ইয়াসির আল হকের পরিচালনায় হইচই প্লাটফর্মে ৬ পর্বের ওয়েব সিরিজ” সাড়ে ষোল “
পায়েল বিশ্বাস:
সম্প্রতি ভারতীয় ওটিটি প্লাটফর্ম ‘হইচই’-তে রিলিজ পেয়েছে ‘সাড়ে ষোল’ ওয়েব সিরিজ।
ইয়াসির আল হকের নির্মিত ছয় পর্বের ওয়েব সিরিজটি ইতোমধ্যে দর্শকদের প্রশংসা কুড়াচ্ছে। ১৭ আগষ্ট রিলিজের কথা থাকলেও ১৬.৫ আগষ্টে রিলিজ দিয়ে খানিকটা ব্যতিক্রম পরিকল্পনার আভাস দিয়েছে ফুল টিম। রহস্যময় ট্রেলার দেখার পর সিরিজেও রহস্যময় গল্প দেখতে পেলাম। সিরিজের প্লট ছিল বেশ ইউনিক। খুবই নিখুঁত ভাবে গল্পটা প্রেজেন্ট করা হয়েছে পর্দায়। এক পাঁচ তারকা হোটেলকে ঘিরে এগিয়েছে সিরিজের গল্প। সিরিজ জুড়ে আইনজীবী রেজার গল্প বলা হয়েছে। সিরিজে দেখা যায় ‘রেজা’ একজন সফল আইনজীবী। নিজের ক্যারিয়ারের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কেসটির শুনানিতে যাওয়ার আগের রাতে তিনি রিলেক্স হওয়ার জন্য সময় কাটাতে যান হোটেলের ১৬.৫ নামের এক রুমে। ১৬.৫ রুমকে ঘিরে কয়টি চরিত্রের আগমন ঘটে। একপর্যায়ে একটি জটিল মোড় নেয়। সেই রুমকে ঘিরে কী ঘটে তা দেখা যায় সিরিজ জুড়ে। সিরিজের পরতে পরতে ছিল টুইস্ট। সিরিজের শেষ পর্যন্ত সাসপেন্স ধরে রাখতে সম্ভব হয়েছে নির্মাতা। বলতেই হয় টুইস্টে ঘেরা সিরিজের গল্প। সিরিজের শুরুটা যতটা দুর্দান্ত হয়েছে ঠিক ততটা এন্ডিং দেখা যায়নি। সিরিজের কাস্টিং দুর্দান্ত! নিঃসন্দেহে সিরিজের ইউএসপি সকল শিল্পীদের পারফরম্যান্স। সিরিজে অনেক অভিনয়শিল্পীর দেখা মিলেনি। সেহেতু সিরিজে সকলেই সমান গুরুত্ব পেয়েছে। সিরিজের গল্প আফরান নিশোকে ঘিরে হলেও সিরিজে অনান্য চরিত্রের সঙ্গে তার সংযোগ ছিল সবসময়ই। আইনজীবী রেজার চরিত্রে মুগ্ধ করেছেন আফরান নিশো। ইন্তেখাব দিনার বরাবরের মতোই চমৎকার পারফর্ম করেছেন। জাকিয়া বারী মম টাইপ কাস্টিং হয়ে যাচ্ছেন মনে হয়েছে সিরিজে তার ক্যারেক্টার দেখে। সিরিজে নজর কেড়েছে আফিয়া তাবাসসুম বর্ণ। এই তরুণীর অভিনয় ছিল চোখে লেগে থাকার মতো। ইরফান রনি বেশ ভালো করার চেষ্টা করেছেন। শাহেদ আলী ও কাজী নওশাবা নিজেদের চরিত্রে পরিমিত অভিনয় করেছেন। বিশেষ করে বলতে হয় ইমতিয়াজ বর্ষণের কথা। সিরিজে তাঁকে দেখা যায় পুলিশ কর্মকর্তা হিসেবে। সিরিজ জুড়ে তার পরিমিত অভিনয় লক্ষ্য করা গিয়েছে বরাবরের মতোই। ডায়লগ ডেলিভারি থেকে বডি ল্যাঙ্গুয়েজ সবকিছুর মধ্যে ছিল একটা ডিফারেন্ট অ্যাটিচিউড। সিরিজের সেরা পারফর্মারদের মধ্যে তিনি একজন। সিরিজের টেকনিক্যাল পার্ট নিয়ে আলোচনা করলে বলতেই হয় সিরিজের সেট ছিল খুবই সুন্দর। সম্পূর্ণ পাঁচ তারকা হোটেলে সম্পূর্ণ শুটিং করা হয়েছে মনে হয়েছে যার ফলে খুব সুন্দর ফিল দিয়েছে। কালার গ্রেডিং ছিল আকৃষ্ট করার মতো। ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক ছিল অসাধারণ। ক্যামেরার কাজ ছিল মুগ্ধ হওয়ার মতোই। নির্মাতা ইয়াসির আল হক নিজের নির্মিত প্রথম ওয়েব সিরিজে নিজের মুন্সিয়ানা দেখিয়েছেন। একটা পাঁচ তারকা হোটেলকে ঘিরে কি ধরনের অপরাধ সংগঠিত হতে পারে তা নিয়ে দেখিয়েছেন দুই ঘন্টা দৈর্ঘ্যের সিরিজে। সবকিছুর মিশেলে সিরিজটা উপভোগ্য।