যার এখনো বয়স মাত্র ২২ বছর সেই তরুনের নাম হায়দার আলী

0
3004
হায়দার আলী

এস.এ.এম সুমন:- চরিত্রে নবীন বয়সে প্রবীণ হায়দার আলী। ১৯৫৩ সালে ২১শে নভেম্বর বরিশাল সদরে এক সম্ভ্রান্ত পরিবারে জন্ম গ্রহন করেন। বাবা মৃত: আব্দুল আমিন মিয়া এবং মাতা মৃত: হাজেরা খাতুন। বরিশাল কলেজ থেকে তিনি নাইট কলেজ এর অধীনে ইন্টার মিডিয়েট পাশ করেন। হায়দার ১৯৭১ সালে যুদ্ধ চলাকালীন সময়ে মোছা: মনোয়ারা বেগমের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। তাদের পরিবারে দুটি মেয়ে ও একটি ছেলে রয়েছে। বড় মেয়ে ফেরদৌসি বেগম ও আসমা পারভীন এবং ছোট ছেলে ফয়সাল মামুন। প্রথম জীবনে তিনি টেইলারিং ব্যবসায় নিয়োজিত ছিলেন। পরে তিনি ওয়েগা ফ্যাশন নামে একটি গার্মেন্টস এর জিএম হন। দেশ স্বাধীন হবার পরপরই ১৯৭২ সালে প্রথম মঞ্চ নাটক দিয়ে অভিনয় জগতে পা রাখেন। ১৯৯৬ সালে চলচ্চিত্র পরিচালক মোহাম্মাদ হোসেন জেমী ‍যিনি বাংলাদেশের চলচ্চিত্র জগতের প্রথম হলিউড থেকে প্রশিক্ষন ও ডিগ্রী প্রাপ্ত, তারই হাত ধরেই মূলত আমার মিডিয়াতে আসা। এছাড়া মোহাম্মদ হোসেন জেমীর প্রথম নাটক ‘ঝিনুক নিরবে সহে’ নামের নাটক দিয়ে টিভিতে পথ চলা। এরপর থেকে নিয়মিত অভিনয় শুরু করেন তিনি।

২০০৩ সালে জেমীর পরিচালিত এবং চিত্রনায়ক মান্না অভিনীত ‘রাজধানী’ সিনেমায় কাজ করেন। সিনেমাটিতে হায়দার আলী একজন রিয়েল এস্টেট ব্যবসায়ীর চরিত্রে অভিনয় করেন । তারপর তাকে আর পিছু ফিরে তাকাতে হয়নি। একের পর এক চলচ্চিত্রে বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেছেন। তিনি এ যাবৎ ১০০ এর অধিক চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন। সর্বশেষ ‘বোবা কান্না’ সিনেমায় অভিনয় করেন।

তরুন হায়দার আলী

স্মরনীয় ঘটনা: উত্তম আকাশের পরিচালিত চলচ্চিত্র জীবনের সবচেয়ে স্মরনীয় এক ঘটনা শেয়ার করে বলেন, ‘ঢাকাইয়া পোলা বরিশ্যাইলা মাইয়া’ সিনেমাটিতে প্রযোজক ছিলেন নাজিমউদ্দিন চেয়ারম্যান তার প্রচেষ্টায় এই সিনেমায় তার কাজ করার সুযোগ হয়। যদিও হায়দার আলী সিনেমার প্রথম কাস্টিংয়ে ছিলেন না, তবুও প্রযোজক তাকে সিনেমায় কাস্টিং এর জন্য সেন্সর বন্ধ করে পুনরায় দৃশ্য ধারন করেন। এতে অতিরিক্ত ব্যয় হয় প্রায় ৫ থেকে ৭ লক্ষ টাকা। এটি তার দীর্ঘ ২৭ বছরের অভিনয় জীবনের স্মরনীয় ঘটনা বলে উল্লেখ করেন।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, অভিনয় জগতে তিনি কাউকে অনুসরন করেন না। কিন্তু অভিনয়ের মধ্যে সীমাবদ্ধ না রেখে, যখন যে চরিত্রে অভিনয় করেন সেই চরিত্রটি নিজের মধ্যে বাস্তবে ফুটিয়ে তুলেন।

হায়দার আলীর প্রিয় অভিনেতাদের মধ্যে অমিতাভ বাচ্চন ও দেশী নায়ক রাজ রাজ্জাক এবং উত্তম কুমারকে পাকিস্তানি নাদিম এবং ওয়াহিদ মুরাদ, অভিনেত্রীদের মধ্যে রয়েছে সুচিত্রা সেন, সুচন্দা ও শবনম। এদের অভিনয় দেখেই আসলে আমার অভিনয়ের প্রতি আগ্রহ সৃষ্টি হয়। কমেডি চরিত্রের মধ্য দিয়ে তার পথচলা।

হায়দার আলী ভাই আপনার বয়স কত? জিজ্ঞেস করলে, কিছুক্ষন তাকিয়ে বলেন আসলে মনের বয়সই ২২ বলে ভাবি। কেননা, এখন আমি যদি নিজেকে ২২ বলে সম্বোধন না করি। আমার যে শারীরিক অবস্থা সে ক্ষেত্রে আমার অনুপ্রেরণার শক্তি যোগাতে সাহায্য করে। যিনি নিজেকে সর্বদা ২২ বছরের তরুন বলে পরিচয় দিতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন। সে প্রতিনিয়ত বলেন, ২২ এর পর আমার বয়স আসলে আর বাড়ে নাই। যদিও বর্তমানে তার বয়স ৬৬ বছর।

হায়দার আলী

তিনি মূলত যেকোন চরিত্র নিয়ে কাজ করতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন, এবং তিনি চরিত্রকেই প্রাধ্যান্য দিয়ে থাকেন। সম্প্রতি হায়দার আলী কয়েকটি ধারাবাহিক নাটকে অভিনয় নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন, এর মধ্যে ‘নোয়াশাল’, ‘রসের হাড়ি’, ‘কমেডি ৪২০’ এবং ‘সিম্পলের মধ্যে গর্জিয়াস’ ইত্যাদি। তিনি মূলত টিভিতে ১ ঘন্টার নাটকে কাজ করতে বেশি স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন। এরই সাথে বিজ্ঞাপনে কাজ করতে ভালোবাসেন তিনি। ইতোমধ্যে জনপ্রিয় বেশ কয়েকটি বিজ্ঞাপনের কাজ করেন।

শত ব্যস্ততার মাঝেও ‘আনন্দ বিনোদন’কে সময় দেওয়ার জন্য আমাদের ম্যাগাজিন এর পক্ষ থেকে আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।