আনন্দ বিনোদন ডেস্ক: ঈদুল আজহার সময়টা আমাদের জীবনে শুধুই উৎসবের নয়, বরং এটি দায়িত্ব, আয়োজন আর ভালোবাসার মিলনমেলা। কোরবানির প্রস্তুতি, অতিথি আপ্যায়ন, রান্নাবান্না আর নিজের সাজগোজ—সব কিছু মিলিয়ে ঈদের আগে-পরে দিনগুলো বেশ ব্যস্ততায় কাটে। আর এই ব্যস্ততার মাঝেই আমরা অনেক সময় নিজেদের যত্ন নিতে ভুলে যাই। ফলে উৎসবের আনন্দ উপভোগ করাটা কেবল বাহ্যিক থেকে যায়। কিন্তু একটু সচেতন হলেই ঈদের আমেজে আপনি নিজেকে রাখতে পারেন সতেজ, প্রাণবন্ত ও উজ্জ্বল।

প্রথমেই যেটা গুরুত্বপূর্ণ, সেটা হলো ঘুম। ঈদের আগের রাতে অনেকেই দেরি করে ঘুমাতে যান—চলছে রান্নার প্রস্তুতি, পরিবারের সঙ্গে গল্প, বা শেষ মুহূর্তের কাজকর্ম। তবে মনে রাখা দরকার, একরাতের অপর্যাপ্ত ঘুম আপনার পরদিনের উজ্জ্বলতা ও মেজাজ দুটোতেই প্রভাব ফেলতে পারে। তাই রাত ১১টার মধ্যেই ঘুমিয়ে পড়ার চেষ্টা করুন। ঘুম ভাঙার পর সকালের ঠান্ডা পানিতে মুখ ধোয়া এবং ৫ মিনিট নিজের জন্য সময় রাখা—এই ছোট দুটি কাজই আপনাকে দিনভর চনমনে রাখতে পারে।

ত্বকের যত্নও অবহেলার নয়। ঈদের আগে রোদ, ধুলাবালি, আর নানা প্রসাধনীর ব্যবহারে ত্বক মলিন হয়ে যেতে পারে। ঈদের দিন সকালে ঘুম থেকে উঠে একটি মাইল্ড ক্লিনজার দিয়ে মুখ ধুয়ে নিন। ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করুন এবং মেকআপের নিচে একটি ভালো মানের সানস্ক্রিন লাগান। ঈদের পরে একদিন সময় বের করে ত্বকে একটি হালকা ঘরোয়া ফেসপ্যাক লাগিয়ে বিশ্রাম দিন—যেমন টকদই, মধু ও অল্প চন্দনগুঁড়ার মিশ্রণ।

ঈদের সময় খাবারে একটু অনিয়ম হতেই পারে। কিন্তু এই অনিয়ম যেন আপনার শরীরকে কষ্ট না দেয়, সে ব্যাপারে সতর্ক থাকা জরুরি। চেষ্টা করুন ভারী খাবারের পাশাপাশি প্রচুর পানি পান করতে। ঈদের দিন সকালে এক গ্লাস লেবু-গোলাপজল বা ডিটক্স ওয়াটার খাওয়া যেতে পারে। মাংসের সঙ্গে সালাদ রাখুন, আর অন্তত একবেলা হালকা খাবার খাওয়ার চেষ্টা করুন।

শরীরের পাশাপাশি মনের যত্নও জরুরি। ঈদের ব্যস্ততার মাঝে অন্তত ১০ মিনিট সময় একা কাটান। চোখ বন্ধ করে ধীরে ধীরে শ্বাস নিয়ে নিজেকে প্রশান্ত রাখার এই ছোট অভ্যাসই মানসিক প্রশান্তি ফিরিয়ে আনতে পারে। ঈদের পরে হঠাৎ নীরবতা অনেককে বিষণ্ণ করে তোলে—তখন প্রিয় বই, প্রিয় গান বা কাছের কারও সঙ্গে কিছুক্ষণ গল্প আপনাকে আনন্দে রাখবে।

অনেকেই চুলের যত্ন নিতে ভুলে যান। ঈদের পরে একদিন চুলে হালকা গরম নারকেল তেল ম্যাসাজ করে শ্যাম্পু করুন। চাইলে দই, মেথি ও ডিম দিয়ে একটি হেয়ার প্যাক ব্যবহার করতে পারেন। এতে চুলে ফিরবে কোমলতা ও প্রাকৃতিক উজ্জ্বলতা।

সবশেষে আসে পোশাক ও আত্মবিশ্বাস। ঈদের দিন নিজের আরামকে অগ্রাধিকার দিয়ে পোশাক বেছে নিন। এমন পোশাক পরুন যাতে আপনি নিজেকে আত্মবিশ্বাসী ও স্বস্তিতে অনুভব করেন। মনে রাখবেন, আয়নায় আপনি নিজেকে যেমনভাবে দেখছেন—সেই ছবিই আপনি পৃথিবীকে দিচ্ছেন।

এই ঈদে তাই নিজেকে সময় দিন, নিজের যত্ন নিন। কারণ আপনি ভালো থাকলেই, আপনার চারপাশের মানুষগুলোর জন্য ঈদটা আরও আনন্দময় হয়ে উঠবে।