চট্টগ্রাম শিল্পকলা একাডেমির মিলনায়তনে পরিবেশন করা হয়েছে প্রসেনিয়াম এর সারারাত্তির

0
131

আজিজুল কদির:(চট্টগ্রাম)

মননে অনুরণন এই শ্লোগানকে প্রতিপাদ্য করে ২০২০-এ যাত্রা শুরু হয়েছিল নাটকের দল প্রসেনিয়াম-এর। ৩১ ডিসেম্বর সন্ধ্যা ৬.৩০ টায় জেলা শিল্পকলা একাডেমির মিলনায়তনে পরিবেশন করা হয়েছে প্রসেনিয়াম প্রযোজিত নাটক সারারাত্তির। রচনা বাদল সরকার, নির্দেশনায় মোকাদ্দেম মোরশেদ।

সারারাত্তির নাটকের গল্পে দেখা যায়, বর্ষামন্দ্রিত ঝড়জলের রাতে এক দম্পতি আটকে যায় খোলামাঠের ধারে একটি পোড়োবাড়িতে। ওরা বেরিয়েছিল ছুটিযাপনে। রাত্তিরটা সেখানে কাটানো ছাড়া অন্য কোনো উপায়ও ছিল না। আর সেখানেই আবির্ভূত হলো, তৃতীয় চরিত্রটি, পোড়োবাড়ির প্রৌঢ় মালিক। নাটক কিংবা নাটকীয়তার শুরু তখনই। ভুতুড়ে আলো-আধারিতে প্রৌঢ়ের পরিচয়, আতিথেয়তা, একরাত্তিরের আন্তরিকতা, এসবের আড়াল ডিঙিয়ে যা মূর্ত হয়ে তিনজনের সামনে এসে দাঁড়ায়,

তা হলো সম্পর্কের প্রতিরূপ; যা এতদিন এই দম্পতির কাছে অজানা, অচেনা ছিল।
সাত বছরের অভ্যস্ত দাম্পত্যের শেকলে বন্দী হয়ে-পড়া দম্পতিটি ধীরে ধীরে অনুধাবন করতে পারে, কাছে থাকলেই কাছের মানুষ হওয়া যায় না হয়তো। ফাঁকি ছিল না কোথাও, কিন্তু নিশ্চিতভাবেই বড়ো ফাঁক ছিল ওদের সম্পর্কের বুননে। আর এই উপলব্ধির আয়নায় দুজনকে মুখোমুখি দাঁড় করিয়ে সম্পর্কের সেই অদেখা রূপকে আবিষ্কারে অনুঘটক হয়ে কাজ করে এই তৃতীয় ব্যক্তিটি। রাত গভীর হতে থাকে, বৃষ্টিপ্লাবিত রাতে ভেসে যায় ছকবাঁধা সংস্কারের প্রাচীর, রাত্রি শেষ হতে-হতে জেগে ওঠে অন্যরঙের এক প্রেমময় দিগন্তরেখা। রেখে যায় একটি প্রশ্ন। এ রাত কি সত্য? এ রাত কি সত্যিই এসেছিল এদের জীবনে? নাকি শুধুই এক অলীক কল্পনা? কেবলই কারো এক দুঃস্বপ্নের রাত? কিংবা কারো স্বপ্নেবোনা একটি রাত! সারারাত্তির!

এই নাটক প্রসঙ্গে নির্দেশক মোকাদ্দেম মোরশেদ বললেন, “দলের প্রথম নাটক হিসেবে বাদল সরকারের সংলাপ নির্ভর সারারাত্তির নাটকটি নির্বাচনে বেশ সাহসী ভূমিকা রেখেছে প্রসেনিয়াম। নাটকটি ষাট দশকের লেখা হলেও আশ্চর্য রকম সত্য আজকের জন্য আগামীকালের জন্যও, শুধুমাত্র তিনজনের কথপোকথনে দাঁড়িয়ে আছে সারারাত্তির । চমৎকার সাইকোঅ্যানালাইসিস ট্রিটমেন্টে কথার বুনন যার সঙ্গে একাত্ম হয়ে যায় দর্শক। এ গল্পের নির্দিষ্ট কোন স্থান কাল নেই, উস্কে দেয়া মনের গভীরে চাপা পড়া অব্যক্ত কথনের ব্যক্ত রূপ, তাই এক্সিকিউশন প্যাটার্নেও নিরেট রিয়েলস্টিক কাঠামোর বাইরে কিছুটা স্যুরিয়েলস্টিকের ছোঁয়া রাখা হয়েছে। মঞ্চ পরিকল্পনায় মাল্টি ডিরেকশনাল অবয়বেও যেন গল্পের অস্থিরতা বিদ্যমান, সাথে আলো আবহের মিশেলতো আছেই।

সারারাত্তির এর প্রধান তিন চরিত্রে অভিনয় করছেন মোকাদ্দেম মোরশেদ,মিশফাক রাসেল ও জয়া প্রযুক্তা কোরিওগ্রাফিতে অংশগ্রহন করেছেন প্রবাল চৌধুরী,অনিকা ফেরদৌস,প্রিয়ন্তি দাশ পৃথা,জারিন বিনতে জসিম,সুহাইলা আফরোজ,উদাইসা মুনতাহানা,রূপকথা দাশ,জোয়ারীয়া মুস্তফা । আলোক পরিকল্পনা করেছেন মোসলেম উদ্দিন শিকদার আলোক প্রক্ষেপন হ্যাপী চৌধুরী এবং মঞ্চ ও পোশাক পরিকল্পনা করেছেন সিরাজাম মুনিরা স্বর্ণা। কোরিওগ্রাফি হ্যাপী চৌধুরী আবহ পরিকল্পনায় মোকাদ্দেম মোরশেদ এবং শব্দ প্রক্ষেপনে দিদারুল আলম ও পার্থ সেন। প্রযোজনা অধিকর্তা ফারজানা মুনমুন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here