আফরোজা নাজনীন সুমি একজন মডেল, অভিনেত্রী ও সুপরিচিত রন্ধনশিল্পী

0
2335
রন্ধনশিল্পী আফরোজা নাজনীন সুমি

নিউজ ডেস্ক: একজন সফল রন্ধণশিল্পী ঢাকার ধানমন্ডির মেয়ে আফরোজা নাজনীন সুমি। বাবার সরকারি চাকরির সুবাদে বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলায় ছোটবেলা কেটেছে । এডভোকেট স্বামী ও এক মেয়ে- এক ছেলে নিয়ে এখন ঢাকা্র বসুন্ধারাতে থাকেন। তিনি একই সাথে শেফ, জনপ্রিয় রন্ধণশিল্পী ও উপস্থাপক, রেসিপি ডেভেলপার, ট্রেইনার,খন্ডকালীন শিক্ষক, উপ সম্পাদক,ফ্রীল্যান্স ফটোগ্রাফার, মডেল এবং অভিনয়শিল্পী। এমবিএ করেছেন এইচ আর নিয়ে। এর পাশা পাশি রান্নার উপরও বিশেষ প্রশিক্ষণ নিয়েছেন।

বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশন থেকে ফুড এন্ড বেভারেজ প্রোডাকশান এর উপর ন্যাশনাল সার্টিফিকেটকোর্স করেছেন। ফুড হাইজিন এন্ড স্যানিটেশন এর উপর কোর্সও করেছেন সেখান থেকে।এরপর ইন্টার্নি করেছেন হোটেল রেডিসন ব্লু ওয়াটার গার্ডেন ঢাকা থেকে । এছাড়াও মনিন বাংলাদেশ থেকে বারিস্তা ট্রেনিং নিয়েছেন। রান্না শেখার প্রতি প্রচন্ড আগ্রহ এর কারনে চাইনিজ রেস্টুরেন্ট এর শেফকে এমনকি মিষ্টির দোকানের কারিগরকে বাসায় নিয়ে এসেও অনেক রান্না শিখেছেন।

যমুনা টেলিভিশনের ‘লাইভ কিচেন’ লাইভ রান্নার অনুষ্ঠান দিয়ে টেলিভিশন মিডিয়াতে যাত্রা শুরু হয়। “কুইক রেসিপি” অনুষ্ঠানে ভিন্ন ধরনের আর ঝটপট রান্নার রেসিপির জন্য দ্রুত সাড়া পান তিনি।যমুনা টেলিভিশন ছাড়াও তিনি এনটিভি, বিটিভি,বাংলা ভিশন,মাছরাঙায়,জিটিভি,চ্যানেল নাইন,চ্যানেল টোয়েন্টি ফোর,ডিবিসি নিঊজ,সময় টিভি,এটিএন বাংলায় অনুষ্ঠান করছেন। রান্নার পাশাপাশি এটিএন বাংলায় “বাহারি রান্না” অনুষ্ঠানটি নিয়মিত ঊপস্থাপনাও করছেন।

“ড্যান কেক ডেজার্ট জিনিয়াস-২০১৮” এর অন্যতম প্রধান বিচারক হিসাবে কাজ করছেন। “সেরা রাঁধুনি ১৪২৪” এ গ্রুমিং ইন্সট্রাকটর হিসাবে এবং “রূপচাঁদা-দি ডেইলি স্টার সুপার শেফ ২০১৮” প্রতিযোগিতার ঢাকা জোন এর বিচারক হিসাবে এবং স্টুডিও পর্বে অতিথি বিচারক হিসাবে কাজ করেছেন। “নিউট্রিশন অলিম্পিয়াড -২০১৮” এ ফেসিলেটর হিসাবে এবং শেফ ট্রেইনার হিসাবে সিলেটের “শেফ কনফারেন্স ২০১৮” এ অংশ গ্রহন করেছেন। বাংলাদেশ ছাড়াও কলকাতার হেফেলে এন্ড দ্যা ভোজ কোম্পানীর আয়োজিত কুকিং কম্পিটিশন “দ্যা কুলিনারী ডিভা-২০১৮” এর একজন অন্যতম বিচারক হিসাবে কাজ করেছেন। কলকাতার জি বাংলার “রান্নাঘর” ,কলকাতা লাইভ, আরতাজ নিউজ এর “রান্নাঘার”, অঙ্কার টিভির “হেঁশেলে হৈ হৈ” অনুষ্ঠানে অংশগ্রহন করছেন।

রন্ধনশিল্পী আফরোজা নাজনীন সুমি

একটা ফাইভ স্টার হোটেল এ ক্যাজুয়াল হিসাবে কাজ করার পাশাপাশি একটা ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলে খন্ডকালীন শিক্ষকতার সাথে যুক্ত আছেন ও লাইফ স্টাইল ম্যাগাজিন দ্যা পেজেসে উপ সম্পাদক হিসাবে দায়িত্বরত আছেন। এছাড়াও তিনি স্থির চিত্রের মডেলিং এর পাশাপাশি টেলিভিশন কমার্শিয়াল,ডকুমেন্টারি ড্রামাতে অভিনয় করেছেন।

আফরোজা নাজনীন সুমি তার কাজের স্বীকৃতি স্বরুপ বিভিন্ন সম্মাননায় ভুষিত হয়েছেন। এরমধ্যে ডিসিআরইউ এওয়ার্ড-২০১৮, এজেএফবি স্টার এওয়ার্ড-২০১৭,রেডিও স্বদেশ সম্মাননা এওয়ার্ড-২০১৭,গোল্ডেন পেন এওয়ার্ড-২০১৭,ইনডেক্স মিডিয়া এওয়ার্ড-২০১৭,চিত্র জগত এওয়ার্ড-২০১৬,নব প্রজন্মের সেরা রন্ধনশিল্পী এওয়ার্ড-২০১৬ উল্লেখযোগ্য। এছাড়াও তিনি কলকাতায় “সৃজন সম্মান-২০১৮” এবং “ভারত-বাংলাদেশ মৈত্রী উৎসব-২০১৮” সম্মাননা পেয়েছেন।

রন্ধনশিল্পের পাশাপাশি ফটোগ্রাফি করতে ভালোবাসেন। বাংলাদেশ ফটোগ্রাফিক সোসাইটির আজীবনসদস্য হিসেবে বিভিন্ন ইভেন্টে অংশ নেন। উইমেন ইন্টারপ্রেনাস অ্যাসোসিয়েশনের কার্যকারী সদস্য, বাংলাদেশ হেরিটেজ ক্রাফটস ফাউন্ডেসনের কার্যকারী সদস্য , বাংলাদেশ ফাউন্ডেসন অফ উইমেন ইন্টারপ্রেনাসের সদস্য এবং জন্টা ইন্টারন্যশনাল গ্রেটার ঢাকা ক্লাবের সদস্য হিসাবে কাজ করে যাচ্ছেন।

নিয়মিত অনুষ্ঠানের পাশাপাশি এখন রান্নার ওপর একটি বই তৈরি করছেন। আফরোজা নাজনীন সুমি জানান, ‘বর্তমানে রান্নার উপরে একটি ব্যতিক্রমধর্মী বইয়ের কাজকরছি। বইটিতে সহজে করা যায় এমন সব মজাদার রেসিপির পাশাপাশি পাঠকদের জন্য থাকছে কিছু ভিন্ন ধরনের চমক।’

রন্ধনশিল্পী আফরোজা নাজনীন সুমির সাথে আনন্দ বিনোদন অনলাইনের এক প্রশ্ন পর্ব তুলে ধরা হলো,

প্রশ্ন: ভারতে কাজ করার অভিজ্ঞতা?

সুমি : ভারতের কলকাতাতে কাজ করতে সব সময়ই ভালো লাগে।  বাংলাদশে ও কলকাতার ভাষা বাংলা  হওয়াতে মনেই হয় নয়া অন্য কোনো দেশে কাজ করছি।   কাজের পরবিশেও অনুকূল। সব সময়ই অনুভব করছি এদেশের মানুষরে প্রতি তাদের ভালোবাসা এবং শ্রদ্ধাবোধ।  রন্ধন শিল্পে অবদানরে জন্য ভারত থেকে সম্মাননাও পেয়েছি দুই বার। নিজের দেশের বাহরিে কাজরে স্বীকৃতি পাওয়া আমাকে কাজরে প্রতি আরো বেশি দায়িত্বশীল করে তুলেছে। 

প্রশ্ন : বাংলাদেশের রন্ধনশিল্পের অতীত, বর্তমান ও ভবিষৎ নিয়ে আপনার মতামত।

সুমি : অনেকেই এখন পেশা হিসাবে রন্ধন শিল্পকে বেছে নিয়েছেন। আমি নিজে এইচ আর নিয়ে এম বি এ করেও এই পেশায় এসেছি। এই পেশায় নিজের সৃষ্টিশীলতাকে কাজে লাগানোর একটা সুযোগ থাকে। হোটেল রেস্তরাতে কাজের পাশাপাশি কেউ চাইলে কেটারিং ব্যবসাও করতে পারেন। আবার ট্রেনিং ইন্সটিটিউটের মাধ্যমেও নতুনদের শেখানোর পাশাপাশি দেশের বেকারত্ব দূর করায় ও নতুন উদ্যোক্তা।  তৈরিতে অবদান রাখতে পারেন।

প্রশ্ন : পেশা হিসেবে রন্ধনশিল্প

সুমি : রন্ধন শিল্প দিন দিন সত্যিই একটা শিল্পে পরিনত হয়েছে। আগে শুধু খাবারটা রান্না করেই পরিবেশন করা হত। এখন রান্নার পাশাপাশি খাবারটাকে কিভাবে আকর্ষনীয় ভাবে পরিবেশন করা যায় সেদিকেও খেয়াল রাখা হয়। খাবার নিয়ে এখন নানারকম গবেষনা প্রতিনিয়তই চলছে ভবিষ্যতেও চলবে।

রন্ধনশিল্পী আফরোজা নাজনীন সুমি

প্রশ্ন : একজন নারী হিসেবে কাজের ক্ষেত্রটাকে কীভাবে দেখেন।

সুমি : নারী হিসাবে আমি মনে করি এই কাজটা খুবই ভালো। প্রতিটা মেয়েই নিজের বাড়িতে রান্না করছেন। সেই  রান্নাটাই যখন পেশা হিসাবে নিচ্ছেন তখন নিজের আত্ন উন্নয়নের পাশাপাশি পরিবার, সমাজ আর দেশের উন্নয়নে অবদান রাখতে পারছেন।

প্রশ্ন: পরিবার নিয়ে কিছু বলুন।

সুমি : এডভোকেট স্বামী আর দুই মেধাবী সন্তান আমার। মেয়ে ও ছেলে দুজনেই খুব ভাল ছবি আকে। রান্নার প্রতিও রয়েছে দুজনেরই সমান আগ্রহ । মা ব্যবসায়ী ,থাকেন ঢাকার ধানমন্ডিতে আর দুই বোন তাদের পরিবার নিয়ে থাকেন দেশের বাহিরে।

প্রশ্ন : কীভাবে এই পেশায় এলেন?

সুমি : নিজের ভালো লাগা থেকেই এই পেশায় আসা।

প্রশ্ন : নিজের ভালোলাগা মন্দলাগা

সুমি : আশে পাশের মানুষের জন্য কিছু করতে পারলে ভালো লাগে। কষ্ট লাগে যখন ছোট ছোট বাচ্চাদের কাজ করতে দেখি। স্পেশাল চাইল্ড ও সুবিধা বঞ্চিত শিশুদের জন্য কিছু কাজ করার ইচ্ছা আছে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here