ্জহাট। হাটের তিন কিলোমিটার পশ্চিমে জামালপুর জমিদারবাড়ি জামে মসজিদ।

রাজা টংকনাথের রাজবাড়ি: রানীশংকৈল উপজেলার পূর্বপ্রান্তে কুলিক নদীর তীরে মালদুয়ার জমিদার রাজা টংকনাথের রাজবাড়ি।

দিঘি: ঠাকুরগাঁও অঞ্চলে প্রাচীনকালে বেশ কিছু নদী ও নিচু জলাভূমি ছিল।

হরিণমারীর আমগাছ: প্রায় দুই বিঘা জায়গাজুড়ে শুয়ে-বসে-দাঁড়িয়ে আছে ২০০ বছরের বেশি বয়সী এক আমগাছ। মাটিতে নেমে এসেছে ১৯টি মোটা মোটা ডাল। গাছটির উচ্চতা আনুমানিক ৮০ ফুট আর ঘের ৩০ ফুট।ঠাকুরগাঁও থেকে বালিয়াডাঙ্গি উপজেলার দূরত্ব ২৫ কিলোমিটার। উপজেলা সদর থেকে ১০ কিলোমিটার ভেতরে হরিণমারী।

রাউতনগর সাঁওতালপল্লী রানীশংকৈল: ঠাকুরগাঁও সদর থেকে ৪৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে রাউতনগর গ্রাম।

নেকমরদের মাজার দেখতে গিয়েছিলাম রানীশংকৈল। ঠাকুরগাঁও সদর থেকে দক্ষিণ-পশ্চিমে ২০ কিলোমিটারের বেশি হবে। সেখানেই জানলাম গোরকুই কূপের কথা। লোকজন বলছিল, ‘তাজ্জব হয়া যাবেন, ভাই। আজব কুয়া। এর জল সারা বছর এক মাপে থাকে। শীতে কমে না, বর্ষায় বাড়ে না। তার ওপর আবার পাথরে তৈরি।’ কথার জালে মন আটকে গেল। দেখার লোভ সামলাতে পারলাম না। নেকমরদ থেকে আরো আট কিলোমিটার পশ্চিমে গোরকুই। সহজে যাওয়ার জো নেই। প্রথমে নছিমনে চড়ে গেলাম পারকুণ্ডা। এরপর শুরু হলো মেঠো পথ। একটা ভ্যানে চড়ে বসলাম। চালকের নাম মজনু। নাকের নিচে তাঁর কালো রেখা উঁকি দিতে শুরু করেছে সবে। সে গোরকুইয়ের গল্পগাথার ভাঁড়ার খুলে দিল। শ্রোতা বলতে আমি আর দিগন্তবিস্তৃত সবুজ ধানক্ষেত। দিনাজপুরকে শস্যভাণ্ডার বলার কারণ খুঁজে পেলাম এখানে এসে। চোখ যেদিকে যায় সবুজের অবারিত বিপুল বিস্তৃতি। বসতি খুবই কম। অনেক দূরে দূরে দু-তিনটি ঘর। মজনু কিছুক্ষণ পর গাড়ি থামাল একটা টং দোকানের সামনে। তেঁতুলগাছ ছায়া বিছিয়ে রেখেছে চারধারে। চা-বিস্কুট পাওয়া যাবে শুনে খানিক জিরানোর কথা ভাবলাম। চা খেতে খেতে দেখলাম সাঁওতাল শিশু-কিশোরদের উচ্ছল শৈশব। এখানে বেশ কয়েক ঘর সাঁওতাল আাছে। দোকান থেকেই একটা দেয়ালঘেরা স্থাপনার চূড়া দেখতে পেলাম। দোকানদার বলল, এটিই গোরক্ষনাথের মন্দির। এরপর আর তর সইল না, দামটাম মিটিয়ে মন্দিরে রওনা দিলাম।

ঢোকার মুখে একটি ছোট দরজা। এটি পেরোনোর পরই পেলাম সাদা চুনকাম করা ছোট একটি মন্দির। সিমেন্টের একটি শিবলিঙ্গ আছে মন্দিরগৃহের মধ্যখানে। বোঝা গেল, মহাদেবের মন্দির। পূর্ব দিকের দেয়াল ঘেঁষে একই সারিতে আছে আরো তিনটি মন্দির। শিবমন্দিরের পাশেরটি কালীমন্দির। শিবমন্দির থেকে এটি একটু বড়। দক্ষিণেরটি মৎস্যেন্দ্রনাথের সমাধিমন্দির। তিনটি মন্দিরেরই চূড়া গম্বুজ আকৃতির। সাধারণত মন্দিরে গম্বুজ দেখা যায় না, সেদিক থেকে এগুলো ব্যতিক্রম।

নদী সমূহ টাঙ্গন নদী,ভুল্লী নদী,নাগর নদী।

 

পঞ্চগড়ের দর্শনীয় স্থান

বাংলাবান্ধা জিরো পয়েন্ট তেঁতুলিয়া: দেশের সর্ব উত্তরের সীমানা তেঁতুলিয়া উপজেলার বাংলাবান্ধা জিরো পয়েন্ট। ওপারে ভারতের ফুলবাড়ী। এটি একটি স্থলবন্দর। বাংলাদেশ, নেপাল ও ভারত ত্রিদেশীয় বাণিজ্য কার্যক্রম দেখা যায় এখান থেকে। শহর থেকে লোকাল বাসে জিরো পয়েন্ট পর্যন্ত ভাড়া ৮০ টাকা।

রকস মিউজিয়াম, পঞ্চগড় সদর : পঞ্চগড় সরকারি মহিলা কলেজে আছে দেশের একমাত্র পাথরের জাদুঘর বা রকস মিউজিয়াম। কোনো কোনো পাথরের বয়স হাজার বছরেরও বেশি। ভেতরের গ্যালারিতে বিভিন্ন আকৃতি, রং ও বৈশিষ্ট্যের পাথর আছে। আরো আছে পুরনো ইমারতের ইট, পাথর ও পোড়ামাটির মূর্তি। আদিবাসীদের ব্যবহৃত জিনিসপত্রের সম্ভার আছে জাতিতাত্তি্বক সংগ্রহশালায়। উন্মুক্ত গ্যালারিও আছে। এখানে আছে বড় বড় সব পাথর এবং দুটি নৌকা। একটিমাত্র শালগাছ থেকে তৈরি প্রতিটি নৌকার দৈর্ঘ্য সাড়ে ২২ ফুট। শহরের কোচস্ট্যান্ড থেকে মহিলা কলেজ পর্যন্ত রিকশায় ভাড়া ১০ টাকা।

মির্জাপুর শাহি মসজিদ আটোয়ারী : মুঘল আমলে নির্মিত আয়তাকার মসজিদটি দৈর্ঘ্যে ৪০ ফুট, প্রস্থে ২৪ ফুট। এক সারিতে গম্বুজ আছে তিনটি, প্রবেশপথও তিনটি। মাঝখানের প্রবেশপথের উপরিভাগে একটি কালো ফলকে ফারসি লিপিতে সন-তারিখ লেখা আছে। সামনের পুরোটাই টেরাকোটা প্লাক দিয়ে সুসজ্জিত। প্লাকের ওপর ফুল ও লতাপাতা আঁকা। প্রত্নতত্ত্ব বিভাগ মসজিদটির দেখভাল করে। সদর থেকে লোকাল বাসে চড়ে মির্জাপুর বাজারে নামতে হবে। ভাড়া ২৫ টাকা। এরপর রিকশায় মসজিদ পর্যন্ত ভাড়া ১৫-২০ টাকা।

ভিতরগড়ঃ পঞ্চগড় শহর থেকে ১০ মাইল উত্তরে বাংলাদেশ- ভারত সীমান্ত বরাবর পঞ্চগড় সদর উপজেলাধীন অমরখানা ইউনিয়নে অবস্থিত এই গড়।

মহারাজার দিঘীঃ পঞ্চগড় শহর থেকে প্রায় ১৫ কিলোমিটার উত্তরে পঞ্চগড় সদর উপজেলাধীন অমরখানা ইউনিয়নে অবস্থিত একটি বড় পুকুর বর্তমানে যা মহারাজার দিঘী নামে পরিচিতি।

সমতল ভূমিতে সম্প্রতি প্রতিষ্ঠিত চা বাগান: পঞ্চগড় জেলার সদর ও তেঁতুলিয়া উপজেলায় সাম্প্রতিকালে সমতল ভূমিতে চা গাছের চাষাবাদ শুরু করা হয়েছে।

বাংলাবান্ধা জিরো (০) পয়েন্ট ও বাংলাবান্ধা স্থল বন্দর: হিমালয়ের কোল ঘেঁষে বাংলাদেশের সর্ব উত্তরের উপজেলা তেঁতুলিয়া। এই উপজেলার ১নং বাংলাবান্ধা ইউনিয়নে অবস্থিত বাংলাদেশ মানচিত্রের সর্বউত্তরের স্থান বাংলাবান্ধা জিরো (০) পয়েন্ট ও বাংলাবান্ধা স্থল বন্দর।

অন্যান্য দর্শনীয় স্থান: দেবীগঞ্জের গোলকধাম মন্দির, সদরের মহারাজার দীঘি ও ভিতরগড় দুর্গনগরী, আটোয়ারীর মির্জাপুরের ইমামবাড়া এবং তেঁতুলিয়ার জেলা পরিষদ ডাকবাংলো

নদী সমূহ: করতোয়া, আত্রাই, তিস্তা, মহানন্দা, টাংগন, ডাহুক, পাথরাজ, ভুল্লী, তালমা, নাগর, চাওয়াই, কুরুম, ভেরসা, তিরনই ও চিলকা।

যেভাবে যাবেন, সড়কপথ। তেঁতুলিয়া থেকে ঢাকা পর্যন্ত হানিফ এন্টারপ্রাইজ, কেয়া পরিবহন, কান্তি পরিবহন ও শ্যামলী এন্টারপ্রাইজের বাস নিয়মিত যাতায়াত করে। সেখান থেকে বিডিআরের অনুমতি সাপেক্ষে ভ্যানযোগে জিরো পয়েন্ট দর্শন করা যায়। যাতায়াতে ৩০ থেকে ৫০ টাকা খরচ হবে।

 

নীলফামারীর দর্শনীয় স্থান

সৈয়দপুরের চিনি মসজিদ, দুন্দিবাড়ী স্লুইসগেট , বাসার গেট ,নীলফামারী যাদুঘর ,নীলসাগর, হরিশচন্দ্রের পাঠ, ধর্মপালের গড়, কুন্দপুকুর মাজার, ময়নামতির দূর্গ, ভীমের মায়ের চুলা ইত্যাদি। বিখ্যাত খাবারের নাম : ডোমারের সন্দেশ ।নদী সমূহ তিস্তা, বুড়িতিস্তা, বুড়িখোড়া ও চাড়ালকাটা।

 

কুড়িগ্রামের দর্শনীয় স্থান

চিলমারীর বন্দর: সাতভিটায় পাখির ভিটারাজারহাট, কুড়িগ্রাম।

পাখিদের কষ্ট করে ছানা বড় করতে দেখে আমির উদ্দিনের খুব মায়া হতো। তার বাড়িটিই এখন পাখিদের অভয়ারণ্য। কুড়িগ্রাম জেলা শহর থেকে ৪ কি.মি. দূরে কুড়িগ্রাম-উলিপুর সড়কের পাশে আনন্দবাজার। সেখান থেকে ৩ কি.মি. উত্তরে রাজারহাট উপজেলার সাতভিটা গ্রাম।

উলিপুরের মুন্সিবাড়ি : বাড়ির মোট আয়তন ৩৯ একর। ভবনের ভেতরে ও বাইরে হরেক কারুকাজ। স্থাপত্যশৈলীও মনোহর। মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি বাহিনী বাড়িটির বেশ ক্ষতি করেছে। তবে এখনো যা টিকে আছে, তা পর্যটকদের মুগ্ধ করে। মোগল স্থাপত্যশৈলীর সঙ্গে ব্রিটিশ রীতির মিশেলে বাড়িটি নির্মিত। ঢাকার টেকনিক্যাল মোড় থেকে উলিপুর উপজেলা সদরে যাওয়ার বাস পাওয়া যায়। এরপর রিকশায় মুন্সিবাড়ি যেতে ভাড়া লাগে ৩০ থেকে ৩৫ টাকা

চান্দামারী মসজিদ: রাজারহাট উপজেলার চাকিরপশার ইউনিয়নে চান্দামারী মসজিদ। দৈর্ঘ্য ৪০ ফুট এবং প্রস্থ ২০ ফুট। এর নির্মাণকাজে ভিসকাস নামে এক ধরনের আঠালো পদার্থ ব্যবহৃত রয়েছে। পাঁচ ফুট উঁচু তিনটি বড় দরজা রয়েছে মসজিদে। ওপরে আছে তিনটি বড় গম্বুজ। চারদিকে আছে আরো ছয়টি ছোট গম্বুজ। মিনারের আছে চারটি। কুড়িগ্রাম শহর থেকে রিকশায় চান্দামারী যেতে জনপ্রতি ভাড়া লাগে ৫০ টাকা।

বঙ্গসোনাহাট ব্রিজ: ভূরুঙ্গামারী উপজেলার বঙ্গসোনাহাট ব্রিজটি ১৯০০ সালে নির্মিত। আসাম-বেঙ্গল আর্মি অ্যাকসেস রোডের অংশ হিসেবে ব্রিটিশ সরকার এটি নির্মাণ করে। প্রথম বিশ্বযুদ্ধে সৈন্য চলাচল ও রসদ সরবরাহের কাজে ব্যবহৃত হতো ব্রিজটি। মুক্তিযুদ্ধের সময় ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার পর ১৯৮৬ সালে পুনরায় চলাচলের উপযোগী হয়। ঢাকার টেকনিক্যাল মোড় থেকে থেকে ভূরুঙ্গামারীর বাস পাওয়া যায়। ভাড়া ৫০০ টাকা। এরপর অটোরিকশা বা ভটভটিযোগে ব্রিজে যেতে জনপ্রতি ভাড়া লাগে ১০ টাকা।

বিখ্যাত খাবারের নাম : ক্ষীর লাল মোহন

নদী সমূহ ব্রক্ষ্মপুত্র, তিস্তা, ধরলা, দুধকুমর, ফলকুমর, নীলকমল, গঙ্গাধর, শিয়ালদহ, কালজানী, বোয়ালমারি, ধরনী, হলহলিয়া, সোনাভরি, জিঞ্জিরাম, জালছিড়া

যেভাবে যাবেন: ঢাকার আসাদগেট বা টেকনিক্যাল মোড় থেকে হানিফ, জবা, নাবিলসহ আরো কিছু পরিবহনের বাসে কুড়িগ্রাম যাওয়া যায়।

 

 

রাজশাহী বিভাগ

 

ইতিহাস, ঐতিহ্য আর পুরাকীর্তির নিদর্শনের জন্য রাজশাহী স্মরণীয়। রাজশাহীর অঙ্গসৌষ্টবে খেলা করে সবুজশ্যামল শোভা।

 

রাজশাহীর দর্শনীয় স্থান

পদ্মা তীরে নির্মিত শাহ মখদুমের স্মরণে মাজার। তিন গম্বুজ বিশিষ্ট দরগাটির স্থাপত্যশৈলী অতুলনীয়। গোদাগাড়িতে রয়েছে নবাব আলীবর্দী খানের তৈরি একটি দুর্গ। পুঠিয়ায় ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা ঐতিহাসিক অনেক কীর্তির বিশালায়তনের পুঠিয়া রাজবাড়ি, শিবমন্দির, বড়কুঠি, গোবিন্দমন্দির, গোপালমন্দির, দোলমঞ্চ ইত্যাদি। এছাড়াও রাজশাহীতে দেখা যাবে লালকুঠি, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, শিরোইল মন্দির, বরেন্দ্র জাদুঘর, বাঘমারা রাজবাড়ি, ভুবনেশ্বর মন্দির, রাধাকৃষ্ণের ঝুলন মন্দির ইত্যাদি।

বিখ্যাত খাবারের নাম  রাজশাহীর রসকদম,বিরেন দার সিঙ্গারা (অলকার মোড়, রাজশাহী),তিলের জিলাপি। ঠিকানা- বর্ণালীর মোড়, রাজশাহী।, বারভাজা। ঠিকানা- বাটার মোড়, রাজশাহী।

নদী সমূহ: পদ্মা।

যেভাবে যাবেন, সড়ক যোগাযোগ ভালো হওয়ায় রাজশাহী যেতে বেগ পেতে হয় না। ট্রেনেও যেতে পরেন।

 

চাপাইনবাবগঞ্জের দর্শনীয় স্থান

দেখতে পাবেন নুসরাত শাহ্ নির্মিত সোনা মসজিদ, ঐতিহাসিক কানসাট। এছাড়াও মহানন্দা নদী পার হওয়ার পরই পথের দু’ধারে তরুণ বাহারি আমের বৃরে সারি আপনার মনে নাড়া দেবে। বিখ্যাত খাবারের নামচাঁপাইনবাবগঞ্জের কলাইএর রুটি,চাপাই নবাব গঞ্জের শিবগঞ্জের চমচম,শিবগঞ্জের (চাঁপাই নবাবগঞ্জ) চমচম, প‌্যারা সন্দেশ।

নদী সমূহ: মহানন্দা।

যেভাবে যাবেন:  দেশের যে কোনও প্রান্ত থেকে খুব সহজেই আসতে পারেন এখানে। যেমনÑহানিফ ন্যাশনাল, এনপি, মডার্ন, গ্রিন লাইন বাসে করে আসতে পারেন ।

 

পাবনার দর্শনীয় স্থান

অনেক কারণেই পাবনা খ্যাত। পাবনায় অবস্থিত দেশের একমাত্র মানসিক হাসপাতালটি। পাবনার অন্যান্য দর্শনীয় স্থান হচ্ছে- এডওয়ার্ড কলেজ, চাটমোহর শাহী মসজিদ, ভাঁরারা মসজিদ, কাজীপাড়া মসজিদ, জোড়াবাংলা মন্দির, জগন্নাথ মন্দির, ফরিদপুর জমিদার বাড়ি, তাড়াশ জমিদার বাড়ি, দুলাই জমিদার বাড়ি, শিতলাই জমিদার বাড়ি, হার্ডিঞ্জ ব্রিজ, লালন সেতু ইত্যাদি।

ঈশ্বরদী ইপিজেড, নর্থ বেঙ্গল পেপার মিল এবং ডাল ও আখ গবেষণা কেন্দ্র। আছে ফুরফুরা দরবার শরীফ। পাশেই পাবনা শহর, মাত্র ১৫ মিনিটের পথ। সেখানে দেখতে পাবেন উপমহাদেশের কিংবদন্তি নায়িকা সুচিত্রা সেনের বাড়ি, কোর্ট বিল্ডিং, অনুকুল ঠাকুরের আশ্রাম, জোড়বাংলা, বিখ্যাত মানসিক হাসপাতাল, রায় বাহাদুরের গেট, পাবনা অ্যাডওয়ার্ড কলেজসহ অনেক পুরনো কীর্তি।

পাকশী রিসোর্ট থেকে লালন শাহের মাজারে যাওয়া যায় ২০ থেকে ২৫ মিনিটে। ইচ্ছা করলে এখান থেকে শিলাইদহে রবীন্দ্রনাথের কুঠি বাড়িতে সড়কপথ বা নদীপথেও যেতে পারেন। ঘুরে আসতে পারেন সাহিত্যিক মীর মশাররফ হোসেনের বসতভিটা থেকে। মুক্তিযুদ্ধকালে দেশের প্রথম স্ব্বাধীন রাজধানী মুজিবনগরেও যেতে পারেন। যেতে পারেন বনলতা সেন খ্যাত নাটোরের রাজবাড়িসহ পুঠিয়া রাজবাড়িতে, শরিফা বাগানঈশ্বরদী, পাবনা, জেলা সদর থেকে ২০ কিলোমিটার দূরে ঈশ্বরদী উপজেলার ছলিমপুর ইউনিয়নের বক্তারপুর গ্রামে বাদশার এই শরিফা বাগান।

মুড়ি গ্রাম, মাহমুদপুর, পাবনা, মাহমুদপুরের মুড়ি সারা দেশে মশহুর। বহু বছর ধরে মাহমুদপুরের লোকজন মুড়ি দিয়ে জীবিকা নির্বাহ করে। পাবনা শহর থেকে প্রায় ছয় কিলোমিটার দূরে সদর উপজেলার মালঞ্চি ইউনিয়নের ছোট্ট গ্রাম মাহমুদপুর।

বিখ্যাত খাবারের নাম পাবনার প্যারাডাইসের প্যারা সন্দেশ,পাবনার শ্যামলের দই

যেভাবে যাবেন, ঢাকা থেকে বাদল, শ্যামলী, দুলকী, মহানগর ইত্যাদি বাস পাবনায় যায়।

 

সিরাজগঞ্জের দর্শনীয় স্থান

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের পদচিহ্ন পড়েছে সিরাজগঞ্জে শাহজাদপুরের কাচারিবাড়িতে। সিরাজগঞ্জের বড় আকর্ষণ, যমুনা সেতু। নবগ্রামে রয়েছে প্রাচীন দুটি মসজিদ। এছাড়া রয়েছে বাণীকুঞ্জ, সিরাজীর মাজার, লোহারপুল, মক্কা আউলিয়া মসজিদ, নবরতœ ,মন্দির, শিবমন্দির জয়সাগর, মহাপুকুর আখড়া, এনায়েতপুর পীর সাহেবের মসজিদ। মিল্কভিটা, বঙ্গবন্ধু সেতুর পশ্চিম প্রান্তের ইকোপার্ক, বাঘাবাড়ি বার্জ মাউনন্টেড বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র, বাঘাবাড়ি নদী বন্দর।

বিখ্যাত খাবারের নাম সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরের পানিতোয়া,সিরাজগঞ্জের ধানসিঁড়ির দই।

নদী সমূহ: যমুনা, বড়াল, ইছামতি, করতোয়া, হুরাসাগর, গোহালা, বাঙ্গালী, গুমনী এবং ফুলঝুড়ি।

যেভাবে যাবেন: সিরাজগঞ্জ যাওয়ার বেশকিছু পরিবহন রয়েছে। তবে বিআরটিসিই সর্বোত্তম।

 

নওগাঁর দর্শনীয় স্থান

এখানে দেখতে পাবেন বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের স্মৃতিধন্য পতিসর, ১৯২৩ সালে আবিষ্কৃত পাহাড়পুর বৌদ্ধবিহার, গদ্দল মহাবিহার, পতœীতলায় অবস্থিত দিব্যক স্মৃতিস্তম্ভ, নসরত শাহ নির্মিত কুশুম্বা মসজিদ। এছাড়াও রয়েছে করোনেশন থিয়েটার, অনিমেষ লাহিড়ীর বাড়ি, পালবংশের স্মৃতি বহনকারী সাঁওতালপাড়া।

পাহাড়পুর বৌদ্ধবিহার: নওগাঁ থেকে ৩২ কিলো মিটার উত্তরে বদলগাছী উপজেলায় অবস্থিত ঐতিহাসিক পাহাড়পুর বৌদ্ধবিহার। এর আদি নাম সোমপুর বিহার। ইতিহাসবিদদের মতে, পাল বংশের দ্বিতীয় রাজা ধর্মপাল অষ্টম শতকের শেষের দিকে এ বিহার নির্মাণ করেছিলেন। বিহারের আয়তন উত্তর-দক্ষিণে ৯শ ২২ ফুট ও পূর্ব-পশ্চিমে ৯শ ১৯ ফুট। সমগ্র পৃথিবীতে এ পর্যন্ত জ্যামিতিক নকশার যতগুলো পুরাকীর্তির সন্ধান পাওয়া গেছে বিশেষজ্ঞদের মতে পাহাড়পুর তার মধ্যে অন্যতম সেরা। কারো কারো মতে এখানে একটি জৈন মন্দির ছিল। আর সেই মন্দিরের উপরেই গড়ে তোলা হয়েছে এ বিহার। এ বিহারে মোট ১৭৭টি ঘর রয়েছে। ঘরগুলোতে বৌদ্ধভিক্ষুরা বাস করতেন। বিহারের ঠিক মাঝখানে রয়েছে একটি মন্দির। মন্দিরটি দৈর্ঘ্যে ৪শ ফুট, প্রস্থে প্রায় ৩শ ৫০ ফুট ও উচ্চতায় ৭০ ফুট। কালের বিবর্তনে মন্দিরের সবচেয়ে উপরের অংশ ধসে গেছে। বাইরের দেয়ালে বুদ্ধমূর্তি, হিন্দুদের দেবী মূর্তি ও প্রচুর পোড়ামাটির ফলকচিত্র রয়েছে।

এসব চিত্রে সাধারণ মানুষের বৈচিত্র্যময় জীবনগাথা চিত্রিত হয়েছে। বিহারের মূল বেষ্টনীর দেয়াল প্রায় ২০ ফুট চওড়া। বেষ্টনীর মধ্যে রয়েছে আরেকটি মন্দির। এটি মূল মন্দিরের ধ্বংস স্তূপ বলে ধারণা করা হয়। এ ছাড়াও এ বিহারের চারিপাশে আরো অনেক স্থাপত্যের নিদর্শন পরিলক্ষিত হয়। বিহারের কাছেই রয়েছে ইট ও পাথর দিয়ে বাঁধানো একটি ঘাট। এ ঘাটের পাশ দিয়ে এক সময় একটি নদী ছিল। এ ঘাট নিয়ে এলাকায় অনেক জনশ্রুতি রয়েছে। এ ঘাটে মইদল রাজার কন্যা সন্ধ্যাবতী স্নান করতো বলে এ ঘাটের নাম ছিল সন্ধ্যাবতীর ঘাট। নরওয়ে সরকারের আর্থিক সহায়তায় বাংলাদেশ সরকারের প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের তত্ত্বাবধানে ১৯৯৩ সালে এখানে একটি জাদুঘর নির্মাণ করা হয়। এ জাদুঘরে খলিফা হারুন অর রশিদের শাসনামলের রুপার মুদ্রাসহ বিভিন্ন সময়ের প্রাচীন মুদ্রা, কয়েক হাজার পোড়ামাটির ফলকচিত্র, পাথরের মুর্তি, তাম্রলিপি, শিলালিপি ইত্যাদি স্থান পেয়েছে। বিহারের চারপাশের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য পর্যটকদের মুগ্ধ করে।

যেভাবে যাবেন: নওগাঁ থেকে বাসে ও অটোরিকশা রিজাভ করে পাহাড়পুর বৌদ্ধবিহারে যাওয়া যায়। বাসে জনপ্রতি ভাড়া ৩০ টাকা। নওগাঁ শহর থেকে সিএনজি চালিত অটোরিকশা রিজাভ নিলে ভাড়া নেবে ৫শ টাকা। এতে ৫ জন যাওয়া যায়।

পতিসর কুঠিবাড়ী: বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের স্মৃতি বিজড়িত পতিসর কুঠি বাড়ী। নওগাঁ শহর থেকে প্রায় ৩৬ কিলোমিটার দক্ষিণে আত্রাই উপজেলার নাগর নদের তীরে পতিসর কুঠিবাড়ী অবস্থিত। পৈত্রিকসূত্রে প্রাপ্ত কালিগ্রাম পরগনার জমিদারী দেখাশোনার জন্য কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ১৮৯১ সালে সর্বপ্রথম পতিসরে আসেন। জমিদারী দেখা-শোনার জন্য এলেও প্রকৃতি ও মানব প্রেমী কবি অবহেলিত পতিসর এলাকার মানুষের জন্য দাতব্য চিকিত্সালয় ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠাসহ অনেক জনহিতৈষী কাজ করেন। এখানকার কৃষকের কল্যাণে নোবেল পুরস্কারের ১ লাখ ৮ হাজার টাকা দিয়ে তিনি এখানে একটি কৃষি ব্যাংক স্থাপন করেন। কবির সাহিত্য সৃষ্টির একটি বিশাল অংশ জুড়ে রয়েছে পতিসর। পতিসরে বসেই কবি চিত্রা, পূর্ণিমা, সন্ধ্যা, গোরা, ঘরে-বাইরেসহ অসংখ্য গ্রন্থ রচনা করেন। রবীন্দ্রনাথের স্মৃতি বুকে নিয়ে আজও দাঁড়িয়ে আছে পতিসর কুঠিবাড়ী।

যেভাবে যাবেন: নওগাঁ থেকে সরাসরি পতিসরে বাস যায় না। আত্রাই অথবা রানীনগরে বাস থেকে নেমে অটোরিকশা অথবা রিকশা-ভ্যানযোগে পতিসর যাওয়া যায়। শহর থেকে মাইক্রোবাস অথবা অটোরিকশা রিজার্ভ নিয়েও প্রতিসর ঘুরে আসা যায়।

ঐতিহাসিক কুশুম্বা মসজিদ: সাড়ে চারশ বছরের ঐতিহ্য ধারণ করে দাঁড়িয়ে আছে ঐতিহাসিক কুশুম্বা মসজিদ। নওগাঁ জেলার মান্দা উপজেলা সদর থেকে ৪ কিলোমিটার দক্ষিণে নওগাঁ রাজশাহী মহাসড়কের পশ্চিম পার্শ্বে অবস্থিত কুশুম্বা গ্রাম। এ গ্রামের বিশাল আকৃতির দীঘির পশ্চিম পাড়ে ধুসর বর্ণের ঐতিহাসিক কুশুম্বা মসজিদ অবস্থিত। বাংলায় নিযুক্ত আফগান শাসক গিয়াস উদ্দীন বাহাদুর শাহেব আমলে জনৈক সোলায়মান ১৫৫৮ খিস্টাব্দে এ মসজিদটি নির্মাণ করেন। মসজিদের চার কোণায় রয়েছে ৪টি মিনার, মিনারগুলো মসজিদের দেয়াল পর্যন্ত উঁচু ও আট কোণ বিশিষ্ট। ছাদের উপর রয়েছে মোট ৬টি গম্বুজ। মসজিদের উত্তর দিকের মেহরাবের সামনে পাথরের পিলারের ওপর তৈরি করা হয়েছিল একটি দোতলা ঘর। এই ঘরটিকে বলা হতো জেনান গ্যালারী বা মহিলাদের নামাজের ঘর। মসজিদের ভেতরে পশ্চিমের দেয়ালে রয়েছে ৩টি চমত্কার মেহরাবের ওপর ঝুলন্ত শিকল, ফুল ও লতা পাতার কারুকার্য। মসজিদের সম্মুখ ভাগে রয়েছে খোলা প্রাঙ্গণ ও পাথর বসানো সিঁড়ি যা দীঘিতে গিয়ে নেমেছে। বাংলাদেশের ৫ টাকা নোটে এ মসজিদটির ছবি রয়েছে। নওগাঁ থেকে সরাসরি রাজশাহীগামী বাসে কুশুম্বা মসজিদে যাওয়া যায়। জনপ্রতি ভাড়া নেবে ৩০ টাকা।

দিবর দীঘি: নওগাঁ জেলা সদর থেকে প্রায় ৫০ কিঃ মিটার ও পত্নীতলা উপজেলা সদর থেকে প্রায় ১২ কিঃ মিটার পশ্চিমে সাপাহার-পত্নীতলা সড়কের পাশে হাজার বছরের প্রাচীন এ দীঘিটি অবস্থিত। বৃহত্ এ দীঘি ও দীঘির চারপাশের সবুজ বৃক্ষরাজি মুগ্ধ করবে আপনাকে। নওগাঁ থেকে সাপাহারগামী বাসে দিবস দীঘিতে যাওয়া যায়। জনপ্রতি ভাড়া নেবে ৫০ টাকা।

যেভাবে যাবেন, ঢাকা থেকে সড়কপথে নওগাঁ যাওয়া বেশকিছু বাস রয়েছে। এগুলো হচ্ছে রোজিনা, হানিফ, শ্যামলী, এসআর, কেয়া ইত্যাদি।

বিখ্যাত খাবারের নাম নওগাঁর রসমালাই,নওগাঁর প্যারা সন্দেশ,মহাদেবপুর উপজেলার গরম গরম স্পন্জের মিস্টি।

নদী সমূহ: আত্রাই, পুনর্ভবা, ছোট যমুনা, নাগর, চিরি।

 

নাটোরের দর্শনীয় স্থান

চলনবিল: নাটোর, পাবনা ও সিরাজগঞ্জ জেলার সাতটি উপজেলা নিয়ে প্রায় ৮০০ বর্গ মাইল এলাকাব্যাপী চলনবিল অবস্থিত। বিলের পানি চলমান বলেই নাম চলনবিল। এর মতো বড় বিল দেশে আর নেই। আত্রাই, বড়াল, নন্দকুঁজা, গুমানী, করতোয়া, ভদ্রাবতী, বেশানী, গুড় প্রভৃতি নদী বিলে পানি জোগান দেয়। শহরের পুরনো বাস টার্মিনাল থেকে বাসে সিংড়া পর্যন্ত যেতে ভাড়া লাগে ১৫ টাকা। এরপর ইঞ্জিনচালিত নৌকায় ঘণ্টাচুক্তিতে বিলে বেড়ানো যায়।

চলনবিল জাদুঘর: জেলার গুরুদাসপুর উপজেলার খুবজিপুর গ্রামে আছে চলনবিল জাদুঘর। স্থানীয় শিক্ষক আব্দুল হামিদ ব্যক্তিগত প্রচেষ্টায় নিজ বাড়িতে ১৯৭৮ সালে গড়ে তুলেছেন বিচিত্র এ জাদুঘর। চলনবিলে প্রাপ্ত নানান নিদর্শন, মাছ ধরার বিভিন্ন সরঞ্জাম ছাড়াও এখানে আছে অনেক দুর্লভ সংগ্রহ। নাটোর থেকে বাসে গুরুদাসপুর উপজেলায় এসে সেখান থেকে নদী পার হয়ে রিকশায় আসা যাবে খুবজিপুর গ্রামের এ জাদুঘরারে। শনিবার জাদুঘরটি বন্ধ থাকে।

হাইতি বিল : জেলা শহর থেকে প্রায় আট কিলোমিটার দূরে নলডাঙ্গা উপজেলায় আছে হাইতি বিল। প্রায় ৪৫০ বর্গ কিলোমিটার আয়তনের এ বিলটি দেশের সবচেয়ে গভীর বিল। প্রায় বারো মিটার গভীর এ বিলে সারা বছরই পানি থাকে। তবে বর্ষায় পানির পরিমাণ বেড়ে যায় অনেক বেশি।

নাটোর রাজবাড়ি: শহরের উত্তরে ১৮০ বিঘা জমির ওপর বাড়িটি। বৃহৎ দুটি জলাশয় বাড়িটিকে চারদিক থেকে ঘিরে রেখেছে। রাজবাড়িতে প্রবেশপথ মাত্র একটি। প্রবেশপথের দুধারে ছিল প্রহরীদের ব্যারাক। ব্যারাক পেরোনোর পরই ছোট তরফের প্রাসাদ, ডানে অল্প দূরে বড় তরফের প্রাসাদ। ভেতরে রয়েছে রানী ভবানীর প্রাসাদ ও মন্দির। রাজকর্মচারীদের বাসস্থানটিও টিকে আছে। ১৯৮৫ সালে রাজবাড়ির বাগানের অংশ সংস্কার করে বানানো হয়েছে রানী ভবানী যুব পার্ক। শহরের ঢাকা বাসস্ট্যান্ড থেকে রাজবাড়ি যেতে রিকশায় ভাড়া লাগে ১০-১৫ টাকা।

উত্তরা গণভবন: প্রবেশদ্বারে আছে কলকাতায় তৈরি লন্ডনের কোক অ্যান্ড টেলভি কম্পানির একটি ঘড়ি। শহর থেকে তিন কিলোমিটার দূরে ৪১.৫১ একর জমির ওপর প্রতিষ্ঠিত নাটোরের দিঘাপতিয়া রাজবাড়ি যা এখন উত্তরা গণভবন। লেক ঘেরা ১২টি ভবন নিয়ে এ বাড়ি। বাড়ির বাগানে ইতালি থেকে আনা ভাস্কর্য। অনেক দুর্লভ গাছও আছে। ইতিহাস থেকে জানা যায়, নাটোর রাজার নায়েব দয়ারাম রায় ১৭১৪ সালে দিঘাপতিয়ায় জমিদার বাড়ি নির্মাণ করেন। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর ১৯৭২ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান দিঘাপতিয়া রাজবাড়িকে উত্তরা গণভবন ঘোষণা করেন। শহরের ঢাকা বাসস্ট্যান্ড থেকে রিকশায় ভাড়া লাগে ২০-২৫ টাকা।  এখানে রয়েছে রানী ভবানীর বাড়ি, দীঘাপাতিয়া রাজবাড়ি যা উত্তরা গণভবন নামেও পরিচিত। সুদৃশ্য একটি বাগানের পাশাপাশি রয়েছে দোলমঞ্চ, সিংহদালান, মন্দির ও অট্টালিকা, ঠাকুরবাড়ি কাব, দাতব্য চিকিৎসালয়, পাওয়ার হাউস ইত্যাদি। এছাড়াও উনিশ শতকে নির্মিত কোতোয়ালি দরগা, বুড়ামাদারের দরগা, গাড়িখানা দরগা, ময়দাপট্টি দরগা, কানাইখালী দরগা।

অন্যান্য দর্শনীয় স্থান: দয়ারামপুর রাজবাড়ি, লালপুরের বুধপাড়া কালীমন্দির

বিখ্যাত খাবারের নাম: নাটোরের কাচাগোল্লা

নদী সমূহ: আত্রাই, বড়াল, নারদ, নন্দকুঁজা ইত্যাদি।

যেভাবে যাবেন: ঢাকা ও চট্টগ্রাম সড়কপথে নাটোর যাওয়া যায়। উলেখযোগ্য পরিবহনগুলো হচ্ছে হানিফ, মডার্ন, এনপি এলিগ্যান্স, ন্যাশনাল ট্রাভেলস ইত্যাদি।

 

বগুড়ার দর্শনীয় স্থান

বগুড়ার সবচেয়ে আকর্ষণীয় দর্শনীয় স্থান হল ঐতিহাসিক মহাস্থানগড়। এখানে শীলাদেবীর ঘাট, গোবিন্দভিটা দেখে অভিভূত হতে হয়। এছাড়া খুব নিকটেই আছে বেহুলা লখিন্দরের বাসর। লোহায় নির্মিত বেহুলা লখিন্দরের বাসরঘরটি এই গ্রামের দণি-পশ্চিম প্রান্তে।

নদী সমূহ: করতোয়া, বাংলা নদী।

বিখ্যাত খাবারের নাম: বগুড়ার দই ও মহাস্থানের কটকটি।

যেভাবে যাবেন, ঢাকা থেকে বগুড়া যাওয়ার পরিবহনগুলো হচ্ছে শ্যামলী, এসআর, হানিফ, কেয়া, গ্রিনলাইন ইত্যাদি।

 

জয়পুরহাট’র দর্শনীয় স্থান

আছরাঙ্গা দিঘি: জেলা শহর থেকে ২০ কিলোমিটার দূরে এই দিঘি ক্ষেতলাল উপজেলার মামুদপুরে। ১২০০ বছর আগে রাজশাহীর তাহিরপুর রাজপরিবারের সদস্য মনুভট্ট এটি খনন করান। দিঘিটি ১০০ ফুট দীর্ঘ এবং প্রস্থে ১০৭০ ফুট। মোট আয়তন সাড়ে ২৫ একর। চার পাড়ে চারটি বাঁধানো ঘাট আছে। জয়পুরহাট থেকে বাসে দিঘি পর্যন্ত যেতে ভাড়া লাগে ৪০ টাকা।

লাকমা রাজবাড়ি: পাঁচবিবি উপজেলায় ভারতের সীমান্তঘেঁষা গ্রাম পশ্চিম কড়িয়ায় এই রাজবাড়ি। প্রায় আড়াই শ বছর আগে বাড়িটি নির্মিত হয়েছিল। এখনো যে দুটি দালান টিকে আছে, ধারণা করা হয়, তার একটি ঘোড়াশাল, অন্যটি হাতিশালা। বাড়িটির পূর্ব দিকে কাছারিঘরের কিছু অংশ টিকে আছে। জয়পুরহাট থেকে অটোরিকশায় রাজবাড়ি যেতে ভাড়া লাগে ১০০ টাকা।

হিন্দা কসবা শাহি মসজিদ: ক্ষেতলাল উপজেলা সদর থেকে পাঁচ কিলোমিটার দক্ষিণে এই মসজিদ। ১৩৬৫ বঙ্গাব্দে আব্দুল গফুর চিশতি (রহ.) মসজিদটি নির্মাণ করান। পাঁচটি গম্বুজ আছে। জয়পুরহাট বাস টার্মিনাল থেকে ক্ষেতলালের ইটাখোলায় যেতে ভাড়া লাগে ১৫ টাকা। এরপর মসজিদে যেতে রিকশায় ভাড়া লাগে ১০ টাকা।

শামুকখোল গ্রামক্ষেতলাল, জয়পুরহাট: শামুকখোল সহজলভ্য পাখি নয়। এই পাখি বাসা বেঁধেছে জয়পুরহাটের ক্ষেতলাল উপজেলার মহব্বতপুর সাখিদারপাড়া গ্রামে। গ্রামবাসী বলল, সংখ্যায় হাজার ছাড়াবে।

অন্যান্য দর্শনীয় স্থান, দেবীগঞ্জের গোলকধাম মন্দির, সদরের মহারাজার দিঘি ও ভিতরগড় দুর্গনগরী, আটোয়ারীর মির্জাপুরের ইমামবাড়া এবং তেঁতুলিয়ার জেলা পরিষদ ডাকবাংলো।

বিখ্যাত খাবারের নাম

নদী সমূহ : করতোয়া, তালমা, কুরুম, চাওয়াই ও মহানন্দা।

যেভাবে যাবেন :  ঢাকার কল্যাণপুর/উত্তরা  থেকে শ্যামলী, হানিফ, কেয়া, এসআরসহ বেশ কিছু পরিবহনের বাসে জয়পুরহাট যাওয়া যায়। ভাড়া ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা।

 

 

 

চট্রগ্রাম বিভাগ

 

বাংলাদেশে ভ্রমণ আর চট্রগ্রাম যেন এক সুতোয় গাঁথা। পাহাড়ি অঞ্চল বলে কথা। বেড়ানো বা ভ্রমণ মানেই যেন চট্টগ্রাম! স্রষ্টা অকৃপণ হাতে সৌন্দর্য ঢেলে দিয়েছেন চট্টগ্রামে।

 

চট্টগ্রামের দর্শনীয় স্থান

 

চট্টগ্রামের মূল শহরে প্রবেশের পথে বাসে বসেই দেখতে পাবেন সীতাকুণ্ড। এখানে বৌদ্ধমন্দিরে গৌতম বুদ্ধের পায়ের ছাপ রয়েছে। দেখতে পারেন বারো আউলিয়ার মাজার, মিলিটারি একাডেমি, হিন্দু ধর্মালম্বীদের সবচেয়ে পুরনো ও সুবিশাল তীর্থস্থান কৈবল্যধাম,

 

ফয়’স লেক: শহরের পাহাড়তলীতে রয়েছে ঐতিহাসিক ফয়’স লেক। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে প্রায় তিনশ ফুট উঁচু এ লেকে বছরের সবসময়ই কানায় কানায় জলে পূর্ণ থাকে। চারিদিকে ছোট ছোট অসংখ্য পাহাড়ের ফাঁকে ফাঁকে ছড়িয়ে আছে এই লেকের জলরাশি। আসাম বেঙ্গল রেলওয়ে কর্তৃক ১৯২৪ সালে প্রায় ৩৩৬ একর জায়গায় কৃত্রিম এ হ্রদটি খনন করা হয়। বর্তমানে ফয়’স লেকের সাথে সঙ্গতি রেখে সেখানে কনকর্ড গড়ে তুলেছে এমিউজমেন্ট পার্ক। পাহাড়ের ঢালে ঢালে সেখানে এখন রয়েছে আধূনিক মানের বিভিন্ন রাইডস। ফয়’স লেকের প্রবেশমুখেই রয়েছে চট্টগ্রাম চিড়িয়া খানা। নানা ধরণের প্রাণী রয়েছে ছোট এই চিড়িয়াখানাটিতে।

 

ওয়ার সিমেট্রিঃ শহরের গোল পাহাড়েরর মোড় থেকে একটু সামনেই আছে রয়েছে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের স্মৃতিবিজড়িত ওয়ার সিমেট্রি বা কমনওয়েলথ যুদ্ধ সমাধি। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে প্রাণ বিসর্জন দেয়া ব্রিটেন, অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, নিউজিল্যান্ড, ভারত, মিয়ানমার, পূর্ব এবং পশ্চিম আফ্রিকা, নেদারল্যান্ড ও জাপানের সাতশ সৈনিকের সমাধি আছে এই জায়গাটিতে। দুই ঈদ ছাড়া সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত সারা বছরই খোলা থাকে এ জায়গাটি।

 

পাথরঘাটাঃ চট্টগ্রামের প্রধান মৎস্য বন্দর। সমুদ্র থেকে মাছ ধরার ট্রলারগুলো এসে নোঙ্গর করে এখানেই। বিভিন্ন রকম সামুদ্রিক মাছের পসরা দেখতে হলে যেতে হবে এ জায়গাটিতে।

 

পতেঙ্গা সমুদ্রসৈকত: চট্টগ্রাম শহরের দক্ষিণ প্রান্তের সৈকতটির নাম পতেঙ্গা। এটি চট্টগ্রামের সবচেয়ে পর্যটকপ্রিয় ভ্রমণ স্থান। শাহ আমানত বিমান বন্দরের কাছেই এ সৈকতটির অবস্থান। শহর থেকে এর দূরত্ব প্রায় ২২ কিলোমিটার।

 

পার্কি সমুদ্র সৌকত: চট্টগ্রাম শহর থেকে “পারকী বীচের” দূরত্ব প্রায় ২৫ কিঃমিঃ। যেতে সময় লাগবে ১ ঘন্টা। এটা মূলত কর্ণফুলী নদীর মোহনায় অবস্থিত। অর্থাৎ কর্ণফুলী নদীর মোহনার পশ্চিম তীরে পতেঙ্গা সমুদ্র সৈতক এবং পূর্বদক্ষিণ তীরে পারকী সমুদ্র সৈকত। এটি চট্টগ্রাম জেলার আনোয়ার থানার অর্ন্তগত একটি উপকূলীয় সমুদ্র সৈকত। চট্টগ্রাম সার কারখানা ও কাফকো যাওয়ার পথ ধরে এই সৈকতে যেতে হয়।

 

কাট্টলী সমুদ্র সৈকত: চট্টগ্রাম শহর থেকে কিছুটা দূরে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের দক্ষিণ পাশে আকর্ষণীয় সমুদ্র সৈকতটির নাম কাট্টলী সমুদ্র সৈকত। এর আরেকটি নাম জেলেপাড়া সমুদ্র সৈকত। জায়গাটির নৈসর্গিক সৌন্দর্য সহজেই বিমোহিত করে প্রকৃতিপ্রেমীদের। চট্টগ্রাম শহর থেকে টোল সড়ক ধরে সহজেই পৌঁছুতে পারেন জায়গাটিতে। এ ছাড়া চট্টগ্রামের একমাত্র আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ভেন্যু জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামের পাশ দিয়েও এ সৈকতে আসা যায়। এ জায়গাটির নাম সাগরিকা সমুদ্র সৈকত।

 

বোয়ালিয়াকুল সমুদ্র সৈকত: চট্টগ্রাম শহর থেকে প্রায় ২৮ কিলোমিটার উত্তরে বাঁশবাড়িয়া বাজারের পশ্চিম পাশের সড়কটি ধরে প্রায় এক কিলোমিটার এগোলেই বোয়ালিয়াকুল সমুদ্র সৈকত। সমুদ্র তীরে বিশাল ঝাউ বনের পাশে এখানে আছে বিস্তীর্ণ বেলাভূমি। এ সৈকতটির সৌন্দর্যও সহজেই দৃষ্টি কাড়তে সক্ষম পর্যটকদের। চট্টগ্রাম শহর থেকে বেবি টেক্সি কিংবা বাসে সহজেই আসা যায় জায়গাটিতে। শহরের অলঙ্কার মোড় থেকে সীতাকুণ্ডগামী যেকোনো বাসে উঠে আসতে পারেন।

 

বাঁশখালী সৈকত: শহর থেকে প্রায় বিশ কিলোমিটার দূরে রয়েছে আরেকটি সুন্দর সমুদ্র সৈকত বাঁশখালী। ঝাউ গাছে ঘেরা দীর্ঘ একটি সমুদ্র সৈকত আছে এখানে। শহরের বহদ্দার হাট থেকে বাসে এসে নামতে হবে মুনছুরিয়া বাজার। সেখান থেকে রিকশায় সুমুদ্র সৈকত। বাসে যেতে সময় লাগে এক ঘণ্টার মতো।

 

সীতাকুন্ড ইকো পার্ক: চট্টগ্রাম জেলার সীতাকুণ্ড উপজেলার ঐতিহ্যবাহী চন্দ্রনাথ রির্জাভ ফরেস্ট ব্লকের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে সুশোভিত চিরসবুজ বনাঞ্চলে বোটানিক্যাল গার্ডেন ও ইকোপার্ক অবস্থিত।এটি চট্টগ্রাম শহর থেকে ৩৫ কি.মি. উত্তরে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক এবং রেলপথের পূর্ব পাশে অবস্থিত।

 

চট্টগ্রাম শহর হতে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক ধরে এগুতে থাকলে প্রথমে পাহাড়তলী এবং তারপর একে একে কাট্টলী, সিটি তোরন, কুমিরা অতিক্রম করতে করতে পূর্ব পাশে চোখে পড়বে সুউচ্চ পাহাড়ের উপর চন্দ্রনাথ মন্দির, যার পাদদেশে অবস্থিত বোটানিক্যাল গার্ডেন ও ইকোপার্ক।

 

বাঁশখালী ইকোপার্ক: প্রকৃতির নৈসর্গিক সৌন্দর্যমন্ডিত উঁচু-নিচু পাহাড়, লেকের স্বচ্ছ পানি, বনাঞ্চল ও বঙ্গোপসাগরের বিতৃত তটরেখা নিয়ে গঠিত হয়েছে বাঁশখালী ইকোপার্ক। বাঁশখালী উপজেলা সদরের মনছুরিয়া বাজারের ৪ কিলোমিটার পূর্বে এই ইকোপার্কের অবস্থান। প্রকৃতি এখানে বিছিয়ে দিয়েছে তার সৌন্দর্য্যরে চাদর। কোলাহল মুক্ত পরিবেশে বণ্যপ্রাণী ও প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্যরে মাঝে কিছুক্ষণের জন্য নিজেকে হারিয়ে ফেলার অপূর্ব স্থান বাঁশখালী ইকোপার্ক।

 

চুনতি বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য: চট্টগ্রাম জেলার লোহাগড়া উপজেলায় অবস্থিত চুনতি বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য। বন্দরনগরী চট্টগ্রাম থেকে প্রায় ৭০ কিলোমিটার দূরে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের পাশেই এ বনাঞ্চলের অবস্থান। ছোট-বড় পাহাড়ের ঢালে ঢালে চিরসবুজ এ বন্যপ্রাণী অভয়াশ্রমে ভ্রমণ যেকোনো প্রকৃতিপ্রেমীর কাছেই উপভোগ্য হবে।

 

১৯৮৬ সালে লোহাগাড়া, সাতকানিয়া, বাঁশখালী, চকরিয়া এলাকার সাতটি সংরক্ষিত বনাঞ্চলের প্রায় ১৯ হাজার ১৭৭ একর জায়গা নিয়ে ঘোষণা করা হয় চুনতি সংরক্ষিত এলাকা। ২০০৩ সালে চুনতি অভয়ারণ্যে বন বিভাগের দুটি রেঞ্জ কার্যালয় স্থাপন করা হয়, যার একটি চুনতি রেঞ্জ। এ রেঞ্জের অধীনে আছে বনবিভাগের তিনটি বিট কার্যালয়।

 

মিরসরাই’র মহামায়া পর্যটন কেন্দ্র: চট্টগ্রাম শহর থেকে ৪৫ কিলোমিটার উত্তরে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের মিরসরাইয়ের ঠাকুরদিঘী বাজার থেকে দেড় কিলোমিটর পূর্বে পাহাড়ের পাদদেশে এ স্পটের অবস্থান। নীল আকাশের বিশালতার নিচে সবুজের সমারোহ। এ যেন প্রকৃতির লীলা খেলা। দু’পাশে থাকা বনাঞ্চলের দিকে তাকালে হয়তো সহজেই দেখা যাবে অনেক জীব বৈচিত্র। দেখা যাবে শেষ বিকেলের সূর্যের আলো যখন লেকে পড়ে তখন দূর থেকে মনে হয় পুরো প্রকল্পটির অপরুপ দৃশ্য। এ প্রকল্পটি হতে যাচ্ছে চট্টগ্রামের অন্যতম পর্যটন কেন্দ্র।

 

এছাড়াও এশিয়া মহাদেশের দুটি জাতিতাত্ত্বিক জাদুঘরের চট্টগ্রামে অবস্থিত জাদুঘরটি,  বাটালি পাহাড়, চট্টগ্রামের সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক সমাবেশস্থল লালদীঘি ময়দান যেখানে ঐতিহ্যবাহী জব্বারের বলি খেলা হয়। এছাড়াও দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে নিহত সৈনিকদের একাংশ এখানে সমাধিত্রে ওয়ার সিমেট্রি এবং বায়েজিদ বোস্তামীর মাজার।

 

বিখ্যাত খাবারের নাম চট্টগ্রাম, জিইসি মোড়ে ক্যান্ডির জিলাপি।চট্রগ্রামের মেজবানের মাংস,চিটাগাং এর মিষ্টি পান,জামানের চা (আন্দর কিল্লা),ইকবালের সন্দেশ(দেওয়ান বাজার),বোম্বাইয়াওয়ালার ক্ষীর(এনায়েত বাজার)

নদী সমূহ: কর্ণফূলী।

যেভাবে যাবেন : দেশের প্রায় প্রতিটি জেলা থেকেই সরাসরি চট্টগ্রামের উদ্দেশে বাস ছাড়ে। এস আলম, সৌদিয়া, ভলবো, চ্যালেঞ্জার, দ্রুতি, ইউনিক ইত্যাদি।

কোথায় থাকবেন : চট্টগ্রামে আবাসিক হোটেলগুলোর সিংহভাগই স্টেশন রোডে অবস্থিত। স্টেশন রোড ছাড়াও হোটেল রয়েছে নন্দনকাননে, মাদারবাড়ি, বহদ্দারহাট, আগ্রাবাদও অন্যান্য এলাকায়।

 

বান্দরবানের দর্শনীয় স্থান

 

বান্দরবানে দেখার মতো রয়েছে দেশের সর্বোচ্চ পর্বত- কেওক্রাডং ও তাজিনডং, রয়েছে প্রান্তিক লেক, রাজবাড়ি, নদী, জলপ্রপাত। আছে মেঘলা পর্যটন কমপেক্স, আকর্ষণীয় বোমাং রাজার বাড়ি। রয়েছে বেশ কয়েকটি ঐতিহ্যবাহীর বৌদ্ধমন্দির জাদী পাহাড়, বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের অন্যতম পবিত্র তীর্থস্থান জাদী পাহাড়, শঙ্খ নদী, বান্দরবানের অন্যতম আকর্ষণীয় স্থান সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে দুই হাজার ফুট উচ্চতা চিম্বুক পাহাড় ।

নদী সমূহ:  সাঙ্গু নদী(শঙ্খ নদী)।

 

রাঙ্গামাটির দর্শনীয় স্থান

 

রাঙ্গামাটি এবং ঝুলন্ত ব্রিজ দুটি শব্দ ওতপ্রোতভাবে জড়িত। ঝুলন্ত ব্রিজের অবস্থান পর্যটন কমপেক্সে। দেখতে পারেন কাপ্তাই লেক। নানা শ্রেণীর উপজাতির- মুরং, বম, পাংখো, খেয়াং, বনযোগী প্রভৃতি উপজাতির বাসস্থান কাসালং । কর্ণফুলি পেপার মিল, চাকমা উপজাতি অধ্যুষিত বরকল, কাপ্তাই লেকের দ্বীপজুড়ে চাকমা রাজার বাড়ি।

 

দিনে শহর ও এর আশ-পাশের দর্শনীয় জায়গাগুলোতে বেড়ানো যেতে পারে। রাঙ্গামাটি শহরের শুরুর দিকটায় রয়েছে উপজাতীয় জাদুঘর। বেবিটেক্সিওয়ালাকে বললেই আপনাকে নিয়ে যাবে জাদুঘরের দুয়ারে। এখানে রয়েছে রাঙ্গামাটিসহ পার্বত্য অঞ্চলে বসবাসরত নানান আদিবাসীদের ব্যবহূত বিভিন্ন সময়ের নানা সরঞ্জামাদি, পোশাক, জীবনাচরণ এবং বিভিন্ন ধরনের তথ্য। ছোট অথচ অত্যন্ত সমৃদ্ধ এ জাদুঘরটি খোলা থাকে সোম থেকে শুক্রবার সকাল ৯টা ৩০ মিনিট থেকে বিকেল ৪টা ৩০ মিনিট পর্যন্ত। শনি, রবি ও অন্যান্য সরকারি ছুটির দিনগুলোতে জাদুঘর বন্ধ থাকে। জাদুঘরে প্রবেশে বড়দের জন্য পাঁচ টাকা ও ছোটদের জন্য দুই টাকা লাগে।

 

উপজাতীয় জাদুঘর দেখে চলে যেতে পারেন পাশ্ববর্তী রাজ বন বিহারে। এ অঞ্চলের বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের একটি তীর্থস্থান এই রাজবন বিহার। এখানে আছে একটি প্রার্থনালয়, একটি প্যাগোডা, বনভান্তের (বৌদ্ধ ভিক্ষু) আবাসস্থল ও বনভান্তের ভোজনালয়। প্রতি শুক্রবার ছাড়াও বিভিন্ন অনুষ্ঠান উপলক্ষে এখানে চলে প্রার্থনা। রাজ বন বিহারে দাঁড়িয়ে উপভোগ করতে পারেন কাপ্তাই লেকের নয়নাভিরাম সৌন্দর্য।

রাজবনবিহারের পাশেই কাপ্তাই লেকের ছোট্ট একটি দ্বীপজুড়ে রয়েছে চাকমা রাজার রাজবাড়ি। নৌকায় পার হয়ে খুব সহজেই যাওয়া যায় এই রাজবাড়িতে। আঁকাবাঁকা সিঁড়ি ভেঙে উপরে উঠে গাছের ছায়ায় ইট বাঁধানো পথের মাথায় এ সুন্দর বাড়িটি। এখানে আরও রয়েছে চাকমা সার্কেলের প্রশাসনিক দপ্তর।

এবার লেক পাড় হয়ে বেবি টেক্সি করে চলে আসুন রিজার্ভ বাজারে। ঘুরে ফিরে দেখুন রাঙ্গামাটির ব্যস্ততম এই জায়গাটি। রিজার্ভ বাজার থেকেই রাঙ্গামাটির বিভিন্ন জায়গায় যাওয়ার লঞ্চ ছাড়ে।

 

রিজার্ভ বাজার থেকে এবার চলুন পর্যটন কমপ্লেক্সে। তবলছড়ি বাজার থেকে এখানকার দূরত্ব দেড় কিলোমিটার। রাস্তা সৌন্দর্য দেখতে দেখতে এই অল্প পথ নিমিষেই ফুরিয়ে যাবে। পর্যটন কমপ্লেক্সের ভেতরেই রয়েছে সবার চেনা সুন্দর ঝুলন্ত সেতুটি। দশ টাকার টিকেট কিনে এখানে ঢুকে পড়ুন। ঝুলন্ত সেতু ধরে যতই সামনে এগোবেন ততই ছবির মতো দৃশ্য আপনার দু’চোখকে হাতছানি দিবে। এখান থেকে কাপ্তাই লেকে নৌ ভ্রমণ করতে পারেন। নৌ ভ্রমণের জন্য এখানেই পেয়ে যাবেন নানা রকম বাহন। এ জায়গায় প্রথম দিনের ভ্রমণ শেষ করে হোটেলে ফিরে যান।

 

পরের পুরো দিনটি রাখনু কাপ্তাই লেক ভ্রমণের জন্য। শহরের রিজার্ভ বাজার ঘাটেই পাবেন কাপ্তাই লেকে ভ্রমণের নানা রকম ইঞ্জিন বোট। ঝুলন্ত সেতুর কাছেও এ রকম অনেক বোট পাবেন। সেক্ষেত্রে আপনাকে একটু বাড়তি টাকা গুনতে হবে শুধু শুধু। সারাদিনের জন্য একটি বোট ভাড়া করে সকালে সোজা চলে যান শুভলং বাজার। শুভলংয়ে কিছুটা সময় কাটিয়ে এবার ফিরতে শুরু করুন। ফিরতি পথের শুরুতেই হাতের বাঁয়ে পেয়ে যাবেন শুভলং ঝরনা। এখন শীত বলে ঝরনায় পানি নেই বললেই চলে। তারপরেও অল্প-স্বল্প যা আছে তাতে শরীরটা ভিজিয়ে নিতে পারেন। কাপ্তাই লেকের দুপাশের আকাশ ছোঁয়া পাহাড়গুলোর সৌন্দর্য দেখতে দেখতে চলতে থাকুন। পথে দুপুরের খাবার সেরে নিতে পারেন টুকটুক ইকো ভিলেজ কিংবা পেদা টিংটিংয়ে। শুরুতেই পড়বে টুকটুক ইকো ভিলেজ। কাপ্তাই লেকের একেবারে মাঝে এই ইকো ভিলেজটির সুন্দর সুন্দর কটেজে রাতও কাটাতে পারেন। এর রেস্তোরাঁটিতে পাবেন বিভিন্ন রকম পাহাড়ি মেন্যু। সারাদিন কাপ্তাই লেকের এসব জায়গা ভ্রমণের জন্য একটি ইঞ্জিন বোটের ভাড়া পড়বে ১০০০-২৫০০ টাকা। এ ছাড়া রাঙ্গামাটি শহর থেকে এখন প্রতিদিন শুভলং ছেড়ে যায় আধুনিক ভ্রমণতরী কেয়ারী কর্ণফুলী। প্রতিদিন সকালে ছেড়ে আবার বিকেলে ফিরে আসে। ফিরতি পথে টুকটুক ইকো ভিলেজ কিংবা পেদা টিংটিংয়ে থাকে বিরতি। যাওয়া আসার ভাড়া জনপ্রতি ২০০ টাকা।

এছাড়াও রয়েছে কাপ্তাই হ্রদ, রাজা জং বসাক খানের দীঘি ও মসজিদ, রাজা হরিশ চন্দ্র রায়ের আবাসস্থলের ধবংসাবশেষ, ঝুলন্ত সেতু, বুদ্ধদের প্যাগোডা, রাজ বনবিহার, শুভলং ঝর্ণা।

বিখ্যাত খাবারের নাম রাঙ্গামাটির জুম রেস্তোরার বাঁশের ভেতর তৈরী খাবার।

নদী সমূহ : কর্ণফুলি, থেগা, হরিনা, কাসালং, শুভলং, চিঙ্গড়ি, কাপ্তাই

যেভাবে যাবেন, ঢাকার কলাবাগান, ফকিরাপুল ও কমলাপুর থেকে সরাসরি রাঙ্গামাটির উদ্দেশে ছেড়ে যায় ডলফিন, এস আলম, সৌদিয়া, শ্যামলী ইত্যাদি পরিবহনের বাস। ভাড়া জনপ্রতি  টাকা। এ ছাড়া অন্যান্য বাস, ট্রেন কিংবা বিমানে চট্টগ্রাম এসে সেখান থেকেও রাঙ্গামাটি আসতে পারেন। চট্টগ্রাম শহরের সিনেমা প্যালেস এবং বহদ্দারহাট বাস টার্মিনাল থেকে সকাল ৭টা থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত প্রতি বিশ মিনিট পর পর রাঙ্গামাটির উদ্দেশে ছেড়ে যায় বিরতিহীন বাস। ভাড়া জনপ্রতি টাকা।

 

খাগড়াছড়ির দর্শনীয় স্থান

 

বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের তীর্থস্থান আর্য বনবিহার বৌদ্ধমন্দির। যেখানে রয়েছে বুদ্ধদেবের সুদৃশ্য একটি মূর্তি। আরও রয়েছে পিকনিক স্পট আলুটিলা, মং উপজাতিদের প্রধান আবাসস্থল মানিকছড়ি, রামগড়, নিবিড় অরণ্য, দুর্গম পাহাড় ও আপন খেয়ালে বয়ে চলা ঝরনাøাত (তৈদুছড়া ঝরনা)অন্যতম আকর্ষণীয় স্থান দীঘিনালা, বড় বৌদ্ধমূর্তি সমৃদ্ধ শান্তিপুর অরণ্য কুটির।

 

ফটিকছড়ির ভূজপুর হালদা নদী রাবার ড্যাম: ফটিকছড়ি উপজেলার ভূজপুর থানার বৃহত্তম সেচ প্রকল্প হালদা নদী রাবার ড্যাম (সেচ প্রকল্প) গত ২৮ মার্চ টেলি-কনফারেন্সের মাধ্যমে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউজ থেকে উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এই সেচ প্রকল্প ফটিকছড়ির উত্তরাঞ্চলের ৪০ হাজার বিঘা জমির কৃষি বিপ্লব ঘটানোর পাশা-পাশি পর্যটন শিল্প বিকাশের এক বিপুল সম্ভবনার ধার উম্মোচিত করেছে।

 

উপজেলার ভূজপুর থানার পূর্ব পাশ্বস্থ ডলু কৈয়া ছড়া-আছিয়া চা বাগান সংলগ্ন এলাকায় ১৪ কোটি টাকা ব্যয়ে হালদা নদীর উপর এ রাবার ড্যাম তৈরি করা হয়। পাশা-পাশি নয়নাভিরাম প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ভরপুর এই রাবার ড্যাম এলাকায় পর্যটন শিল্প বিকাশের বিপুল সম্ভবনা দেখা দিয়েছে। ইতোমধ্যে ভ্রমন পিপাসু ও প্রকৃতি প্রেমীরা এই এলাকাটিকে বেছে নিয়েছে। প্রতিদিন এখানে শত শত ভ্রমন পিপাসুরা এসে ভিড় জমায়।

 

দক্ষিনে হাটহাজারী ও রাউজান উপজেলা, পশ্চিমে মিরসরাই ও সীতাকুণ্ড, পূর্বে পার্বত্য চট্টগ্রামের মানিকছড়ি ও লক্ষ্মীছড়ি, উত্তরে ভারতীয় সীমান্ত ও রামগড় উপজেলা। সবুজের বিস্তীর্ণ সমারোহে প্রকৃতি অপরূপ সাজে সাজিয়েছে ফটিকছড়িকে। পর্যটকদের বিশেষ আকর্ষণ এ উপজেলার ১৭টি চা-বাগান। চা-বাগান, রাবার বাগান, চিরযৌবনা খাল, নদী, ছড়া, সবুজেঘেরা পাহাড় ও পুরনো স্থাপনাগুলো ফটিকছড়ির সৌন্দর্য আরো বাড়িয়েছে।

জানা যায়, ৩০৮ বর্গমাইলের এ উপজেলায় ১৫ হাজার ৫৫৩ একর টিলা পাহাড়ি ভূমির বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে গড়ে উঠেছে এসব চা-বাগান। এশিয়ার বৃহত্তম কর্ণফুলী, উদালিয়া, রামগড়, দাঁতমারা, নিউ দাঁতমারা, নাছেহা, মা জান, পঞ্চবটি, হালদা ভ্যালি, নেপচুন, আঁধার মানিক, বারমাসিয়া, কৈয়াছড়া, আছিয়া, রাংগাপানি, মুহাম্মদ নগরসহ ১৭টি চা-বাগান।

 

প্রতিটি চা-বাগানই আপন সৌন্দর্যে সমৃদ্ধ। চা-পাতা তোলার অপরূপ দৃশ্য, নজরকাড়া বাংলো এবং চা-বাগানের যাতায়াতব্যবস্থা অত্যন্ত সুন্দর। সব কিছু মিলিয়ে এসব চা-বাগনকে পর্যটন শিল্পের আওতায় আনা যায়। এ ছাড়া ফটিকছড়িতে বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে রয়েছে রাবার বাগান। রাবার বাগানগুলোর সারিবদ্ধ গাছ, রাবার গাছের কষপড়া দৃশ্য খুব সহজে মনকে রাঙিয়ে তোলে। পাহাড়-পর্বত ও সবুজের ঝোপঝাড়ঘেরা বৃরাজি, নৈসর্গিক সৌন্দর্যমণ্ডিত প্রকৃতির একান্ত সুর এখানে পাওয়া যায়। ফটিকছড়ির বুক চিরে বয়ে যাওয়া দুরন্ত নাগিনী কর্ণফুলী, চির যৌবনা হালদা, ধুরুং, সত্তা নদীসহ অসংখ্য নদী-খাল যেন সৌন্দর্যের সমারোহ।

 

নদী সমূহ চিংগ্রী, মাইনি, ফেনী ও হালদা।

যেভাবে যাবেন : ঢাকা, চট্টগ্রাম এবং দেশের বেশকিছু এলাকা থেকে খাগড়াছড়িতে বাস যাতায়াত করে। তবে নির্ভরযোগ্য পরিবহন হচ্ছেÑ সৌদিয়া, এস আলম, শান্তি পরিবহন ইত্যাদি। চট্টগ্রামের দামপাড়া, ঢাকার কমলাপুর থেকে খাগড়াছড়ির বাস ছাড়ে।

কোথায় থাকবেন : খাগড়াছড়ি সদরে এবং বিভিন্ন স্থানে রয়েছে আবাসিক হোটেল। এসব হোটেল অবস্থানকারীরা মুগ্ধ হবেন হোটেল কর্তৃপরে আতিথেয়তায়।

 

কুমিলার দর্শনীয় স্থান

 

লালমাই পাহাড়: লালমাই পাহাড় নিয়ে একটি গল্প প্রচলিত আছে। সেটি এরকম- লংকার রাজা রাবণ রামের স্ত্রী সীতাকে হরণ করে নিয়ে গেলে রাম তার ভাই লক্ষণকে নিয়ে উদ্ধার অভিযান চালায়। এতে লক্ষণ আহত হলে কবিরাজ বিশল্যাকরণী গাছের পাতা হিমালয় পাহাড় থেকে সূর্যোদয়ের পূর্বে এনে দেয়ার কথা বলেন। হনুমান গাছটি চিনতে না পেরে পুরো পর্বত নিয়ে আসে এবং কাজ শেষে পাহাড়টি যথাস্থানে রাখতে যাওয়ার সময় অনেকটা আনমনা হয়ে যায়। ফলে পাহাড়ের একাংশ লম লম সাগরে পড়ে যায়। হিমালয়ের সেই ভেঙ্গে পড়া অংশই বর্তমানের লালমাই পাহাড়। অবশ্যই এ নেহায়েতই গল্প। সম্পূর্ণ লাল মাটির লালমাই পাহাড়টি উত্তর-দক্ষিণে ১১ মাইল লম্বা এবং পূর্ব-পশ্চিমে ২ মাইল চওড়া। পাহাড়টির সর্বোচ্চ উচ্চতা ৫০ ফুট।

 

শালবন বিহার: শালবন বিহার বাংলাদেশের অন্যতম প্রাচীন বৌদ্ধ বিহার। কুমিল্লা নগর থেকে প্রায় ৮ কিলোমিটার পশ্চিমে শালবন বিহার অবস্থিত। সপ্তম থেকে অষ্টম শতাব্দির মাঝামাঝি সময়ে বৌদ্ধ রাজাদের শাসনামলে শালবন বিহার স্থাপিত হয়।

 

কুটিলা মুড়া: এই স্থানটি শালবন বিহার থেকে উত্তরে তিন মাইল দূরে ক্যান্টনমেন্ট অঞ্চলে অবস্থিত। খননের ফলে এখানে প্রাচীনকালের তিনটি ‘স্তূপ নিদর্শন’ আবিষ্কৃত হয়েছে।

 

চারপত্র মুড়া: এই স্থানটি কুটিলা মুড়া থেকে প্রায় ১.৫০ মাইল উত্তর পশ্চিমে ক্যান্টনমেন্ট অঞ্চলে অবস্থিত। এই পাহাড়ের শীর্ষ দেশ সমতল, আকারে ছোট এবং আশপাশের ভূমি থেকে ৩৫ ফুট উঁচু। ১৯৫৬ সালে সামরিক ঠিকাদারদের বুলডোজার ব্যবহারের ফলে পূর্ব পশ্চিমে ১০০ ফুট দীর্ঘ ও উত্তর দক্ষিণে ৫৫ ফুট প্রস্থ বিশিষ্ট একটি ছোট চতুষ্কোণ বৌদ্ধ মন্দির আবিষ্কৃত হয়।

 

যাদুঘর: শালবন বিহারের পাশেই রয়েছে যাদুঘর। এই যাদুঘরে রয়েছে দর্শনীয় সব পুরাকীর্তি এবং বিভিন্ন রাজবংশীয় ইতিহাস, ব্যবহূত তৈজসপত্র, স্বর্ণ ও রৌপ্য মুদ্রা, ব্রোঞ্জের ছোট ছোট বুদ্ধ মুর্তি, দেব-দেবির মূর্তি, পোড়া মাটির ফলকচিত্র, অলংকৃত ইট, পাথরের মূর্তি, মাটি ও তামার পাত্র, দৈনন্দিন ব্যবহার সামগ্রী- দা, কাস্তে, খুন্তি, কুঠার, ঘটি, বাটি, বিছানাপত্র ইত্যাদি। যাদুঘরের পাশে বন বিভাগ নতুন ২টি পিকনিক স্পট করেছে।

 

রূপবান মুড়া: কোটবাড়ি বার্ডের প্রধান ফটকের অদূরে (পশ্চিমে) এই স্থানটি অবস্থিত। প্রত্নতাত্ত্বিক খননকার্যের পর এখানে একটি বিহার, একটি মন্দির, একটি ক্ষুদ্র স্তূপ ও একটি উচ্চ মঞ্চের স্থাপত্য নিদর্শন উন্মোচিত হয়। এখানকার কারুকাজ খচিত প্রাচীন মন্দিরটি সত্যিই দেখার মতো। মন্দিরের অলংকৃত ইট, বিশেষ মাটির ফলকসহ নানারকম প্রত্নতাত্ত্বিক প্রমাণাদিতে বোঝা যায়, মন্দিরটি খৃষ্টীয় অষ্টম শতাব্দীর আগে নির্মিত।

 

ইটাখোলা মুড়া: কোটবাড়ি থেকে অল্প পশ্চিমে বর্ডার গার্ড ব্যাটালিয়ন (বিজিবি) ক্যাম্প বরাবর উত্তর টিলায় ইটাখোলা মুড়া অবস্থিত। আঁকাবাঁকা পাহাড়ের ঢাল বেয়ে উপরে উঠতে হয়। এখানে একটি বৌদ্ধ মূর্তি আছে। মূর্তিটির উর্ধাংশ যাদুঘরে স্থানান্তরিত হয়েছে। প্রায় সর্বদাই দর্শনার্থীদের ভিড়ে মুখরিত থাকে এ স্থানটি।

 

ময়নামতি পাহাড়: কুমিল্লা-সিলেট সড়কের বুড়িচং এলাকায় ময়নামতি পাহাড় অবস্থিত। চতুষ্কোণ এই পাহাড়টির উপরিভাগ সমতল, উচ্চতা প্রায় ৪০ ফুট। এখানকার আবিষ্কৃত স্থাপত্য নিদর্শনগুলো আনুমানিক ১২শ’ থেকে ১৩শ’ শতাব্দির মাঝামাঝি সময়ে নির্মিত বলে ধারণা করা হয়।

 

আনন্দ বিহার: ময়নামতি লালমাই পাহাড়ের অসংখ্য বৌদ্ধ স্থাপত্য কীর্তির মধ্যে আনন্দ বিহারই সর্ববৃহত্। অষ্টম শতকের দেব বংশীয় প্রভাবশালী রাজা আনন্দ দেব কর্তৃক এখানে শালবন বিহারের অনুরূপ একটি বিশাল বৌদ্ধ বিহার স্থাপিত হয়েছিল। এখানে আবিষ্কৃত সম্পদের মধ্যে মুদ্রালিপি সম্বলিত ফলক, মৃম্ময় দীপ, বৌদ্ধ দেব-দেবীর বিভিন্ন ব্রোঞ্জের মূর্তি, মৃত্ পাত্র ও গুটিকা ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য।

 

চিড়িয়াখানা: জেলা প্রশাসকের বাংলোর পাশে চিড়িয়াখানা ও বোটানিক্যাল গার্ডেনের অবস্থান। প্রতিদিন দূর-দূরান্ত থেকে দর্শনার্থীরা এসে ভিড় জমান সেখানে।

 

চণ্ডিমুড়া মন্দির: কুমিল্লা শহর থেকে প্রায় ১২ কিলোমিটার দক্ষিণে জেলার লাকসাম-বরুড়া-সদর উপজেলার ত্রিমুখী মিলনস্থলে পাহাড়চূড়ায় ২ একর ৬৮ শতক জায়গাজুড়ে চণ্ডি ও শিব নামক দুটি মন্দির অবস্থিত। চণ্ডিমন্দিরের নামানুসারে এলাকাটি চণ্ডিমুড়া হিসেবে পরিচিত। এর অদূরেই রয়েছে দুতিয়া দিঘী। মন্দিরকে ঘিরে প্রতি বছর তিনটি উত্সব অনুষ্ঠিত হয়। এতে ভারতসহ বিভিন্ন স্থানের অসংখ্য ভক্ত-দর্শনার্থীর সমাগম ঘটে।

 

ময়নামতি ওয়ার সিমেট্রি: কুমিল্লা নগর থেকে ৮ কিলোমিটার পশ্চিমে কুমিল্লা-সিলেট মহাসড়কের পশ্চিম পাশে ছায়াঘেরা স্নিগ্ধ নৈসর্গিক পরিবেশে অবস্থিত ‘ময়নামতি ওয়ার সিমেট্রি’। ১৯৩৯ থেকে ১৯৪৫ সাল পর্যন্ত দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় নিহত ব্রিটিশ, কানাডিয়ান, অস্ট্রেলিয়ান, আফ্রিকান, জাপানী, আমেরিকান, ভারতীয় ও নিউজিল্যান্ডের ৭৩৭ জন সৈন্যের সমাধিস্থল এটি। সকাল ৭টা-১২টা এবং ১টা-৫টা পর্যন্ত এখানে প্রবেশের সুযোগ পাবেন।

 

দীঘির জেলা কুমিল্লা: ছোট-বড় অসংখ্য দীঘি রয়েছে কুমিল্লায়। এর মধ্যে নানুয়ার দীঘি, উজির দীঘি, লাউয়ার দীঘি, রাণীর দীঘি, আনন্দ রাজার দীঘি, ভোজ রাজার দীঘি, ধর্মসাগর, কৃষ্ণসাগর, কাজির দীঘি, দুতিয়ার দীঘি, শিবের দীঘি ও জগন্নাথ দীঘির নাম উল্লেখযোগ্য।

 

ধর্মসাগর: নগরীর বাদুরতলায় ধর্মসাগর দীঘি অবস্থিত। এর আয়তন ২৩.১৮ একর। ত্রিপুরা রাজ্যের রাজা ধর্মমাণিক্য ১৪৫৮ খ্রিস্টাব্দে দীঘিটি খনন করেন। এর উত্তরপাড়ে রয়েছে কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশনের আওতাধীন কুমিল্লা নগর পার্ক। ৫ একর জায়গাজুড়ে এই পার্ক বিস্তৃত। এর উত্তর পূর্ব কোণে রয়েছে রাণী কুটির এবং একটি শিশু পার্ক ও নজরুল একাডেমী। ধর্মসাগরে আপনি নৌকায়ও ভ্রমণ করতে পারবেন।

 

মহাত্মা গান্ধী ও রবীঠাকুরের স্মৃতি বিজরিত অভয় আশ্রম: নগরীর প্রাণকেন্দ্র লাকসাম রোডে আড়াই একর জমির উপর অভয় আশ্রমের অবস্থান। এখানে মহাত্মা গান্ধী ছাড়াও কবি গুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, সীমান্ত গান্ধী, আবদুল গাফফার খান, মোহাম্মদ আলী জিন্নাহসহ বহু গুণীজনের আগমন ঘটেছিল। এই আশ্রমে থাকা দরিদ্র মানুষেরা খাদি তৈরি করে জীবিকা নির্বাহ করতো।

 

কবি নজরুল স্মৃতি: কুমিল্লা নগরে দেখে যেতে পারেন জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের স্মৃতিবিজড়িত অনেক দর্শনীয় স্থান। কবি নজরুলের স্মৃতিধন্য কবিতীর্থ দৌলতপুর দেখতে যেতে পারেন মুরাদনগরে। এখানে নার্গিসের সাথে তার বিয়ে হয়। কুমিল্লা ও দৌলতপুরে অনেক কবিতা ও গান রচনা করেছেন কাজী নজরুল।

 

শাহ সুজা মসজিদ: কুমিল্লা মহানগরীর মোগলটুলিতে অবস্থিত শাহ সুজা মসজিদ। সম্রাট আওরঙ্গজেবের ভাই শাহজাদা সুজার নামানুসারে এই মসজিদের নাম রাখা হয়েছে। এতে গম্বুজের সংখ্যা ৩টি, মিনার ৬টি, দৈর্ঘ্য ৫৮ ফুট, প্রস্থ ২৮ ফুট। দেয়ালের পুরুত্ব ৫-৮ ইঞ্চি।

 

রাজেশপুর ইকো পার্ক: জেলার সদর দক্ষিণ উপজেলার পূর্ব জোড়কানন এলাকা থেকে সড়কপথে রাজেশপুর ইকো পার্কে যাওয়া যায়। এর আয়তন ৫৮৭ দশমিক ৮৯ একর। এই ইকো পার্কে রয়েছে নানা প্রজাতির গাছপালা, পশু-পাখি। পিকনিক স্পট হিসাবে এ পার্ক স্বচ্ছন্দে বেছে নিতে পারেন।

 

নূরজাহান ইকো পার্ক: কুমিল্লা মহানগরীর ইপিজেডের পূর্বপার্শ্বে নেউরা এলাকায় ৬৪০ শতক জমিতে নূরজাহান ইকো পার্ক স্থাপন করেন মো. আবদুর রাজ্জাক। সম্পূর্ণ গ্রামীণ আর বাংলার লোকজ ঐতিহ্য নিয়ে তৈরি হয়েছে নূরজাহান ইকো পার্ক। সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা রয়েছে এখানে। পার্ক অভ্যন্তরে পুকুরে জলপরির নান্দনিক মূর্তি যে কাউকে আকৃষ্ট করে। এতে প্রবেশ ফি ২০ টাকা। সকাল ৮টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ঘুরে আসতে পারেন প্রিয়জনকে সাথে নিয়ে।

 

জামবাড়ি: কুমিল্লা নগরীর প্রায় ৪ কিলোমিটার উত্তরে জামবাড়ির অবস্থান। এখানে এলে প্রকৃতির নিবিড় ছায়ায় হারিয়ে যেতে চাইবে আপনার মন। পাখ-পাখালীর কিচির-মিচির শব্দে মুখরিত গোটা জামবাড়ি এলাকা। কয়েক বর্গমাইল বিস্তৃত এই এলাকায় রয়েছে ছোট-বড় কয়েকটি উঁচু-নিচু ঢিবি। নয়নাভিরাম জামবাড়ি এলাকা নাটক ও চলচ্চিত্রের শুটিং-এর জন্য নির্মাতাদের অন্যতম পছন্দের স্থান।

 

কোটবাড়ি বার্ড: ১৯৫৯ সালে বাংলাদেশ পল্লী উন্নয়ন একাডেমী (বার্ড) প্রতিষ্ঠা করেন ড. আখতার হামিদ খান। বার্ডের অভ্যন্তরে প্রবেশ করতে ফি লাগে না, তবে অনুমতি নিতে হবে। বার্ডের ভেতরের সুন্দর রাস্তা দিয়ে সামনে এগুলেই দুই পাহাড়ের মাঝখানে দেখতে পাবেন অনিন্দ্য সুন্দর বনকুটির। কুমিল্লায় আসলে বার্ডের এই সুন্দর এলাকাটি ঘুরে দেখতে ভুল করবেন না যেন।

 

নীলাচল পাহাড়: বার্ডের ভিতরে রয়েছে নীলাচল পাহাড়। নির্জন প্রকৃতির এক অকৃত্রিম ভাললাগার জায়গা হচ্ছে নীলাচল।

ভাষা সৈনিকের বাড়ি: নগরীর ধর্মসাগরের পশ্চিম পাড়ে আপনি ভাষা সৈনিক ধীরেন্দ্রনাথ দত্তের স্মৃতিবহুল বাড়িটি দেখে যেতে ভুলবেন না। ১৯৪৮ সালে ধীরেন্দ্রনাথ দত্তই সর্বপ্রথম আমাদের মাতৃভাষা বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করার জন্য কংগ্রেসের পক্ষ থেকে গণপরিষদে আহ্বান জানান। ১৯৭১ সালে পাক হানাদাররা তাঁকে নির্মমভাবে হত্যা করে।

 

ত্রিশ আউলিয়ার মাজার: হযরহ শাহ্ জালালের সফরসঙ্গী শাহ্ জামালসহ মোট ৩০ জন আউলিয়ার মাজার রয়েছে দেবিদ্বারের এলাহাবাদ গ্রামে। এখানে অবস্থিত কবরগুলো প্রায় ৭শ’ বছরের পুরানো। এখানে ত্রিশটি কবর আছে।

 

৭০০ বছরের প্রাচীন মসজিদ: দেশের সবচেয়ে প্রাচীন মসজিদটি বুড়িচং উপজেলার ভারেল্লা গ্রামে অবস্থিত। প্রায় ৭শ’ বছরের পুরানো এ মসজিদ। মুসল্লিরা এখনও এ মসজিদে নামাজ আদায় করেন।

 

রাণীর বাংলো: কুমিল্লা-সিলেট রোডের কুমিল্লার বুড়িচংয়ের সাহেববাজারে রাণীর বাংলো অবস্থিত। সেখানে এখনও খনন কাজ চলছে। এখানকার দেয়ালটি উত্তর-দক্ষিণে ৫১০ ফুট লম্বা ও ৪০০ ফুট চওড়া। সেখানে স্বর্ণ ও পিতলের দ্রবাদি পাওয়া গেছে।

 

নবাব ফয়জুন্নেছার বাড়ি: লাকসামের পশ্চিমগাঁওয়ে ডাকাতিয়া নদীর তীরে দেখে আসুন নারী জাগরণের পথিকৃত্ নবাব ফয়জুন্নেছার (১৮৩৪-১৯০৩) বাড়ি। তিনি ছিলেন হোমনাবাদের জমিদার। এখানে ঐতিহ্যবাহী দশ গম্বুজ মসজিদও রয়েছে। ফেরার সময় দেশের অন্যতম লাকসাম রেলওয়ে জংশন দেখে যেতে পারেন।

 

নদীর নাম গোমতী: কুমিল্লাবাসীর সুখ-দুঃখের সাথী গোমতী নদী। এটি ভারত থেকে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। নগরীর পাশে বানাশুয়া বা চাঁন্দপুর ব্রিজে গিয়ে গোমতীর সৌন্দর্য উপভোগ করতে পারেন।

 

কেটিসিসি পর্যটন কেন্দ্র: কুমিল্লা সদর উপজেলা পরিষদের পাশে অবস্থিত কেটিটিসির পর্যটন কেন্দ্র। এখানে শিশুদের জন্য রয়েছে চমত্কার একটি পার্ক। এছাড়া নগরীর চর্থায় দেখে যেতে পারেন উপ-মহাদেশের সঙ্গীত সম্রাট শচীন দেব বর্মণের বাড়ি। বাগিচাগাঁওয়ে রয়েছে বৃটিশ খেদাও আন্দোলনের অন্যতম নেতা অতীন রায়ের বাড়ি। দেখতে পারেন কুমিল্লা পৌর পার্ক, চিড়িয়াখানা ও শতবর্ষী কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজ।

 

বিখ্যাত খাবারের নাম: রসমালাই: কুমিল্লার রসমালাইয়ের খ্যাতি বিশ্বজোড়া। মনোহরপুরের মাতৃভান্ডার এবং শীতল ভান্ডারের রসমালাই, পেড়া ভান্ডারের সুস্বাদু পেড়া আর কান্দিরপাড়ের জলযোগের স্পঞ্জ মিষ্টি আপনার রসনা তৃপ্ত করবে একথা নির্দ্বিধায় বলা যায়।

কুমিল্লার খদ্দর: কুমিল্লায় এসে ঐতিহ্যবাহী খদ্দর কিনতে ভুলবেন না কিন্তু। নিজের ও প্রিয়জনের জন্য কিনে নিতে পারেন কুমিল্লার খদ্দরের রকমারি পোশাক আর কুমিল্লা সিল্ক।

নদী সমূহ: মেঘনা, গোমতী।

 

যেভাবে যাবেন, ঢাকা, চট্টগ্রাম, সিলেট বা দেশের যে কোন জেলা থেকে কুমিল্লা যেতে আপনি রেলপথ বা সড়কপথের যে কোনটি বেছে নিতে পারেন। কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন থেকে ট্রেনে যেতে পারেন অথবা ঢাকার সায়েদাবাদ থেকে বাসেও যেতে পারেন। সড়কপথে এবং রেলপথে খুব সহজেই কুমিলা যাওয়া যায়। এশিয়ালাইন, তিশা, প্রিন্স, প্রাইম, ইত্যাদি বাস চলাচল করে।

 

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার দর্শনীয় স্থান

 

উলচাপড়া মসজিদ, বৌদ্ধ মন্দির (দেবগ্রাম), কৈলাগড় জাঙ্গাল, নবীনগর মঠ, হরিপুর জমিদারবাড়ি

 

ধরন্তী নৌকাঘাট: দুই পাশে বিলের মাঝখান দিয়ে সড়ক। সন্ধ্যায় সূর্য ডোবা দেখতে অনেক লোক ভিড় করে। স্থানীয়রা বলে সরাইলের কঙ্বাজার। ঈদ, দশমী বা পহেলা বৈশাখের মতো উৎসবে এখানে লোক উপচে পড়ে। রেলস্টেশন থেকে সরাইল যাওয়া যায় অটোরিকশায়। ভাড়া জনপ্রতি ৪০ টাকা।

নদী সমূহ মেঘনা, তিতাস, বুড়ি এবং হাওড়া।

 

চাদপুরের দর্শনীয় স্থান

 

সাহারপারের দিঘী, রহিমানগর, কচুয়া, চাঁদপুর।

সাহেবগঞ্জ নীল কুঠি,সাহেবগঞ্জ, ফরিদগঞ্জ, চাঁদপুর। , সাহেবগঞ্জ ফিরিঙ্গী গোলন্দাজ বণিকেরা নীল চাষের খামার হিসেবে একটি ব্যবসা কেন্দ্র ও শহর গড়ে তুলেছিল।

 

রূপসা জমিদার বাড়ী,রূপসা, ফরিদগঞ্জ, চাঁদপুর।

তিন গম্বুজ মসজিদ ও প্রাচীন কবর, ভিঙ্গুলিয়া, হাইমচর, চাঁদপুর।

বলাখাল জমিদার বাড়ী, হাজীগঞ্জ, চাঁদপুর।

হজরত রাস্তি শাহ (রহ.)-এর মাজার।

 

বড়োস্টেশন: পদ্মা, মেঘনা ও ডাকাতিয়া নদী মিলেছে চাঁদপুরের বড়োস্টেশনে। জেলা শহরের পশ্চিম প্রান্তে জায়গাটি। নদী দেখার জন্য এত সুন্দর জায়গা দেশে বেশি নেই। এখানে গাছের ছায়ায় সিমেন্ট বাঁধানো বসার জায়গা আছে। মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের স্মরণে এখানে ‘রক্তধারা’ নামে একটি স্মৃতিসৌধ নির্মাণ করা হয়েছে। হালকা খাবারের জন্য কয়েকটি দোকান আছে। ঢাকার সদরঘাট থেকে মেঘনারানী, ময়ূর, বোগদাদীয়াসহ বেশ কিছু লঞ্চে চাঁদপুরে যাওয়া যায়। ভাড়া ১৫০ টাকা। কেবিন ৪০০ টাকা। লঞ্চ থেকে নামার পর বড়োস্টেশন

 

মেহার কালীবাড়ি

নীপার বাড়ি

অন্যান্য দর্শনীয় স্থান

হাজীগঞ্জ বড় মসজিদ, সুজা মসজিদ,

আলমগিরি মসজিদ, মতলবের কালীমন্দির, সাহেবগঞ্জের নীলকুঠি

নদী সমূহ: মেঘনা, ডাকাতিয়া, ধনাগোদা, গোমতী।

যেভাবে যাবেন:  ঢাকার সদরঘাট থেকে মেঘনারানী, ময়ূর, বোগদাদীয়াসহ বেশ কিছু লঞ্চে চাঁদপুরে যাওয়া যায়। আসনভাড়া ১৫০ টাকা, কেবিন ৪০০ টাকা।

 

কক্সবাজারের দর্শনীয় স্থান

 

এখানে রয়েছে বিশ্বের দীর্ঘতম কক্সবাজার সমুদ্রসৈকত। রয়েছে প্রবাল পাথরের ও স্বচ্ছ জলধারার ছোট দ্বীপ সেন্টমার্টিন। পাহাড়ি ঝরনা থেকে শীতল পানি প্রবাহের স্থান হিমছড়ি, বাংলাদেশের শেষ ভূখণ্ড এবং শেষ জলসীমা টেকনাফ, হরেক রকম রঙবেরঙের পাথর বেষ্টিত ইনানী সৈকত, ৯ হেক্টর অরণ্যজুড়ে গঠিত দুলাহাজরা সাফারি পার্ক, বাংলাদেশের একমাত্র পাহাড়ি দ্বীপ মহেশখালী, বাতিঘর কুতুবদিয়া, এখানে রয়েছে অসংখ্য বৌদ্ধ মূর্তি সমৃদ্ধ দরিয়ানগর, রহস্যময় কানারাজার সুড়ঙ্গ, বৌদ্ধধর্মের স্মৃতি বহনকারী রামু জাদুঘর।  দরিয়ারনগর পর্যটন কেন্দ্র, হিমছড়ী ঝর্ণা, ইনানী পাথুরে সৈকত ও মহেশখালী আদিনাথ মন্দির।

 

লোহাগাড়ার বন-পাহাড়: অভয়ারণ্যঃ জীব বৈচিত্র্য সমৃদ্ধ বনাঞ্চল নিয়ে গঠিত চুনতি বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য প্রকৃতির অপরূপ লীলাভূমি। চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ক ঘেঁষে বিশাল এলাকা নিয়ে এ অবস্থান। এই অভয়ারণ্যে প্রচুর হাতি, বন্য শুকর, বানর, হনুমান, মায়া হরিণ, সাম্বার, বিভিন্ন দুর্লভ প্রজাতির পাখি রয়েছে। ১৯৮৬ সালে ৭টি সংরক্ষিত বনভূমি নিয়ে এটি প্রতিষ্ঠিত হয়। ইতিমধ্যে সরকারি-বেসরকারিভাবে নয়নাভিরাম পাহাড়ের ঢালে স্থাপিত হয়েছে রেস্ট হাউজ ও ডাকবাংলো। পর্যটকদের কাছে বিশেষ আকর্ষণ হতে পারে অভয়ারণ্য এলাকায় পুকুর, গর্জনের বন, গয়ালমারা প্রাকৃতিক হরদ, বনপুকুর ফুটট্রেইল, জাংগালীয়া ফুটট্রেইল, পর্যটন টাওয়ার, গোলঘর, স্টুডেন্ট ডরমেটরি, নেচার কনজারভেশন সেন্টার, গবেষণা কেন্দ্রসহ নানা কিছু। অভয়ারণ্যের সহ-ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্যরা জানান এটিকে আধুনিক পর্যটন কেন্দ্র গড়ার জন্য ইকোট্যুরিজমের কিছু বিশেষ আকর্ষণ বিশেষ করে পর্যটন অবকাঠামো তৈরি করা হলে এটি দেশের অন্যতম ইকোপার্কে পরিণত হবে। এতে সরকারের কোটি কোটি টাকা আয় হবে।

 

পদুয়া ফরেস্ট রেঞ্জ: উপজেলার পদুয়া ফরেস্ট রেঞ্জ অফিসের চারদিক ঘিরে রয়েছে সারি সারি বৃক্ষরাজি। বিশাল এই এলাকাটি সম্ভাবনাময় একটি পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে উঠতে পারে। লোহাগাড়া বন বিভাগের অধীনে ১১শ’ হেক্টর জমির মধ্যে পদুয়া ফরেস্ট রেঞ্জ অফিসের চারপাশে প্রায় ৩ হাজার একর জায়গাজুড়ে অবস্থিত এই বনাঞ্চলে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য যে কাউকে মুগ্ধ করবে। চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের বারআউলিয়া এলাকার সামান্য পূর্বদিকে উপজেলা হাসপাতালের কাছেই এর অবস্থান। বনটির জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণসহ ইকোপার্ক সৃষ্টির উদ্যোগ নেয়া হলে এই এলাকাটি দেশি-বিদেশি পর্যটকদের কাছে আরো আরো আকর্ষণীয় হয়ে উঠবে। উপজেলা চেয়ারম্যান জিয়াউল হক চৌধুরী বাবুলও জানালেন সেই কথা। তিনি দুঃখ করে বললেন, পর্যটনের বিপুল সম্ভাবনা থাকা সত্ত্বেও আজ পর্যন্ত সেখানে স্বয়ংসম্পূর্ণ কোন পর্যটন কেন্দ্র স্থাপিত হয়নি। উপজেলায় চুনতিসহ এমন কিছু এলাকা আছে যেগুলোকে সহজেই পর্যটন কেন্দ্রে রূপান্তর করা যেতে পারে। এতে পর্যটকের সংখ্যা বৃদ্ধি পাবে, সরকারেরও কোটি কোটি টাকা আয় হবে।

 

ফাসিয়াখালী বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য: বাংলাদেশের যে কয়টি বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য আছে সেগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য একটি হলো ফাসিয়াখালী। পর্যটন শহর কক্সবাজার থেকে প্রায় চল্লিশ কিলোমিটার উত্তরে চকোরিয়া উপজেলায় এ বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্যটির অবস্থান। আয়তনে খুব একটা বড় না হলেও এ অভয়ারণ্যের সর্বত্র জীব বৈচিত্র্যে ভরপুর। কক্সবাজার উত্তর বন বিভাগের চকোরিয়া এলাকার ফাসিয়াখালী রেঞ্জের অধীন এ বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্যটি।

গ্রীষ্মমণ্ডলীয় চিরসবুজ এ বনাঞ্চলের প্রধান বৃক্ষ গর্জন। জঙ্গলের যে দিকেই চোখ যায় বিশাল বিশাল আকাশচুম্বী গর্জন গাছের দেখা মেলে। নানান গাছপালা আছে এ বনে। এসবের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো সেগুন, শাল, বট, আকাশমণি, হারগোজা, হরিতকি, চাঁপালিশ, বহেরা, বাঁশ প্রভৃতি।

এশিয়ান হাতিসহ নানান প্রাণীরা অবাধ বিচরণ করে ফাসিয়াখালী বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্যে। বাংলাদেশের অতি বিপন্ন একটি বন্যপ্রাণী উল্লুক এ বনে কদাচিত্ দেখা মেলে। এ ছাড়াও এ জঙ্গলে সাধারণত দেখা মেলে লাল মুখ বানর, মুখপোড়া হনুমান, সজারু, খেঁকশিয়াল, মায়াহরিণ, বন্যশুকর, শিয়াল ইত্যাদি।

 

বঙ্গবন্ধু সাফারী পার্ক: ঢাকা বা চট্টগ্রাম থেকে সড়ক পথে কক্সবাজারে আসার পথে কক্সবাজার শহরের প্রায় ৪৬ কিলোমিটার আগে রয়েছে দেশের একমাত্র বঙ্গবন্ধু সাফারী পার্ক। এই সাফারী পার্কে রয়েছে বাঘ, সিংহ, হাতিসহ বিভিন্ন প্রাণী। রয়েছে সুদৃশ্য লেক এবং পর্যবেক্ষণ টাওয়ার। কক্সবাজার শহরে আসার পথে অথবা ফেরার পথে দেখে নেয়া যেতে পারে পার্কটি। এছাড়া রামুতে রয়েছে ঐতিহাসিক লামারপাড়া ক্যাং, রামকোট বৌদ্ধ ও হিন্দু মন্দির, রাবারবাগান, দেশের সর্ববৃহত্ বুদ্ধমূর্তির বিদর্শন বিমুক্তি ভাবনা কেন্দ্র এবং রামুর অদূরে নাইক্ষ্যংছড়ী লেক। সাফারী পার্কের অদূরে পার্বত্য লামায় রয়েছে মেরেঞ্জা পর্যটন কেন্দ্র। কক্সবাজারে আসা যাওয়ার পথে বান্দরবানের বিভিন্ন পর্যটন স্পটও দেখে নেয়া যেতে পারে।

বিখ্যাত খাবারের নামপৌশির ভর্তা আইটেম, নিরিবিলির খিচুড়ি

নদী সমূহ: নাফ ণদী।

যেভাবে যাবেন, ঢাকা এবং চট্টগ্রাম থেকে খুব সহজেই বাসে করে কক্সবাজার যাওয়া যায়। রয়েছে এস আলম, সৌদিয়া, সোহাগ, গ্রিনল্যান্ড, টোকিও লাইন, শ্যামলী, গ্রিনলাইন ইত্যাদি।

 

নোয়াখালীর দর্শনীয় স্থান

 

বাংলাদেশের দক্ষিণে মেঘনা ও বঙ্গোপসাগরের মোহনায় অবস্থিত চট্টগ্রাম বিভাগের একটি সুপ্রাচীন জনপদ নোয়াখালী জেলা।

 

নিঝুম দ্বীপ: বঙ্গোপসাগরের মোহনায় নোয়াখালীর সর্বদক্ষিণের উপজেলা হাতিয়ায় এ দ্বীপ। মেঘনা এখানে সাগরে পড়েছে। চারটি প্রধান দ্বীপ ও কয়েকটি চরের সমষ্টি নিঝুম দ্বীপ। কেওড়ার বন আছে এখানে। বনে হরিণ আছে অনেক। বন বিভাগের বিশ্রামাগার আছে দ্বীপে। ঢাকার সদরঘাট থেকে এমভি খিজির প্রতিদিন সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় হাতিয়ার উদ্দেশে যাত্রা করে। ডেকে ভাড়া ২৩০ টাকা, কেবিন ১২০০ টাকা। হাতিয়ার নলচিরি থেকে সিএনজি অথবা বাসে চেপে জাহাজমারা পর্যন্ত যাওয়া যায়। ভাড়া ৪০ টাকা। তারপর নদী পার হলে নিঝুম দ্বীপ।

 

বজরা শাহি জামে মসজিদ: বেগমগঞ্জ উপজেলা সদর থেকে ৮ কিলোমিটার উত্তরে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেঙ্রে পাশে এ মসজিদ দিলি্লর শাহি জামে মসজিদের অনুকরণে নির্মিত। লোকমুখে জানা যায়, দিলি্লর সম্রাট বাহাদুর শাহ বেগমগঞ্জের বজরা অঞ্চলের জমিদারি দান করেছিলেন দুই সহোদর আমান উল্যা ও ছানা উল্যাকে। তাঁরা একটি দিঘি খনন ও মসজিদ নির্মাণের জন্য ১০০ একর জমির বন্দোবস্ত দেন। মসজিদটি মার্বেল পাথরে তৈরি। দিঘিটি আছে মসজিদের সম্মুখভাগেই। মসজিদের প্রধান ফটকের দুই পাশে দুটি দেয়ালঘড়ি আছে। ঢাকার সায়েদাবাদ থেকে একুশ, বিলাসসহ বেশ কিছু পরিবহনের গাড়িতে সোনাইমুড়ী যাওয়া যায়। ভাড়া ৩০০ টাকা। সোনাইমুড়ী-বেগমগঞ্জ সড়কে বজরা রাস্তার পাশেই মসজিদটি।

 

এছাড়াও দৃষ্টি নন্দন  সোনাপুরে লুর্দের রাণীর গীর্জা, উপমহাদেশ খ্যাত সোনাইমুড়ির জয়াগে অবস্থিত গান্ধি আশ্রম, নোয়াখালীর উপকূলে নতুন জেগে উঠা চরে বন বিভাগের সৃজনকৃত ম্যানগ্রোভ বনাঞ্চল, মাইজদী শহরে অবস্থিত নোয়াখালী জেলা জামে মসজিদ , নোয়াখালী কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার, মাইজদী বড় দীঘি, কমলা রাণীর দীঘি।

যেভাবে যাবেন, নোয়াখালী জেলায় যাতায়তের জন্য সড়ক ও রেল– এ দু’ধরণের যোগাযোগ ব্যবস্হা চালু রয়েছে। তবে সড়ক যোগাযোগই প্রধান । এস আলম, সৌদিয়া, সোহাগ, কেয়া পরিবহন, শ্যামলী, গ্রিনলাইন ইত্যাদি।

বিখ্যাত খাবারের নামনোয়াখালীর নারকেল নাড়– ও ম্যাড়া পিঠা,

নদী সমূহ :বামনী ও মেঘনা।

 

ফেনীর দর্শনীয় স্থান

 

ফেনতে রয়েছে দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম এই সেচ প্রকল্প সোনাগাজী মুহুরী সেচ প্রকল্প। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর মুহুরী রেগুলেটরের চারদিকে বাঁধ দিয়ে ঘেরা কৃত্রিম জলরাশি,বনায়ন,মাছের অভয়ারণ্য, পাখির কলকাকলি,বাঁধের দুপাশে নীচ থেকে পাথর দিয়ে বাঁধানো এবং উপরদিকে দুর্বা ঘাসের পরিপাটি বিছানা। মুহুরীর জলরাশিতে নৌভ্রমণের সময় খুব কাছ থেকে বিভিন্ন প্রজাতির হাঁস এবং প্রায় ৫০ জাতের হাজার হাজার পাখির দেখা পাওয়া যায় ।

 

এছাড়া পাগলা মিঞাঁর মাজার: শিলুয়ার শীল পাথরঃরাজাঝীর দীঘিঃবিজয় সিংহ দীঘিঃ

নদী সমূহ ফেনী, ছোট ফেনী, মুহুরী।

যেভাবে যাবেন : ঢাকা থেকে খুব সহজেই বাসে এবং রেলে করে ফেনী যাওয়া যায়। বাস সাভির্স এস আলম, সৌদিয়া, সোহাগ, কেয়া পরিবহন, শ্যামলী, গ্রিনলাইন ইত্যাদি।

 

লক্ষীপুর দর্শনীয় স্থান

 

তিতা খান জামে মসজিদ, মিতা খান মসজিদ, মধু বানু মসজিদ, দায়েম শাহ মসজিদ, আব্দুল্লাহপুর জামে মসজিদ, শাহাপুর নীল কুঠি, শাহাপুর সাহেব বাড়ী , দালাল বাজার জমিদার বাড়ী, শ্রীগোবিন্দ মহাপ্রভু আখড়া, দালাল বাজার মঠ, খেয়া-সাগর-দীঘি, কমলা সুন্দরী দীঘি, রামগঞ্জের শ্রীরামপুর রাজবাড়ী, শ্যামপুর দরগা শরিফ, কচুয়া দরগা, কাঞ্চনপুর দরগা ইত্যাদি।

নদী সমূহ মেঘনা নদী, , দৌলতখাঁ, ভোলা, ডাকাতিয়া।

 

সিলেট বিভাগ

 

সিলেটকে বলা হয় পুণ্যভূমি। চায়ের রাজধানীও সিলেট। এই ছুটিতে সিলেট গিয়ে উপভোগ করুন সৌন্দর্য।

 

সিলেটের দর্শনীয় স্থান:

হজরত শাহজালাল (র.) এর মাজার: সিলেট শহরের কোর্ট পয়েন্ট থেকে উত্তরে জিন্দাবাজার ছাড়িয়ে কিছুটা উত্তরে এ মহান আউলিয়ার মাজার। প্রধান গেট ছাড়িয়ে একটু ভেতরে গেলেই মাজার কমপেক্স। প্রথমেই চোখে পড়বে দরগাহ মসজিদ।

 

হজরত শাহ পরান (র.) মাজার: সিলেটে আরেক পুণ্যভূমি হজরত শাহজালাল (র.) এর ভাগ্নে হজরত শাহ পরানের মাজার। শহর থেকে প্রায় দশ কিলোমিটার পূর্ব দিকে দণি গাছের খাদিম পাড়ায় রয়েছে এ মহান ব্যক্তির মাজার।

 

লাকাতুরা চা বাগান সিলেট শহর থেকে এয়ারপোর্ট রোড ধরে কিছু দূর এগুলেই দেখা যাবে এ চা বাগানটি। চা বাগানটি ঘুরে ভালো লাগার আবেশে মনটা ভরে যাবে কম বেশি সবার।

 

ক্বিন ব্রিজ: হযরত শাহজালাল (র)-এর সমাধি থেকে ২৫-৩০ টাকা রিকশা ভাড়ার দূরত্বে ক্বিন ব্রিজ। সুরমা ব্রিজ নামেও এটি বেশ পরিচিত। ১৯৩৬ সালে নির্মাণ করা হয় এটি। তত্কালীন ইংরেজ গভর্নর মাইকেল ক্বিনের নামেই এর নাম করণ হয়। ১১৫০ ফিট লম্বা এবং ১৮ ফিট প্রস্থ এ ব্রিজটি দেখতে ধনুকের মতো বাঁকানো। আলী আমজাদের ঘড়িঘর ক্বিন ব্রিজ থেকে নিচে তাকালেই চোখে পড়ে একটি ঘড়িঘর। ব্রিজের পাশে চাঁদনীঘাটে অবস্থিত এ ঘড়িঘরটি আজও দাঁড়িয়ে আছে ইতিহাসের সাক্ষী হয়ে। জানা যায়, পৃথ্বিমপাশার বিখ্যাত জমিদার আলী আমজাদ খাঁ দিল্লির চাঁদনীচকে শাহজাদী জাহানারা কর্তৃক নির্মিত ঘড়িঘর দেখে মুগ্ধ হন।

 

মনিপুরী জাদুঘর: শহরের সুবিদবাজার এলাকায় একটি ভাড়া বাড়িতে প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে এ জাদুঘর। বৃহত্তর সিলেট অঞ্চলে বসবাসরত আদিবাসী সম্প্রদায় মনিপুরীদের শত বছরের কৃষ্টি আর ঐতিহ্য তুলে ধরা হয়েছে এ জাদুঘরের মাধ্যমে। এ জাদুঘরে দেখা মিলবে কয়েকশ বছরের পুরোনো ঘণ্টা, ধর্মীয় অনুষ্ঠানে ব্যবহূত নানান দ্রব্যসামগ্রী, যুদ্ধে ব্যবহূত সরঞ্জাম, মণিপুরীদের ঐতিহ্যবাহী হস্তশিল্প সামগ্রীসহ আরও অনেক কিছু।

 

ওসমানী স্মৃতি জাদুঘর: সিলেট শহরের কোর্ট পয়েন্টের কাছে নাইওরপুলে রয়েছে মুক্তিযুদ্ধের সর্বাধিনায়ক আতাউল গনি ওসমানীর বাস ভবন ‘নূর মঞ্জিল’। বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘরের পরিচালনায় এ ঘরে বসেছে ওসমানী স্মৃতি জাদুঘর। এ জাদুঘর খোলা থাকে এপ্রিল থেকে সেপ্টেম্বর সকাল ১০টা ৩০ মিনিট থেকে বিকাল ৫টা ৩০ মিনিট পর্যন্ত এবং অক্টোবর থেকে মার্চ সকাল ৯টা ৩০ মিনিটি থেকে বিকাল ৪টা ৩০ মিনিট পর্যন্ত। শুক্রবার খোলা থাকে বিকেল ৩টা ৩০ মিনিট থেকে সন্ধ্যা ৭টা ৩০ মিনিট পর্যন্ত। বৃহস্পতিবার এবং অন্যান্য সরকারি ছুটির দিনে জাতীয় জাদুঘর বন্ধ থাকে। এ জাদুঘরের কোনো প্রবেশ মূল্য নেই।

 

মালনিছড়া চা বাগান: শহর ছেড়ে বিমানবন্দরের দিকে একটু এগোলেই হাতের বাম পাশে সুন্দর এ চা বাগানটিই বাংলাদেশের সবচেয়ে পুরোনো চা বাগান। ইংরেজ সাহেব হার্ডসনের হাত ধরে ১৮৫৪ সালে এ চা বাগানের প্রতিষ্ঠা। মালনিছড়ায় চা বাগানের ভেতরে ঘুরে বেড়ানোর মজাটাই আলাদা। অনুমতি নিয়ে চা বাগানের কোনো কর্মচারীর সহায়তায় ঘুরে দেখা যেতে পারে বাগানটি। মালনিছড়া চা বাগানের মধ্যে একটি কমলালেবুর বাগানও আছে।

বন রাতারগুল :  সৌন্দর্য ও সারল্যে মিলেমিশে আছে রাতারগুল সোয়াম্প ফরেস্ট। যা কি-না দেশের একমাত্র জলজ বন। রাতারগুল যেতে বিস্তীর্ণ গ্রাম্য প্রান্তর। রাতারগুল বনঘেঁষা পাহাড়ি সৌন্দর্য আপনাকে আবেগপ্লুত করবে, প্রাণে দোলা দেবে আর মন ভরিয়ে দেবে সতেজতায়। এখানে প্রকৃতি অকৃপণ। তার যাবতীয় ভালোবাসা সে উজাড় করে দিয়েছে। বনের ভেতর যেতে হয় চিরিঙ্গি বিল পার হয়ে। চিরিঙ্গি বিল আর তার বুকজুড়ে বয়ে চলা বিভিন্ন ধরনের নৌকা।

বিখ্যাত খাবারের নামসিলেটের সাতকড়ার আচার, সিলেটে উন্দাল এর স্পেশাল ভেজিটেবল, সিলেটের পাঁচলেয়ার চা, সিলেটের চুঙ্গাপুড়া।

নদী সমূহ: সুরমা, কুশিয়ারা।

যেভাবে যাবেন, সিলেট যেতে হলে আপনি ঢাকা শহরের যেকোনো জায়গা থেকে গাড়ি ছাড়ে। তবে গ্রিন লাইন, সোহাগ, হানিফ, আলবারাকা, শ্যামলীসহ অনেক বাস প্রতিদিন ঢাকা থেকে সিলেটের উদ্দেশে রওনা করে।

 

জাফলং-এর দর্শনীয় স্থান

 

সিলেট শহর থেকে জাফলং-এর দূরত্ব প্রায় ৫৫ কিলোমিটার। ভারতের সীমান্তঘেঁষে খাসিয়া জয়ন্তিয়া পাহাড়ের কোলে মনোরম দৃশ্যের এ স্থানটি। জাফলং যেতে পথে পড়বে জৈন্তা রাজবাড়ী, তামাবিল, শ্রীপুর।

যেভাবে যাবেন: সিলেট থেকে বাসে করে সরাসরি জাফলং যেতে পারেন।

 

সুরমা ভেলী: সুরমা ভেলীর দুই দিকে পাহাড় পর্বতের মধ্যে বিস্তীর্ণ এলাকার মাঝখানে চা রোপণের দৃশ্য ও সবুজ বন সত্যিই মনকে মুগ্ধ করবে। বাংলাদেশের পর্যটন স্হানগুলোর মধ্যে অন্যতম আকর্ষণ খাসিয়া, জৈন্তা ও ত্রিপুরা পাহাড় এখানেই অবস্হিত। সিলেট হচ্ছে চা বাগানের একটি শস্যভান্ডার, এখানে ১৫০ টির উপরে চা বাগান আছে যার মধ্যে পৃথিবীর সবচেয়ে বড় তিনটি চা বাগান এখানে অবস্হিত।

 

মৌলভীবাজারের দর্শনীয় স্থান

 

বাংলাদেশের অন্যতম পর্যটন জেলা মৌলভীবাজার। এ জেলার বৈচিত্র্যময় প্রাকৃতিক পরিবেশের কারণে প্রতিদিন বিভিন্ন পর্যটন স্পটে বিপুলসংখ্যক দেশী-বিদেশী পর্যটকের আগমন ঘটে। দুটি পাতা একটি কুঁড়ির সবুজে ভরা মায়াবী স্বপ্নপুরী মৌলভীবাজার জেলার দর্শনীয় স্থানগুলো বছরের প্রতিদিন পর্যটকের পদভারে থাকে মুখরিত।

 

এ জেলার সবুজ চা বাগানঘেরা উঁচু-নিচু টিলার সৌন্দর্য না গেলে বোঝা যাবে না। এ অঞ্চলের ভূপ্রকৃতি সম্পূর্ণ আলাদা বৈশিষ্ট্যের। ছোট-বড় টিলার ফাঁকে ফাঁকে এখানে রয়েছে পাহাড়ি ছড়া। পাহাড়ি ভূমির ঘন সবুজ অরণ্যের বুক চিরে বয়ে যাওয়া এসব ছড়ার সৌন্দর্যই আলাদা। মাইলের পর মাইলজুড়ে বিস্তৃত বনাঞ্চলে নানা পশুপাখির বাস। এত পাহাড়, বনবনানী, পাখপাখালির কলকাকলি, ঝরনা, হ্রদ, জলপ্রপাত, চা বাগান মৌলভীবাজার জেলাকে করেছে আকর্ষণীয়। রাবার, লেবু, আনারসের আর চা বাগানের সমারোহ ভুলিয়ে দেবে ক্লান্তি।

 

মৌলভীবাজারের লাউয়াছড়া জাতীয় পার্ক এখন পর্যটকদের অন্যতম আকর্ষণ। কমলগঞ্জের মাধবপুর লেক, হামহাম জলপ্রপাত, বড়লেখার মাধবকুণ্ড জলপ্রপাত প্রকৃতির আরেক বিস্ময়। শ্রীমঙ্গলের সুবিশাল হাইল-হাওরের নীল জলরাশি, পদ্ম আর বিভিন্ন প্রজাতির মাছের খেলা দেখার মতো।

 

বাইক্কা বিল মত্স্য অভয়াশ্রম ও পাখির অভয়ারণ্যের টানে ছুটে আসছেন পাখিপ্রেমীরা। এছাড়া দেশে মৌলভীবাজার জেলার চা বাগানের জুড়ি মেলা ভার।

 

মৌলভীবাজারের বর্শিজোড়া ইকোপার্ক, হাকালুকি হাওর, বীরশ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমান স্মৃতিসৌধ, পাঁচগাঁওয়ের দুর্গামণ্ডপ, মনুু ব্যারাজ, কাউয়াদিঘির হাওর, দেশের একমাত্র চা জাদুঘর, টি রিসোর্ট, চাকন্যা ভাস্কর্য, নির্মাই শিববাড়ি, দেশের একমাত্র চা গবেষণা ইনস্টিটিউট, বন্যপ্রাণী সেবা ফাউন্ডেশন, খাসিয়া পুনজি, ডিনস্টন সিমেট্রি, বার্নিসটিলা, গলফ ফিল্ড, পাখিবাড়ি, বধ্যভূমি ৭১, লালমাটি পাহাড়, পর্যটকদের কাছে অন্যতম আকর্ষণ।

 

এ জেলায় রয়েছে নৃতাত্ত্বিক জনগোষ্ঠীর বাস। খাসিয়া, মণিপুরি, সাঁওতাল, টিপরা ও গারো সম্প্রদায়ের স্বতন্ত্র জীবনাচার এবং বৈচিত্র্যপূর্ণ জীবন ও সংস্কৃতি দেখলে খানিক সময়ের জন্য হলেও পাহাড়ি হয়ে প্রকৃতির কোলে মিশে যেতে মন চাইবে। এদের জীবন ও সংস্কৃতি দেখতে পর্যটকদের বারবার মৌলভীবাজার ভ্রমণে উত্সাহিত করে।

 

প্রতি বছর চা বাগানগুলোয় ‘ফাগুয়া উত্সব’, টিপরাদের ‘বৈসু উত্সব’ মণিপুরিদের ‘রাস উত্সব’ ও গারোদের ‘ওয়ানগালা উত্সব’ উদযাপিত হয় জাঁকজমকভাবে। তাদের এ আনন্দ-উত্সবে মিশে যেতে পারেন আপনিও।

 

ঢাকা ও চট্টগ্রাম থেকে বাস ও রেলপথে শ্রীমঙ্গলে আসতে পারেন। ট্রেনে এলে শ্রীমঙ্গল নেমে বাসে মৌলভীবাজার যেতে হবে। শ্রীমঙ্গল বা মৌলভীবাজার থেকে অটোরিকশা, প্রাইভেট কার, মাইক্রোবাসে সব পর্যটক স্পটে যাওয়া যায়। প্রতিদিন ঢাকা থেকে তিনটি ও চট্টগ্রাম থেকে দুটি আন্তঃনগর ট্রেনে করে শ্রীমঙ্গলে আসা যাবে।

 

মাধবকুণ্ড জলপ্রপাত : পাথরিয়া পাহাড়ের প্রায় ২৭২ ফুট উপর হতে অবিরাম গতিতে জলরাশির নিচে পতিত হওয়ার ফলে সৃষ্টি হয়েছে মাধবকুণ্ড।

মাধবকুণ্ড ইকোপার্ক, পরিকুন্ড জলপ্রপাত,হামহাম ঝর্না,হাকালুকি হাওড়।

বিখ্যাত খাবারের নাম চ্যাপ্টা রসগোল্লা মৌলভীবাজার।

যেভাবে যাবেন: ঢাকা থেকে সিলেট যেতেই পড়ে মৌলভীবাজার। সেখানে নেমে আপনি মাধবকুণ্ডে বেড়াতে পারেন।

 

শ্রীমঙ্গলের দর্শনীয় স্থান

 

লাউয়াছড়ার সৌন্দর্যমণ্ডিত বনভূমি আর বিস্তীর্ণ চা বাগান দেখতে চাইলে আপনাকে যেতে হবে শ্রীমঙ্গলে।

যেভাবে যাবেন, ঢাকা থেকে শ্রীমঙ্গলের সরাসরি অনেকগুলো বাস সার্ভিস আছে। সেগুলোতে চড়ে যেতে পারেন।

 

বর্ষিজোড়া ইকোপার্কে বাইক্কা বিল: ভ্রমণপিপাসুরা যান্ত্রিক শহরের ক্লান্তি দূর করতে চারদিকে সবুজ বনানী, পাহাড়, লেক, জলধারা ও চা বাগান ঘেরা মনোরম প্রকৃতির লীলাভূমি শ্রীমঙ্গলে ছুটে আসেন। এখানে রয়েছে চা বাগান, বাংলাদেশ চা গবেষণা কেন্দ্র, রমেশ রাম গৌঢ়ের সাত রঙের চা, শ্যামলী পর্যটন, শ্যামলীর ডিপ ফিজাপ এরিয়া, লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান, রাবার, আনারস ও লেবু বাগান, লেক, মাগুরছড়া গ্যাসকূপ, পান পুঞ্জি, ওফিং হিল, বার্নিস টিলার আকাশছোঁয়া সবুজ মেলা, যজ্ঞ কুণ্ডের ধারা ঝরনা, নিমাই শিববাড়ী, সিতেশ দেবের বন্যপ্রাণী সেবা ফাউন্ডেশন ও দেশের একমাত্র সাদা বাঘ, লাউয়াছড়ায় ভেষজ উদ্ভিদের বাগান, শতবর্ষের স্মৃতিবিজড়িত ডিনস্টন সিমেট্রি, চা-কন্যার ভাস্কর্য, আদিবাসী পল্লী, হাইল হাওর, বাইক্কা বিলে পর্যটন টাওয়ারসহ অনেক দর্শনীয় স্থান।

 

হবিগঞ্জের দর্শনীয় স্থান

 

রেমা-কালেঙ্গা বন্যপ্রাণী অভয়ারন্য রেমা-কালেঙ্গা বন্যপ্রাণী অভয়ারন্যটি বাংলাদেশের একমাত্র ভার্জিন বন। এই বনের অবস্থান হবিগঞ্জ জেলায়। মূল বনে যাবার মাধ্যম হলো চুনারুঘাট উপজেলা শহর থেকে জীপে অথবা অটোরিকশায়।

 

সাতছড়ি জাতীয় উদ্যান হবিগঞ্জ জেলার চুনারুঘাট উপজেলার সাতছড়ি জাতীয় উদ্যান ।

নদী সমূহ: কালনী, কুশিয়ারা, খোয়াই, গোপালা, সুতাং, করোঙ্গী, বরাক।

 

সুনামগঞ্জের দর্শনীয় স্থান

 

হাছন রাজার বাড়ি: সুনামগঞ্জে তার জš§স্থান ও বাসগৃহে রয়েছে একটি সংগ্রহশালা। হাছন রাজার ব্যবহƒত বেশ কিছু জিনিস সংরতি আছে এখানে।

টাঙ্গুয়ার হাওর: মাছ আর পাখির অভয়ারণ্য নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে সুরমা নদী থেকে কিছুটা দুর্গমে টাঙ্গুয়ার হাওর।

টেকেরঘাট চুনাপাথর খনি প্রকল্প।

নদী সমূহ: জাদুকাটা নদী, মহাসিং নদী।

যেভাবে যাবেন, সুনামগঞ্জের পথেও অনেক ভালো বাস সার্ভিস আছে।

 

খুলনা বিভাগ

 

বাংলাদেশের দণি-পশ্চিমপ্রান্তে বঙ্গোপসাগরের কাছেই খুলনার অবস্থান। খুলনার পরিচিতি সবার কাছে সুন্দরবনের জন্য।

 

খুলনার দর্শনীয় স্থান

 

খুলনাতে দেখার মতো অনেক কিছুই আছে। এর মধ্যে খুলনা বিভাগীয় জাদুঘর অন্যতম। রয়েছে জীববৈচিত্র্যে ভরপুর পৃথিবীর বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ বন “সুন্দরবন”।

বিখ্যাত খাবারের নামখুলনার চুই-রাজ হাঁসের মাংস

যেভাবে যাবেন, ঢাকা থেকে সোহাগ, ঈগল, একে ট্রাভেলসসহ বিভিন্ন বাস ছেড়ে যায় সকাল থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত। এছাড়া খুলনায় ট্রেনে যাওয়া যাবে।

 

বাগেরহাটের দর্শনীয় স্থান

 

এই জেলায় রয়েছে খানজাহান আলীর মাজার ও তার দীঘি, বিশ্ব ঐতিহ্য ষাটগম্বুজ জামে মসজিদ, ষাটগম্বুজ জাদুঘর, প্রতœতত্ত্বের বিভিন্ন মসজিদ, মন্দির, ইতিহাস ও ঐতিহ্যের বিভিন্ন নিদর্শন। খানজাহানের মাজারের পাশে আরও আছে অনেকগুলো মসজিদ ও দীঘি।

 

যেভাবে যাবেন: ঢাকা থেকে সোহাগ, হানিফ, ঈগল, একে ট্রাভেলসসহ বিভিন্ন বাস খুলনার উদ্দেশে ছেড়ে যায়। খুলনা নেমে লোকাল বাসে বাগেরহাট যাবে।

কোথায় থাকবেন : থাকা-খাওয়ার জন্য বাগেরহাট সদরে আছে বেশ কিছু ভালো মানের হোটেল।

 

যশোরের দর্শনীয় স্থান

 

শহর থেকে প্রায় ৪৫ কিলোমিটার দূরে কেশবপুরের সাগরদাঁড়িতে মহাকবি মাইকেল মধুসূদন দত্তের বাড়ি। ক্ষণিকা পিকনিক কর্নার (খানজাহান আলী কর্তৃক খননকৃত) ও মির্জানগর।প্রতœতাত্ত্বিক নিদর্শনের মধ্যে রয়েছে চাঁচড়া রাজবাড়ি, কালী মন্দির, গাজী কালুর দরগা, সিদ্দিরপাশার দীঘি ও মন্দির, রাজা মুকুট রায়ের রাজবাড়ির।

বিখ্যাত খাবারের নাম যশোরের জামতলার মিষ্টি,যশোরের খেজুরের নোলন গুড়ের প্যারা সন্দেশ, যশোরের খেজুর রসের ভিজা পিঠা

নদী সমূহ ভৈরব, কপোতাক্ষ, মুক্তেশ্বরী, বেতনা, চিত্রা, হরিহর, শ্রীনদী , টেকানদী, কোদলী নদী, ভদ্রা নদী এবং ইছামতি নদী

যেভাবে যাবেন, ঢাকা থেকে সোহাগ, হানিফ, ঈগল, একে ট্রাভেলসসহ বিভিন্ন বাস যশোরের উদ্দেশে ছেড়ে যায় সকাল থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত।

 

নড়াইলের দর্শনীয় স্থান

 

নড়াইল গিয়ে সবার আগেই হাজির হতে পারেন বিশ্ববরেণ্য চিত্রশিল্পী এসএম সুলতানের বাড়ি। বর্তমানে তার বাড়িতে একটি জাদুঘর আছে।

 

বিখ্যাত খাবারের নাম: নলেন গুড়ের সন্দেশ

নদী সমূহ চিত্রা, নবগঙ্গা, মধুমতি, ভৈরব, আফরা, কাজলা নদী।

যেভাবে যাবেন, ঢাকা থেকে প্রতিদিন সোহাগ, হানিফ, ঈগল, একে ট্রাভেলসসহ বিভিন্ন এসি, নন এসি বাস নড়াইলের উদ্দেশে ছেড়ে যায়।

 

মাগুরার দর্শনীয় স্থান

 

রাজা সীতারাম রায়-এর রাজবাড়ী (মোহম্মদপুর), কবি কাজী কাদের নওয়াজ-এর বাড়ী (শ্রীপুর), বিড়াট রাজার বাড়ী (শ্রীপুর), পীর তোয়াজউদ্দিন (র) এর মাজার ও দরবার শরীফ (শ্রীপুর)দের চাঁদের হাট, আঠার খাদার সিদ্ধেশ্বরীর মঠ, গরিব শাহের মাজার,হাজী আব্দুল হামীদ (পীর সাহেব কেবলা রহঃ) এর দরগাহ ও মাজার শরীফ(মাগুরা ভায়না মোড়)।

 

সীতারাম রায়ের রাজবাড়িমহম্মদপুর: ষোড়শ শতাব্দীর মাঝামাঝি থেকে সপ্তদশ শতাব্দীর প্রথম ভাগ পর্যন্ত রাজা সীতারাম এখানে ভূষণা রাজ্যের রাজধানী স্থাপন করেন। কিছু নিদর্শন এখনো বর্তমান; যেমন_ কাছারিবাড়ি, দোল মন্দির, ঘোড়াশাল, রামসাগর দিঘি, দুধসাগর দিঘি ইত্যাদি। জেলা সদর থেকে মহম্মদপুর সদর ২৫ কিলোমিটার, লোকাল বাসে ভাড়া ৩০ টাকা।

 

কবি ফররুখ আহমেদের বাড়িমাঝাইল: শ্রীপুর উপজেলার মাঝাইল গ্রামে কবি ফররুখ আহমেদের বাড়ি। কবির বিখ্যাত ‘পাঞ্জেরী’ কবিতার কয়েকটি চরণ উৎকীর্ণ আছে বাড়ির সামনের একটি স্মৃতিফলকে। আছে কবির জীর্ণ কুটির। ঢাকার গাবতলী থেকে খুলনাগামী সোহাগ, ঈগল বা হানিফ পরিবহনের বাসে চড়ে শ্রীপুরের ওয়াপদা বাসস্ট্যান্ডে নামতে হবে। ভাড়া চেয়ার কোচ ৪০০ টাকা। সেখান থেকে ভ্যানযোগে পাঁচ টাকা ভাড়ায় কবির বাড়ি যাওয়া যায়।

রাধাগোবিন্দ জিউ মন্দিরকেচুয়াডুবি : মাগুরা সদর উপজেলার মঘি ইউনিয়নের কেচুয়াডুবি গ্রামে অবস্থিত মন্দিরটি ৮০০ বছরের পুরনো। কাছেই আছে ফটকি নদী। এখন পুরনোটির পাশে বৃন্দাবনের কোনো একটি রাধাগোবিন্দ মন্দিরের আদলে তৈরি হচ্ছে বড় আরেকটি মন্দির। প্রতিবছর ফাল্গুনী পূর্ণিমা তিথিতে বারুণী পূজা ও গঙ্গাস্নান হয়। ঢাকার গাবতলী থেকে আড়পাড়া হয়ে খুলনাগামী ঈগল, হানিফ, সোহাগসহ বেশ কিছু পরিবহনের বাসে আড়পাড়া বাজারে নামা যায়।

 

অন্যান্য দর্শনীয় স্থান: নদের চাঁদের ঘাট, সীতারাম রায়ের রাজবাড়ি, দেবল রাজার গড়, সিদ্ধেশ্বরী মঠ ইত্যাদি

বিখ্যাত খাবারের নামমাগুরায় বিখ্যাত খামারপাড়ার দই।

নদী সমূহ গড়াই/মধুমতি, কুমার, চিত্রা, নবগঙ্গা, ফটকী ও মুচিখালী জেলার প্রধান নদ নদী।

 

কুষ্টিয়ার দর্শনীয় স্থান

 

কুষ্টিয়া জেলার অন্যতম আকর্ষণীয় দেখার স্থান হল শিলাইদহের রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কুঠিবাড়ি। এখানে রয়েছে ফকির লালন শাহের মাজার। এছাড়াও দেখতে পাবেন মীর মশাররফ হোসেনের বাড়ি, হার্ডিঞ্জ ব্রিজ।

 

কুষ্টিয়ায় মহিষের দুধের দই।কুষ্টিয়ার স্পেশাল চমচম।

যেভাবে যাবেন: ঢাকা থেকে সোহাগ, হানিফ, ঈগল, একে ট্রাভেলসসহ বিভিন্ন এসি/নন এসি বাস কুষ্টিয়ার উদ্দেশে ছেড়ে যায় সকাল থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত।

নদী সমূহ গড়াই,মাথাভাঙ্গা ,মধুমতি, কুমার।

 

ঝিনাইদাহ দর্শনীয় স্থান

 

মিয়ার দালান: জেলা সদর থেকে তিন কিলোমিটার দূরে নবগঙ্গা নদীর তীরে মুরারীদহ গ্রামে প্রাচীন জমিদার বাড়ি মিয়ার দালান অবস্থিত।

নলডাঙ্গা সিদ্ধেশ্বরী মন্দির : জেলার কালিগঞ্জ উপজেলা সদরের দুই কিলোমিটার পশ্চিমে নলডাঙ্গা গ্রামে অবস্থিত সিদ্ধেশ্বরী মন্দির।

বারোবাজার: জেলার কালিগঞ্জ উপজেলার বারোবাজার ইউনিয়নে রয়েছে বেশ কিছু প্রাচীন স্থাপনা। ধারণা করা হয়, বহুকাল আগে এখানে সমৃদ্ধ একটি শহরের অস্তিত্ব ছিল।

 

গোরাই মসজিদ: ১৯৮৩ সালে প্রত্নতত্ত্ব বিভাগ এ মসজিদটির সংস্কার করে।

গলাকাটা মসজিদ: বারোবাজার-তাহিরপুর সড়কের পাশে অবস্থিত পোড়ামাটির কারুকাজ-সমৃদ্ধ প্রাচীন মসজিদ।

জোড়বাংলা মসজিদ: ১৯৯২-৯৩ সালে খননের ফলে বারোবাজারের এ মসজিদটি আবিষ্কৃত হয়। পাতলা ইটে নির্মিত এ মসজিদটি উঁচু একটি বেদির ওপরে নির্মিত।

সাতগাছিয়া মসজিদ: বারোবাজার থেকে এ মসজিদের দূরত্ব প্রায় চার কিলোমিটার। এ মসজিদটি ১৯৮৩ সালে সর্বপ্রথম স্থানীয় জনগণ আবিষ্কার করে।

কালু ও চম্পাবতীর সমাধি: বারোবাজার থেকে প্রায় এক কিলোমিটার দূরে অবস্থিত গাজী-কালু ও চম্পাবতীর সমাধি। গাজী-কালু ও চম্পাবতীর সমাধি নিয়ে নানান লোককাহিনি প্রচলিত আছে।

 

শৈলকুপা শাহী মসজিদ: জেলা সদর থেকে প্রায় ৩০ কিলোমিটার দূরে শৈলকুপা বাজারের পাশেই অবস্থিত প্রাচীন স্থাপনা শৈলকুপা শাহী মসজিদ।

 

মলিস্নকপুরের বটবৃক্ষ: জেলার কালিগঞ্জ উপজেলা থেকে দশ কিলোমিটার পূর্বে মলিস্নকপুরে রয়েছে বিশাল আকৃতির একটি বটবৃক্ষ।

নবগঙ্গার সেই রূপ নেই। নেই ঝিনুকেরও সমাহার। তারপর নবগঙ্গা নদী ছাড়া দর্শনীয় স্থানের তালিকায় রয়েছে ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলায় কুমার নদের তীরে দরগা পাড়ার প্রাচীন মসজিদ। মসজিদটি উত্তরে ৩১ ফুট ও দক্ষিণে ২১ ফুট লম্বা। এর পূর্ব দেয়ালে ৩টি ও উত্তর-দক্ষিণ দেয়ালে ২টি করে দরজা আছে। এর ৬টি গম্বুজ আছে। এ মসজিদটি সুলতান নাসির উদ্দিন শাহ ১৫১৯-১৫৩১ সালের মধ্যে কোন এক সময় তৈরি করেন। এর কারুকাজ এখনো শিল্পবোদ্ধাদের কৌতূহলের উদ্রেগ করে।

 

ঐতিহাসিক গোরাই মসজিদ: ঝিনাইদহ থেকে বারবাজারের দূরত্ব ৩০ কিলোমিটার। এখানে আছে ঐতিহাসিক গোরাই মসজিদ। বারবাজারে ১২৬টি দিঘি ও পুকুর আছে। স্থানীয়দের ভাষায় এ মসজিদটি গোরাই গাজীর মসজিদ। এ মসজিদের গম্বুজ ১টি হলে এর কারুকাজ কিন্তু সৌন্দর্যে কোন অংশে কম নয়। ঝিনাইদহ শহরের পাশেই পাগলা কানাইয়ের মাজার। মুরারিদহে কুমার নদের পাশে কালের সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে নীলকুঠিয়ালদের বাড়ি।

 

নীলকুঠি: ঝিনাইদহে যাবেন আর নীলকুঠি দেখবেন না তা কিন্তু হয় না। বাংলার নীলচাষ ও নীলবিদ্রোহ সম্পর্কে জানার জন্য কৌতূহল আপনাকে তাড়া করে ফিরবে।

মোবারকগঞ্জ রেলস্টেশনকালীগঞ্জ, ঝিনাইদহ। ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার মোবারকগঞ্জ রেলওয়ে স্টেশনটির বয়স ১০৬ বছর।

নদী সমূহ বেগবতী, ইছামতী, কোদলা, কপোতাক্ষ, নবগঙ্গা, চিত্রা ও কুমার নদী।

 

যেভাবে যাবেন : ঢাকা থেকে সড়কপথে সরাসরি ঝিনাইদহ যাওয়া যায়। গাবতলী বাস স্টেশন থেকে জে আর পরিবহন, পূর্বাশা পরিবহন, চুয়াডাঙ্গা ডিলাক্স, শ্যামলী পরিবহন, ঈগল পরিবহন, হানিফ এন্টারপ্রাইজ, এসবি পরিবহন, দিগন্ত পরিবহনসহ আরো অনেক বাস ঝিনাইদহ যায়। ভাড়া ২৫০-২৮০ টাকা।

কোথায় থাকবেন : মাওলানা ভাসানী সড়কে হোটেল ঝিনুক (০৪৫১-৬১৪৬০, নন এসি একক ১০০ টাকা, নন এসি দ্বৈত ২৫০ টাকা, এসি দ্বৈত ৪০০ টাকা)। পোস্ট অফিস মোড়ে হোটেল জামান (, নন এসি একক ৬০ টাকা, নন এসি দ্বৈত ১২০ টাকা)।

 

মেহেরপুরের দর্শনীয় স্থান: মেহেরপুর জেলা শহর থেকে ১৫ কিলোমিটার দূরে এই মুজিবনগর। ১৯৭১ সালের ১৭ এপ্রিল এখানেই গঠিত হয় বাংলাদেশের প্রথম অস্থায়ী সরকার। আরও দেখতে পাবেন আমঝুপি নীলকুঠি, দর্শনা চিনিকল, কেরু অ্যান্ড কোম্পানি চত্বর, বলভপুর মিশন, বরকত বিবির মাজার, শেখ ফরিদের দরগাহ, বলভপুর শিব মন্দির, স্বামী নিগমানন্দের আশ্রম, ভাইকারা নীলকুঠি, সাহার কাঠি নীলকুঠি ইত্যাদি।

বিখ্যাত খাবারের নাম বিখ্যাত মিষ্টি সাবিত্রি ও রসকদম্ব

যেভাবে যাবেন: ঢাকা থেকে গাবতলী থেকে সোহাগ, হানিফ, ঈগল, একে ট্রাভেলসসহ বিভিন্ন বাস ছেড়ে যায়।

 

সাতক্ষীরার দর্শনীয় স্থান: সুন্দরবন, ভোমরা স্থল বন্দর বিভিন্ন ক্ষেত্র থেকে সরকার বিপুল পরিমাণ রাজস্ব আয় করে থাকে। এ ছাড়া শ্যামনগরের বংশীপুর, শাহী মসজিদ, ঈশ্বরীপুরের যশোরেশ্বরী মন্দির, হাম্মামখানা, জমিদার বাড়ি, মৌতলাব জাহাজঘাটা নৌদুর্গ, দেবহাটার নীলকুঠি, সাতক্ষীরার নবরতœ মন্দির, কালিগঞ্জের খানবাহাদুর আহলান উল্লাহর সুদৃশ্য মাজারসহ এ জেলার অসংখ্য প্রতœতত্ত্ব নিদর্শন রয়েছে।

 

প্রবাজপুর শাহি জামে মসজিদ: মুঘল সম্রাট আওরঙ্গজেবের সেনাদল ১৬৯৩ সালের দিকে প্রবাজপুরে নিয়োজিত ছিল। তাদের নামাজ পড়ার সুবিধার্থে সুবেদার পরবাজ খাঁকে তিনি একটি মসজিদ নির্মাণের নির্দেশ দিয়েছিলেন। তখন পরবাজ খাঁ এক গম্বুজবিশিষ্ট এই মসজিদ নির্মাণ করেন। গ্রামটির নামকরণও হয়েছিল পরবাজ খাঁর নাম থেকেই। প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের আওতাধীন আছে মসজিদটি এখন। শহর থেকে সড়ক পথে ৩৫ কিলোমিটার দূরে কালিগঞ্জ উপজেলা সদর। কালিগঞ্জ থেকে পাঁচ কিলোমিটার দূরে প্রবাজপুর গ্রাম। শহরের বাস টার্মিনাল থেকে বাসে কালিগঞ্জ উপজেলা সদর যেতে হয়। ভাড়া ৪০ টাকা। এরপর নসিমনে মসজিদ পর্যন্ত ভাড়া ২০ টাকা।

 

জমিদারবাড়ির মসজিদ: তালা উপজেলার তেঁতুলিয়া গ্রামে এই মসজিদ। নির্মিত হয়েছে ১২৭০ বঙ্গাব্দে। মুসলমান জমিদার মৌলভি কাজী সালামতুল্লাহ খান বাহাদুর আগ্রার তাজমহলের অনুকরণে এটি নির্মাণ করিয়েছিলেন। মসজিদের উত্তর পাশে তিনি একটি দিঘিও খনন করান। মসজিদের প্রধান ফটকে ফার্সি লিপি খোদিত আছে। মেঝে শ্বেত পাথরের। ভেতরের দেয়ালে কোরআনের আয়াত খচিত। মসজিদের গম্বুজ সংখ্যা চারটি, চারকোনায় মিনারও আছে। খুলনা-পাইকগাছা সড়কের পাশেই এ মসজিদ, তালা উপজেলা সদর থেকে তিন কিলোমিটার দূরে। শহরের বাসটার্মিনাল থেকে বাসে ১৮ মাইল মোড় পর্যন্ত ভাড়া লাগে ৩০ টাকা। এরপর পাইকগাছা রোডে তেঁতুলিয়া মসজিদ পর্যন্ত বাসে ভাড়া ১০ টাকা।

 

মায়ি চম্পার দরগাহ: সাতক্ষীরা শহর থেকে তিন কিলোমিটার উত্তরে লাবসা গ্রামে মায়ি চম্পার দরগাহ। বাংলা লোকসাহিত্যের জনপ্রিয় চরিত্র গাজী, কালু ও চম্পাবতী। চম্পাবতীই পরিচিত হয়েছিলেন মা চম্পা নামে। তাঁর মাজারের পশ্চিম পাশে আছে বিশাল এক চম্পা ফুলের গাছ। যশোর-সাতক্ষীরা সড়কের পাশেই মায়ি চম্পার দরগাহ শরিফ অবস্থিত। শহর থেকে রিকশায় দরগাহ পর্যন্ত ভাড়া ২০ টাকা।

অন্যান্য দর্শনীয় স্থান : সোনাবাড়িয়া নবরত্ন মন্দির, যশোরেশ্বরী মন্দির, চণ্ড ভৈরবের ত্রিকোণ মন্দির, রাজা প্রতাপাদিত্যের নগরদুর্গ, ঈশ্বরীপুরের হাম্মামখানা, সুলতানপুরের মসজিদ

বিখ্যাত খাবারের নাম খাদ্যদ্রব্য হিসেবে সাতক্ষীরার চিংড়ি মাছ সন্দেশ, বিলাতিকুল, ওল এবং ঘোলের অনেক সুনাম আছে সারা দেশে

নদী সমূহ যমুনা, ইছামতি, কপোতাক্ষ, খোলপেটুয়া সোনাই, বেতনা, রায়মঙ্গল, মরিচচাপ

 

বরিশাল বিভাগ

 

বরিশাল ভাবলেই চোখের সামনে ভেসে ওঠে দিগদিগন্ত বিস্তৃত অসংখ্য নদী-নালা খাল-বিল। কথায় বলে, ধান-নদী-খালÑএই তিনে বরিশাল। পুরো বরিশালজুড়েই নদীর শাসন।

 

বরিশালের দর্শনীয় স্থান

 

গুঠিয়ার মসজিদ: বরিশাল-বানারীপাড়া সড়ক ধরে উজিরপুর উপজেলা। গুঠিয়ার চাংগুরিয়া গ্রামটিও সড়কের পাশে। এই গ্রামেই মসজিদটি। ২০০৩ সালে প্রায় ১৪ একর জমির ওপর বায়তুল আমান জামে মসজিদ ঈদগাহ কমপ্লেক্সের নির্মাণকাজ শুরু হয়। লোকজন গুঠিয়ার মসজিদ নামেই বেশি চেনে। তিন বছর পর ২০০৬ সালে নির্মাণকাজ শেষ হয়। মূল প্রবেশপথের ডান দিকে রয়েছে পুকুর। মসজিদের ওপরে ৯টি, বাইরে ৪টি, ভেতরে ছোট ছোট ৭টি এবং মূল প্রবেশদ্বারের দুই পাশে আরো দুটি গম্বুজ রয়েছে। মসজিদের মিনার ১৯৩ ফুট উঁচু। শহরের নথুল্লাবাদ থেকে বানারীপাড়ার উদ্দেশে ১৫ মিনিট পর পর বাস ছাড়ে। ওই বাসে ১৪ টাকা ভাড়ায় মসজিদে যাওয়া যায়।

 

শেরে বাংলার রেস্টহাউস: জেলা শহর থেকে ২৮ কিলোমিটার দূরে বানারীপাড়া উপজেলা। সেখান থেকে আরো ছয় কিলোমিটার দূরে সন্ধ্যা নদীর তীরের গ্রাম চাখার। এই গ্রামেই জন্মেছিলেন অবিভক্ত বাংলার মুখ্যমন্ত্রী শেরে বাংলা ফজলুল হক। হক সাহেব বাড়ি এলে রেস্টহাউসেই থাকতেন বেশি। এখানে এখন সংরক্ষিত আছে ২৬টি চিঠি, তাঁর একুশটি আলোকচিত্র, চারটি মানপত্র, বংশলতিকা, বইপত্র ইত্যাদি। তাঁর সংগ্রহের একটি কালো পাথরের বুদ্ধমূর্তি এবং শিবলিঙ্গও আছে এখানে। শহরের নথুল্লাবাদ বাসস্ট্যান্ড থেকে ১৫ মিনিট পর পর বানারীপাড়ার উদ্দেশে বাস ছেড়ে যায়। ওই বাসযোগে গুয়াচিত্রা নামের স্টেশনে নামতে হবে। সেখান থেকে রিকশা ও টেম্পোযোগে ফজলুল হকের বাড়ি যাওয়া যায়।

এখানে দেখতে পাবেন প্রাচীন বাংলার খ্যাতিমান চারণকবি মুকুন্দ দাশের স্মরণে নির্মিত একটি কালীমন্দির। রূপসী বাংলার কবি জীবনানন্দ দাশের বাড়ি, শেরেবাংলা একে ফজলুল হকের মহিমাময় স্মৃতি এবং কীর্তিকে ধরে রাখার জন্য প্রতিষ্ঠিত শেরেবাংলা স্মৃতি জাদুঘর, সব শ্রেণীর মানুষের নয়নমন কাড়া দুর্গাসাগর দীঘি। এগুলো ছাড়াও শহর এবং আশপাশে বেড়ানোর মতো বেশ কিছু স্পট রয়েছে। যেমনÑকালিজিরা ব্রিজ, ক্যাডেট কলেজ, লিচু শাহের মাজার, বিমানবন্দর, পদ্মপুকুর, অমৃত লাল দে কলেজ ইত্যাদি। এছাড়া অন্যান্য দর্শনীয় স্থান ব্রজমোহন কলেজ, বাবুগঞ্জের দুর্গাসাগর, গৌরনদীর কসবা মসজিদ, আগৈলঝড়ার মনসামন্দির, বাকেরগঞ্জের ১৪টি জমিদারবাড়ি।

বিখ্যাত খাবারের নাম নিতাইয়ের কাঁচা গোল্লা (বরিশাল)বরিশালের নারকেল নাড়ু,আমড়া,বরিশালের শশী মিষ্টি

নদী সমূহ: মেঘনা. কীর্তনখোলা, আড়িয়ালখাঁ, কালাবদর, পায়রা, সন্ধ্যা ও সুগন্ধা

যেভাবে যাবেন : কসদরঘাট থেকে সুরভী, সুন্দরবন, পারাবতসহ বেশ কিছু লঞ্চে বরিশাল যাওয়া যায়। ছাড়ে রাত ৮টায়। কেবিন ভাড়া ৮৫০ থেকে ১৮০০ টাকা। ডেকের ভাড়া ১৫০ টাকা। এ ছাড়া ঢাকার সায়েদাবাদ বা গাবতলী থেকে সাকুরা, হানিফ, জিএমসহ বেশ কিছু পরিবহনের বাসে বরিশাল যাওয়া যায়।

 

হরিণঘাটার জঙ্গল আর সৈকত(ফাতরার বন): প্রাকৃতিকভাবে সৃষ্ট এ বন নানান গাছপালায় সমৃদ্ধ। কেওড়া, গরাণ, গেওয়া,কক ওড়া প্রভৃতি শ্বাসমূলীয় গাছ বনের প্রধান বৃক্ষ। এ ছাড়া বনে দেখা মেলে চিত্রা হরিণ, বানর, বন বিড়াল, বন্যশুকরসহ নানান বন্যপ্রাণী। নানান জাতের পাখিরও দেখা মেলে এ বনে। আরও আছে গুঁইসাপ আর বিভিন্ন প্রকার সাপ। তবে এ বনে নির্ভয়ে ঘুরে বেড়াতে পারেন পর্যটকরা। সুন্দরবনের খুব কাছে হলেও এ বনে এখন পর্যন্ত বাঘের মতো হিংস্র কোনো প্রাণীর সন্ধান মেলেনি।

 

 

পুরো বনের ভেতরেই জালের মতো ছড়ানো আছে বেশ কিছু ছোট ছোট খাল। জোয়ারে খালগুলো জলে পরিপূর্ণ হলেও ভাটায় একেবারে শুকিয়ে যায়। এসব খাল জলে ভরা থাকলে ছোট নৌকা নিয়ে জঙ্গলের দৃশ্য উপভোগ করা যায়। এ বনাঞ্চলের পাশেই আছে সুন্দর একটি সমুদ্রসৈকত। লালদিয়ার চর নামেই এটি বেশি পরিচিত। বঙ্গোপসাগর আর বিষখালী নদীর মিলনস্থলে জেগে ওঠা এ সৈকত। হরিণঘাটার বন শেষ হয়েই শুরু হয়েছে এ সৈকতের। এ সৈকতে মানুষের আনাগোনা খুবই কম বলে সামুদ্রিক পাখিদের দল প্রায়ই দখল করে নেয়। কখনও কখনও সৈকতের বেলাভূমি লাল করে ঘুরে বেড়ায় কাঁকড়ার দল। শীতে এ সৈকতের কাছাকাছি এসে আস্তানা গড়েন ভ্রাম্যমান জেলেদের দল। সমুদ্র থেকে মাছ ধরে তারা শুঁটকি তৈরি করেন এখানেই।

 

বিষখালী ও পায়রা নদীর মোহনায় জেগে উঠেছে ছোট্ট অথচ সুন্দর একটি দ্বীপÑহরিণবাড়িয়ার চর। এ এলাকায় ঝাঁকে ঝাঁকে হরিণের দেখা মেলে। ঠাকুরপাড়ায় রয়েছে রাখাইন সম্প্রদায় অধ্যুষিত রাখাইনপাড়া। আনুমানিক দু”শ বছর আগে রাখাইনরা এখানে এসে আবাসন গড়ে তোলে। বরগুনায় আরও রয়েছে তালতলীর বৌদ্ধমন্দির, বেতাগীর বিবিচিনি মসজিদ, ছাতনাপাড়ার বৌদ্ধমঠ ও প্রাচীন স্থাপত্য কীর্তি।

নদী সমূহ পায়রা, বিষখালী ও বলেশ্বর।

যেভাবে যাবেন : নদীপথ এবং সড়কপথÑউভয়ভাবেই বরগুনা যাওয়া যায়। নদীপথে যাওয়ার সুবিধা হচ্ছেÑনদী এবং বিভিন্ন নৌযানের চলাচল দেখতে পাওয়া যায়। সড়কপথে যাওয়ার জন্য রয়েছেÑঈগল পরিবহন, দ্রুতি ও বিআরটিসির বাস।

 

ভোলার দর্শনীয় স্থান

 

চরের সমারোহ চরফ্যাশনে। এ জায়গার নামেও তেমন আগাম আভাস পাওয়া যায়। অনুপম সৌন্দর্য খেলা করে দণিাঞ্চলে। এখানকার চরগুলো হচ্ছে-লক্ষ্মীপী, চরফকিরা, মেঘভাসান, আইচা, লেতরা, নীলকমল, কচ্ছপিয়া, চরমঙ্গল, চরকিশোর, মায়ারচর।

 

দৌলতখানে রয়েছে কালা রায়ের বিশালাকৃতির দোতলা দালান, দীঘি, স্মৃতিমঠ, সীমানাপ্রাচীর ইত্যাদি। বোরহানউদ্দিনের দর্শনীয় স্থানগুলো হচ্ছে-বোরহানউদ্দিন চৌধুরীর বাড়ি, কুতুবা, গঙ্গাপুর, থামাননগর, বড়মানিকা, পাকাশিয়া, দেউলা, কাচিয়া, সাচড়া ইত্যাদি।

 

চরকুকরি মুকরি বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য: বাংলাদেশের একমাত্র দ্বীপ জেলা ভোলা শহর থেকে প্রায় ১২০ কিমি দূরে সাগর কোলের এক বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য চরকুকরি মুকরি। বঙ্গোপসাগরের তীরে মেঘনা ও তেতুঁলিয়া নদীর মেহানায় জেগে ওঠা প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলা ভূমি এ অভয়ারণ্যে বেড়ানোর উপযুক্ত সময় শীতকাল।

যেভাবে যাবেন :চরকুকরি মুকরি যেতে হলে প্রথমে যেতে হবে ভোলা সদরে। ঢাকা থেকে ভোলা যাওয়ার জন্য প্রধান যোগাযোগ নদীপথ। ঢাকার সদরঘাট থেকে ভোলা যায়।

বিখ্যাত খাবারের নামনারিকেল, মহিষের দুধের দই।

যেভাবে যাবেন, দু’ভাবে ভোলা যাওয়া যায়। সড়কপথে লক্ষ্মীপুরের মৌজারহাট এসে সেখান থেকে নদীপথে অথবা সরাসরি ঢাকার সদরঘাট থেকে নৌপথে।

 

পিরোজপৃর দর্র্শনীয় স্থান

 

রায়েরকাঠী জমিদার বাড়িঃ ৮০ একর জমির ওপর বাড়িটি। সতেরো শতকে নির্মিত। মহারাজ কিংকর রায় ছিলেন বারো ভূঁইয়াদের একজন। তাঁরই বংশধর রাজা রুদ্র নারায়ণ রায় স্বপ্নে আদিষ্ট হয়ে ১৬৫৮ সালে বাড়িটি তৈরি করেন। জেলা সদরের পুলিশ লাইনস সড়কে বাড়িটি অবস্থিত। বাড়িসংলগ্ন শিবমন্দিরে ৪০ মণ ওজনের একটি শিবলিঙ্গ আছে। সদর বাসস্ট্যান্ড থেকে জমিদারবাড়ি দুই কিলোমিটার। রিকশায় ভাড়া লাগে ১৫ টাকা।

বলেশ্বর ঘাট শহীদ স্মৃতিস্তভ: পিরোজপুর শহরের পশ্চিম পাশ্বে বলেশ্বর নদীর তীরে ১৯৭১ সালের ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে পিরোজপুরের আদূরে চালিতাখালী গ্রাম।

নাগরপুর জমিদারবাড়ি: পেয়ারা বাজার: দক্ষিণাঞ্চলের আপেল হিসেবে পেয়ারা বেশ পরিচিত। কৃষি বিভাগের তথ্যানুযায়ী দেশের ৮০ ভাগ পেয়ারা এ অঞ্চলে উপন্ন হয়।

 

যেভাবে যাবেন, পিরোজপৃর যেতে হলে ঢাকা থেকে পিরোজপুরের যে কোনও বাসে চড়ে অথবা নদী পথে পিরোজপৃর যেতে পারেন।

 

ঝালকাঠি র দর্শনীয় স্থান

 

রাজাপুর সাতুরিয়া জমিদার বাড়ি: রাজাপুর- পিরোজপুর মহাসড়কের বেকুটিয়া ফেরিঘাটের কিছু পূর্বে সাতুরিয়া গ্রামের জমিদার বাড়ির মাতুলালয়ে বাংলার বাঘের জন্ম।

 

কীর্তিপাশা জমিদার বাড়ী

 

গাবখান সেতু : ৫ম বাংলাদেশ চীন-মৈত্রী সেতু। যেটি প্রতিষ্ঠিত হয়েছে গাবখান চ্যানেলের উপর দিয়ে।

নেছারাবাদ কমপ্লেক্স :

 

সিদ্ধকাঠি জমিদার বাড়ী:

 

কামিনী রায় /যামিনী সেনের বাড়ি : স্বনামধন্য কবি কামিনী রায়ের পৈত্রিক বাড়ি বাসন্ডা গ্রামে। পৈত্রিক ভবনের ধ্বংসাবশেষ আছে। কামিনী রায় প্রথম মহিলা স্নাতক। কামিনী রায়ের বোন যামিনী সেন প্রথম মহিলা ডাক্তার।

 

নদী সমূহ সন্ধা, সুগন্ধা নদী, বিশখালী নদী এবং গাবখাননদী।

যেভাবে যাবেন ঃ ঝালকাঠি যেতে হলে বাস এবং স্টিমার করে ঢাকা থেকে ঝালকাঠি যেতে পারেন।

 

পটুয়াখালীর দর্র্শনীয় স্থান

 

শুধুমাত্র নদী কিংবা সবুজ প্রকৃতি দিয়েই নয়, পটুয়াখালী যথেষ্ট সমৃদ্ধ প্রতœতাত্ত্বিক নিদর্শনেও। এ জেলায় রয়েছে নূরানপুর রাজবাড়ি, রতনদীর গুরিন্দা মসজিদ, সুতাবাড়িয়া দয়াময়ী মন্দির, শ্রীরামপুর মিয়াবাড়ি মসজিদ, শাহী মসজিদ, মদনপুরা সিকদারবাড়ি, অন্ধকূপ, ডোল সমুদ্রের দীঘি, সিকদারিয়া জামে মসজিদ, কবিরাজবাড়ি দীঘি, কুয়াকাটা বৌদ্ধবিহার, কমলরানীর দীঘি, সুলতান ফকিরের মাজার ইত্যাদি। পটুয়াখালীর সবচেয়ে বড় আকর্ষণ, বাংলাদেশের অন্যতম পর্যটনকেন্দ্র কুয়াকাটা। কুয়াকাটা কারও কাছে সাগরকন্যা। কুয়াকাটায় রয়েছে ১৮ কিলোমিটার দীর্ঘ সমুদ্রসৈকত। সোনারচর সৈকত ,জেলা পরিষদের ডাকবাংলোর পূর্বদিকে উঁচু টিলার ওপর রয়েছে একটি বৌদ্ধমন্দির। মন্দিরের অভ্যন্তরে রয়েছে অষ্ট ধাতুর নির্মিত সাঁইত্রিশ মণ ওজনের ধ্যানমগ্ন বৌদ্ধমূর্তি। কুয়াকাটার ২ কিলোমিটার পশ্চিমে শুঁটকিপট্টি। কুয়াকাটায় রয়েছে রাখাইনদের মার্কেট।

নদী সমূহ

যেভাবে যাবেন: পটুয়াখালী যেতে হলে ঢাকা থেকে বরিশালের যে কোনও বাসে চড়ে বরিশাল হয়ে পটুয়াখালী যেতে পারেন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here