আনন্দ বিনোদন ডেস্ক :
হুমায়ূন আহমেদ যখন বারী সিদ্দিকীকে গান গাইতে বলছিলেন, তখন তিনি হেসে বলেছিলেন, আমি বারী, বাঁশি ওয়ালা; বাঁশী বাজিয়ে যা কামাই করি তা দিয়ে সংসার চলে যায়। আমাকে গান গাইতে বইলেন না। এতে করে বাঁশীও বাজানো হবে না। আমার গানও কেউ শুনবে না। আমার এ কুল ঐ কুল দুই কুলই যাবে।
হুমায়ূন আহমেদ নাকি তখন তাকে ‘জোর’ করেছিলেন। বলেছিলেন, আমি নিশ্চিত বাংলাদেশের মানুষ তোমার গান পছন্দ করবে, তুমি গান গাও!
সেই ছিল শুরু। গান গাইতে শুরু করলেন বারী সিদ্দিকী-
তারপরতো ইতিহাস!
বারী সিদ্দিকী বাঁশি শেখা এবং গান শেখার দুটোরই উৎসাহ পেয়েছেন তার মায়ের কাছ থেকে। মায়ের কাছ থেকে জীবনে তিনি প্রথম যে গানটির সুর বাঁশিতে তুলেছিলেন সেই সুরটিই তিনি পরবর্তীতে হুমায়ূন আহমেদ’র ‘শ্রাবণ মেঘের দিন’ চলচ্চিত্রে ব্যবহার করেছিলেন। সেটি ছিলো শ্যাম বিচ্ছেদের একটি সুর ‘আস্ট আঙ্গুল বাঁশের বাঁশি/মধ্যে মধ্যে ছ্যাদা/ নাম ধরিয়া ডাকে বাঁশি/ কলংকিনী রাধা।’
লোকগান বা বাউল গানের আসরে রাত গভীর হলে শুরু হয় বিচ্ছেদ আঙ্গিকের গান, যে গান শুনলে মানুষের মন আঁর্দ্র হয়ে উঠে, বিষাদ ছুঁয়ে যায়। মানুষ সে গান শুনে কাঁদে। আবেগে ভাসে। এমনই বিচ্ছেদ এবং মর্মভেদী আবেগী গানগুলোকে যিনি নিজের মতোন করে ভিন্ন এক ধারায় খুব সাবলীলভাবে গাইতে পারতেন তিনি বারী সিদ্দিকী, বাঁশি আর হৃদয়স্পর্শী সুরের অনন্য কারিগর।
বিষাদ ও হাহাকারকে যে কত সাবলীলভাবে সুরে নিয়ে আসা যায় তা তার গানেই আমরা বুঝেছিলাম। সহজ করে সহজ সুরে যে গান গাইতেন তার মাঝেই যেন এক জাদুর ছোঁয়া ছিল, খুব সহজেই আমাদের মর্মে গিয়ে লাগতো।
খ্যাতিমান এই শিল্পীর চলে যাওয়ার দিন আজ। আজ তার প্রয়াণের সাত বছর পূর্ণ হলো। আনন্দ বিনোদন পরিবারের পক্ষ থেকে অতল শ্রদ্ধা!